Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ৩১-৮-২০২৪, সময়ঃ সকাল ১০:৪১
  • ৫৮ বার দেখা হয়েছে

সুন্দরগঞ্জে তিস্তা সেতু পয়েন্ট এখন বিনোদন কেন্দ্র

সুন্দরগঞ্জে তিস্তা সেতু পয়েন্ট এখন বিনোদন কেন্দ্র

তিস্তা আকন্দ, সুন্দরগঞ্জ►

বিনোদন কেন্দ্রে ঘোরাঘুরি করলে মন অনেকটা ফ্রেস হয়ে যায়। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শহরের বাইরে আলীবাবা থিম পার্ক এবং সরোবর পার্ক গড়ে উঠলেও তেমন সারা ফেলতে পারেনি। কিন্তু তিস্তা সেতু পয়েন্টে কোন পার্ক গড়ে উঠেনি তারপরও প্রতিদিন হাজারও দর্শনাথীর উফছে পড়া ভির  সকলের নজর কেড়েছে। 

বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলার মত সম্ভাবনাময় জোন সৃষ্টি হয়েছে সেতু পয়েন্ট। কিছুটা রাজশাহীর পদ্মা পাড়ের মতই। কথাগুলো বলেন সেতু পয়েন্টে ঘুরতে আসা দর্শণার্থী স্কুল শিক্ষক মো. ওবাইদুল হক চৌধুরী। তার ভাষ্য এখনও সেতুর কাজ শেষ হয়নি। কোন দোকানপাট নেই এমনকি বসার জায়গাও নাই। তারপরও প্রতিদিন পরিজন নিয়ে তিস্তা নদীর মুক্ত বাতাস অনুভব করার জন্য আসা মানুষগুলো কতই না আনন্দ উপভোগ করছে। 

স্থানীয় শাখা আলম বলেন, উপজেলা ছাড়াও গাইবান্ধা জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন বিকাল ৪ টা হতে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত হাজারও দর্শক এখানে আসে। অনেকে ছোট নৌকা নিয়ে নদীর মধ্যে ঘুরে রেড়ায়। আবার অনেকে নদীর ধার দিয়ে পায়চারি করে। দর্শণার্থীদের মধ্যে কিশোর-কিশোরীর সংখ্যা অনেকটা বেশি। তবে শিশুরাও মা বাবার সাথে আসছে প্রতিদিন। এখানে তেমন কোন দোকানপাট নেই। ভাসমান কয়েকটি দোকান রয়েছে। যেখানে শুধুমাত্র বিস্কুট, চেনাচুর, কলা, রুটি, পটেটো পাওয়া যায়। 

ছোট নৌকার মাঝি-মাল্লা ফরমান আলী জানান, এখন পানি রয়েছে, সে কারনে নদীতে ঘোরার সুযোগ রয়েছে। পানি কমে গেলে ওই ভাবে ঘোরার সুযোগ থাকবে না। সারাদিন লোকজন থাকে না, বিকাল বেলায় কিছু লোকজন ঘুরতে আসে। প্রতিদিন কমবেশি এক হাজার টাকা রোজগার হয়। 

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর-কুড়িগ্রামের চিলমারি উপজেলা সদরের সঙ্গে সংযোগকারি সড়কে তিস্তা নদীর উপর ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ করছেন চায়না  ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। সেতুটি নির্মাণে অর্থ প্রদান করছেন সৌদি ডেভেলোপম্যান্ট ফান্ড। এতে ব্যয় হবে ৭৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে ২৭৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা মূল সেতু নির্মাণে ব্যয় হবে। সড়ক নির্মাণে ব্যয় হবে ১০ কোটি ২৫ লাখ টাকা, নদী শাসনে ৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা এবং জমি অধিগ্রহণে ব্যয় হবে ৬ কোটি টাকা। সেতুটিতে পিলার থাকবে ৩০টি এর মধ্যে ২৮টি পিলার থাকবে নদীর ভিতরে অংশে এবং ২টি পিলার থাকবে বাহিরের অংশে। সেতুর উভয়পাশে^ নদী শাসন করা হবে ৩.১৫ কিলোমিটার করে। সেতুর উভয় পাশে^ সড়ক নির্মাণ করা হবে ৫৭. ৩ কিলোমিটার। এর মধ্যে চিলমারি মাটিকাটা মোড় থেকে সেতু পর্যন্ত ৭.৩ কিলোমিটার এবং গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর ধাপেরহাট থেকে হরিপুর সেতু পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার। চিলমারী অংশে একসেস সড়ক সেতু থেকে কাশিম বাজার পর্যন্ত ৫.৩ কিলোমিটার এবং গাইবান্ধা ধাপেরহাট থেকে হরিপুর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার।

২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি গাইবান্ধার সার্কিট হাউজে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হরিপুরÑচিলমারি তিস্তা সেতুর ভিত্তি উদ্বোধন করেন তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৮ সালের পর ২০২১ এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে সংযোগ সড়কসহ সেতু নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল বা রয়েছে। 

তিস্তা সেতু বাস্তবায়ন আন্দোলনের নেতা প্রবীণ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আ.ব.ম শরিওতুল্লাহ মাষ্টার বলেন, ২০০০ সাল থেকে তিস্তা সেতু বাস্তবায়ন আন্দোলন শুরু করা হয়। ২০১২ সালে এসে তিস্তা সেতু নির্মাণ আলোর মুখ দেখতে শুরু করে। এরপর সাবেক প্রধান প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম প্রামানিকের সার্বিক সহযোগিতায় ২০১৪ সালে সেতু নির্মাণ কাজের সুচনা হয়। এখন পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের ৪০ ভাগ এবং সেতু নির্মাণের ৩০ ভাগ কাজ বাকী রয়েছে। 

উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল মানাফ জানান, সেতুটির নির্মাণ কাজ যখন শেষ হবে, তখন আসলেই সেতু পয়েন্টেটি একটি চমৎকার বিনোদন কেন্দ্র গড়ে উঠবে। সেতুর দুইধারে যখন ব্লকদিয়ে নদীরক্ষা সড়ক নির্মাণ হবেহতে তখন এটি দেখতে অনেকটা ভাল লাগবে। সেতুর দুই পাশেই আসলে বিনোদনের জোন সৃষ্টি হবে এতে কোন সন্দেহ নাই। সম্ভাবনাময় এই পয়েন্টে এখন শিল্পপতির সুদৃষ্টি একান্ত প্রয়োজন। এখানকার মানুষজনের জন্য এটি একটি অর্থনৈতিক জোনে পরিনত হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad