সুলতান মাহমুদ চৌধুরী, দিনাজপুর ►
দিনাজপুর চিরিরবন্দর থানা চত্বর পতিত জমিতে বিভিন্ন প্রকার শাকসবজি, ফলমুল ও ফুলের বাগান করে ইতোমধ্যে প্রকৃতি প্রেমিক অফিসার ইনচার্জ হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছেন পুলিশ পরিদর্শক বজলুর রশিদ।
একেবারেই নিজস্ব চিন্তা চেতনা ও বুদ্ধিমত্তা খাটিয়ে চিরিরবন্দর থানা চত্বরের পতিত জমিতে বিভিন্ন প্রকার শাকসবজি ও ফলের গাছ ও ফুলের গাছ লাগিয়ে চিরিরবন্দর থানা চত্বরকে পরিবেশটা অনেকটাই মনোরম ও শীতল পরিবেশে রূপান্তরিত করেছেন অফিসার ইনচার্জ বজলুর রশিদ।
গত ২০২২ সালের ১ ফেব্রুয়ারী চিরিরবন্দর থানায় যোগদানের পর থেকেই থানা চত্বরের পরিত্যক্ত পতিত জমি চাষাবাদের উদ্দ্যেশে নিজের চিন্তা চেতনা ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও পতিত জমিতে বিভিন্ন শাক সবজি ফলমুল ও ফুলের গাছ লাগিয়েছে। বাগান থেকে উৎপাদিত শাকসবজি নিজেদের পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ভাগ করে দিচ্ছেন এবং আবাসিক পুলিশ সদস্যদের মেসে রান্নার জন্য শাকসবজি প্রতিদিন নিয়মিত খাওয়া হচ্ছে। এখন চিরিরবন্দর থানায় ৪২ জন পুলিশ সদস্য কর্মরত থাকলেও ২০/২৫ জন পুলিশ সদস্য কনস্টেবল এসআই এবং ইন্সপেক্টর তদন্ত এমনকি অফিসার ইনচার্জ নিজেও এই পতিত জমি থেকে উৎপাদিত শাকসবজি খাওয়া টেবিলের তালিকায় রাখেন। থানা চত্বরে লাগানো গোলাপ, গেন্দাসহ বিভিন্ন ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন।
প্রতিদিন থানা চত্বরের শাকসবজির বাগান থেকে উৎপাদিত সবজি রান্না পরও বাড়তি শাকসবজি থানা চত্বরের আশপাশে অসহায় গরিব মানুষের মাঝেও বিলি করে দেওয়া হয়। থানা চত্বরের ছোট ছোট জমির প্লটে লাগানো আছে লাল শাখ, পুঁইশাখ, ডাটা শাখ, লাউ শাখ, পালং শাখ, ঢেঁড়স, বেগুন, কাঁচা মরিচ, পেঁপে, লেবু, কলা, ঝিঙ্গা, পটল, টমেটো, মিষ্টি লাউ সহ প্রায় ১৬ প্রকার শাক সবজির আবাদ হচ্ছে।
এই শাকসবজির বাগানের জমিতে প্রতিদিন অফিসার ইনচার্জ রজলুর রশিদ নিজেই পানি দেয়া ও আগাছা পরিষ্কার করা এবং যত্ন নেওয়ার কাজটি তিনি নিজেই করেন। অফিসার ইনচার্জের এই কাজের একাগ্রতা দেখে অনেক পুলিশ সদস্যরাও অফিসার ইনচার্জ বজলুর রশিদকে বিভিন্ন ভাবে কাজের সহযোগিতা করেন এবং তাদের পরামর্শ গ্রহণ করেন তিনি।
এই থানায় যোগদানের আগে চিরিরবন্দর থানা চত্বরের পতিত জমিতে আবর্জনা দিয়ে জঙ্গলে পরিণত হয়েছিল। তিনি যোগদানের পর নিজ উদ্যোগে এই আগাছা যুক্ত জমিটিকে পরিষ্কার করেন। তার এই শাকসবজি আবাদ দেখার জন্য পুলিশ সুপারসহ পুলিশের আরও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিদর্শন করেন এবং তার এই কাজের জন্য প্রশংসাও করেছেন।
তেমনি থানা চত্বর কে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং পতিত জমিতে বিভিন্ন শাকসবজি ফলমূল ও ফুলের চাষ করেন রংপুর পুলিশ কমিশনার পর্যন্ত জানেন। তার এই কর্মদক্ষতা এবং লিডারশিপ থাকায় এ পর্যন্ত তিনি দুবার আইজি ব্যাচ পুরস্কার প্রাপ্ত হয়েছেন এবং বিভিন্ন কর্মদক্ষতা ও নিজের বুদ্ধিমত্তার পুরস্কার স্বরূপ ১২৯ বার পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তার হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। এবং বর্তমানে দিনাজপুর সহ রংপুর বিভাগের একজন দক্ষ ইনেসপেক্টর হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন বজলুর রশিদ।
অফিসার ইনচার্জ বজলুর রশিদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর একটি ভাষনে উদ্বুদ্ধ হয়েই তিনি তার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি থানা চত্বরের বেশ কিছু কথিত জমিগুলোকে ছোট ছোট প্লট নিজে তৈরি করে সম্পূর্ণ নিরাপদ পদ্ধতিতে এবং বিষমুক্ত পরিবেশে বিভিন্ন শাকসবজি ফলমূল এবং বেশ কিছু ফুলের বাগান তৈরি করেছি। এটা আসলে নিজস্ব ভালোলাগা ও প্রধানমন্ত্রীর একটি বাণীকেই স্মরণ করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে, দেশের এক টুকরো জমি যেন পতিত না থাকে সেই চিন্তা চেতনা থেকেই চিরিরবন্দর থানা চত্বরের পতিত জমিকে একটু নিজের মত করে সাছিয়েছি মাত্র। আমাদের দৈনন্দিন যে সবজির চাহিদা আমার এই সবজি বাগান থেকেই পূরণ করা হয়। অতিরিক্ত সবজি স্থানীয় দরিদ্র মানুষের মাঝে মাঝে মধ্যে বিলি করা হয়। একান্তই আমার ভাললাগার থেকে এই কাজটি করা।