• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ৮-৬-২০২৪, সময়ঃ সকাল ১০:২৫

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নাটকীয় জয়ে বিশ্বকাপ শুরু বাংলাদেশের

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নাটকীয় জয়ে বিশ্বকাপ শুরু বাংলাদেশের

ক্রীড়া ডেস্ক►

শেষ পর্যন্ত চিন্তায় রেখেছিল বাংলাদেশ। সহজ লক্ষ্যকে কীভাবে কঠিন বানাতে হয়, সেটা প্রমাণ করতেই যেন নেমেছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। টি-টোয়েন্টিতেও ওভারপ্রতি ৪ রানের লক্ষ্যে বুকে কাঁপুনি ধরিয়ে দিচ্ছিলেন সাকিবরা।

তবে ভাগ্য ভালো মাহমুদউল্লাহ মাথা ঠান্ডা রেখেছেন, ফলে শেষ পর্যন্ত আর হারতে হয়নি। ৬ বল হাতে রেখে ২ উইকেটের জয় পেল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে জয় বাংলাদেশের।

১২৪ রানে থামলেও ১০ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার রান ছিল ৩ উইকেটে ৭৪। ওদিকে সমান উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের ৭৪। ১১তম ওভারেই ৯ রান পেয়ে যায় বাংলাদেশ। তবু ব্যবধানটা কমিয়ে আনতে তর সইছিল না তাওহিদ হৃদয়ের। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার প্রথম দুটি গুগলিকে স্লগ করে মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মারলেন। তৃতীয় বলটা ছিল লেগ স্পিন। সেটাকে এক্সট্রা কাভার দিয়ে আরেকটি। ছক্কার হ্যাটট্রিক।

কিন্তু পরের বলে ঝামেলা বেধে গেল। সুইপ করতে গিয়ে মিস করলেন বল। আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিলেন হাসারাঙ্গা, এলবিডাব্লিউ হৃদয়। শেষ হলো ২০ বলে ৪ ছক্কায় ৪০ রান তোলা ইনিংসটি।  বাংলাদেশের জয় তখন অবশ্য মাত্র ৩৪ রান দূরে। হাতে বল ৫০টি। উইকেটে ৩২ রান করা লিটন আছেন তখনো। সাকিব আল হাসান মাত্রই নেমেছেন।

প্রতি ওভারে মাত্র ৪ রানের লক্ষ্যে কোনো চাপ নেওয়ার দরকার হয় না। সেভাবেই এগিয়েছেন দুজন। ১৪ বলে ৮ রান নেওয়ার পরই ধাক্কা। হাসারাঙ্গার পরের ওভারের প্রথম বলটি ছিল গুগলি। লিটন লাইন মিস করলেন, প্যাডে আঘাত হানল বল। আম্পায়ার কিছুক্ষণ ভেবে আঙুল তুলে দিলেন। রিভিউ নিলেন লিটন, কিন্তু মাইকেল গফকে নিয়ে চলা মিথ এবারও সত্য হলো, তাঁর সিদ্ধান্ত যে ভুল হয় না!

৩৬ রানে আউট লিটন। ৯৯ রানে পঞ্চম উইকেট হারাল বাংলাদেশ। ৩৫ বলে ২৬ রান নিতে নামতে হলো মাহমুদউল্লাহকে। সে ওভারে এল মাত্র ১ রান। ৫ ওভারে বাংলাদেশের দরকার ২৫ রান।

সাকিবকে দেখে ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে আক্রমণে আনার সিদ্ধান্ত কাজে আসেনি। তাঁর ওভারে কোনো উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ, পেয়েছে ৮ রান। ফলে নিজের মূল বোলারদের কাছেই ফিরতে হয় হাসারাঙ্গাকে। এবং এতেই ফল মিলেছে। মাতিশা পাতিরানার বাউন্সার থার্ডমান দিয়ে পাঠাতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১৪ বলে ৮ রান করা সাকিব।  জয় তখনো ১৬ রান দূরে। বল বাকি তখন ২২টি।

শেষ ৩ ওভারে বাংলাদেশের দরকার ছিল মাত্র ১৪ রান, হাতে ৪ উইকেট। কিন্তু শ্রীলঙ্কাও এমন অবস্থা থেকে ভেঙে পড়েছিল শেষ দিকে।

বাংলাদেশের ইনিংসেও তাই হলো। তুসারাকে এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে বোল্ড হলেন রিশাদ হোসেন (১)। মাত্র নামা তাসকিন পরের বলে ইয়র্কারটা ঠেকাতে পারলেন না। ইনিংসে দ্বিতীয়বারের মতো পল রাইফেলকে ভুল প্রমাণ করল শ্রীলঙ্কা। রিভিউতে আউট তাসকিন।  ১৮তম ওভার থেকে মাত্র ৩ রানের সঙ্গে ২ উইকেট হারাল বাংলাদেশ।

শেষ ২ ওভারে বাংলাদেশের দরকার ১১ রান, কিন্তু মাহমুদউল্লাহর অন্যপ্রান্তে তানজিম সাকিব। এরপর শুধু মোস্তাফিজ। এমন অবস্থায় বল পেলেন দাসুন শানাকা। প্রথম বলই ফুলটস এবং মাহমুদউল্লাহর ছক্কা। পরের বলে সিঙ্গেল। ১০ বলে দরকার ৪ রান। সে ওভারের পরের তিন বলে এসেছে ১ রান । শেষ বলটা হলো ওয়াইড, ফলে ৭ বলে ২ রানের সমীকরণ।

বল মিড অফে ঠেলেই দৌড়। থ্রোটা স্টাম্প ভাঙতে পারল না, বরং ওভার থ্রোতে আবার রান নিয়ে নিলেন মাহমুদউল্লাহ। ফলে ৬ বল হাতে রেখেই জয় বাংলাদেশের। 

এর আগে আবার হতাশ করেছেন সৌম্য-শান্তরা। লক্ষ্য ১২৫, অর্থাৎ ওভারপ্রতি ৬ করে নিলেই চলছে। কিন্তু মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই সৌম্য সরকার এমনভাবে ব্যাট ঘুরালেন যেন বল প্রতিই ৬ লাগছে তাঁর। সে যাত্রা এলবিডাব্লিউর হাত থেকে বেঁচে গেলেও পরের বলেই আবার তুলে মারতে চাইলেন। মিড উইকেটে হাসারাঙ্গা বুঝে নিলেন ক্যাচ।

পরের ওভারে নুয়ান তুসারাকে ড্রাইভ করতে গিয়ে বোল্ড তানজিদ হাসান তামিম। সেই তুসারাকেই ড্রাইভ করতে গিয়ে পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে বিদায় নিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ১৩ বলে আউট হওয়ার আগে ৭ রান করেছিলেন শান্ত।

২৮রানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশ তখন কাঁপছিল। এ অবস্থায় লিটন দাস ও তাওহিদ হৃদয় হাল ধরেছেন। লিটন ৩৬ রান করলেও ২০ বলে ৪০ রান করা হৃদয়ই ম্যাচটা বাংলাদেশের দিকে হেলিয়ে দিয়েছিলেন। তবু মাহমুদউল্লাহকেই শেষ রক্ষা করতে হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন


এ জাতীয় আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়