নিজস্ব প্রতিবেদক►
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে তিন সাঁওতাল হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ, চিহ্নিত পুলিশ সদস্যসহ জড়িত সকল আসামীকে অবিলম্বে গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।
আজ (বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলা চৌকি আদালত এলাকায় এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পরে একই দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
সাহেবগঞ্জ-বাগর্দাফার্ম ভুমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম মাস্টার, বার্নাবাস টুডু, সুব্রল হেমব্রম, প্রিসিলা মুরমু, রাফায়েল হাসদা, বৃটিশ সরেন, ময়নুল ইসলাম, হাসান মোর্শেদ দীপন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর বেআইনীভাবে আদিবাসী সাঁওতালদের বসতবাড়ি উচ্ছেদের নামে নিরীহ সাঁওতালদের বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তছনছসহ গুলিবর্ষণ করা হয়। সন্ত্রাসী হামলা, নির্যাতন ও গুলিতে শ্যামল, মঙ্গল ও রমেশ নিহত এবং অনেকেই গুরুতর আহত হয়। বর্বরোচিত হামলায় ৩ জন সাঁওতাল নিহত ও অনেকেই গুরুতর আহত, লুটপাট, ভাংচুর, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের মত বীভৎস ঘটনা স্থানীয় প্রশাসনের উপস্থিতিতে ও সহায়তায় সন্ত্রাসীরা বেআইনী কার্যকলাপ করে। পুলিশও সাঁওতালদের বাড়িঘরে প্রকাশ্যে অগ্নিসংযোগ করে।
ওই ঘটনায় সাঁওতালদের পক্ষ থেকে থমাস হেমব্রম বাদী হয়ে তৎকালীন এমপি আবুল কালাম আজাদ, চিনিকলের এমডি আব্দুল আউয়াল, সাপমারা ইউপি চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলবুল, কাটাবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রফিকসহ ৩৩ জনের নাম উল্লেখ এবং ৫০০-৬০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় এজাহার দাখিল করা হয়। পুলিশ সেটি জিডি হিসেবে এন্ট্রি করে। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ১৪৪০২/১৬নং রিট পিটিশন দাখিল করলে থমাস হেমব্রমের জিডি ৫৬০/১৬নং মামলা এন্ট্রি করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। পিবিআই ২০১৯ সালে ২৩ জুলাই মূল আসামিদের বাদ দিয়ে ৯০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোপত্র (চার্জশিট) দাখিল করে। এরপর ২০১৯ সালের ৪ সেপ্টেম্বর চার্জশিট প্রত্যাখ্যান করে নারাজি দাখিল করা হয়। নারাজি আমলে নিয়ে ওই বছরের ২৩ ডিসেম্বর মামলাটি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। কিন্তু সিআইডিও আবুল কালাম আজাদসহ মূল ১১ আসামিকে বাদ দিয়ে আদালতে চার্জশিট দিলে ২০২১ সালের ২ নভেম্বর বাদি পক্ষ নারাজি করেন।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) নারাজির শুনানির দিন ধার্য ছিল। শুনানিতে অংশ নেন গাইবান্ধা জেলা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম বাবু ও জেলা জজ আদালতের আইনজীবী অ্যাড. মুরাদুজ্জামান রব্বানী। শুনানি শেষে নারাজির আবেদন মঞ্জুর করে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে দিয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন আদালত।