Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১৩-১১-২০২২, সময়ঃ বিকাল ০৩:৫৩

পীরগঞ্জের আশ্রয়ণ প্রকল্পের অনেক ঘরে ফাটল

পীরগঞ্জের আশ্রয়ণ প্রকল্পের অনেক ঘরে ফাটল

পীরগঞ্জ(রংপুর) প্রতিনিধি ►

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার আশ্রয়ণ প্রকল্পের সদ্য নির্মিত একাধিক ঘর ফাটল বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেকগুলো ঘরের ফাটল সিমেন্ট বালুর মিশ্রনে প্লাস্টার করে বন্ধ করা হয়েছ্।ে এগুলো ঘরে ফাটলের ক্ষত স্পষ্ট হযে উঠেছে। বিভিন্ন পত্রিকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে ফাটল সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের পর গত সপ্তাহে চতরা এলাকার  দুটি আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর মেরামত করে দেয়া হয়েছে। 

রবিবার সরেজমিনে কয়েকটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পরিদর্শনে দেখা যায়, ২০২০/২১ অর্থ বছরের উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ঘরগুলোর অধিকাংশগুলোতেই ফাটলসহ মেঝের ঢালাই ও প্লাস্টার উঠে গেছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারীদের অভিযোগ, নানা ধরনের অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে এসব ঘর নির্মাণ করা হয়। প্রতিটি ঘরেই প্রাক্কলন উপেক্ষা করে নিম্নমানের সিমেন্ট ইট এবং মাটি মিশ্রিত বালু দিয়ে দায়সারা ভাবে কাজ সম্পন্ন করা হয় মর্মে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন। পযাগাযোগ ব্যবস্থার বিষয় নিয়ে পাটগ্রাম আদিবাসী পাড়ার রিপন,মন্টু হাসদা,বলদী মরমু, মিলিনা, জোহান, হেমরোম, নিখিল মরমু এবং মাইনো বলেন, সরকারি ঘর নির্মাণের আগে যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা দরকার ছিল।

আশ্রয়ণ কেন্দ্রের কোন বাসীন্দা অসুস্থ হলে কি ভাবে তারা চিকিৎসার জন্য মেডিকেলে নিয়ে যাবে ? এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। অন্যের ফসলী ও আবাদী জমির মধ্যে এমনকি জমির আইল দিয়ে তাদের যাতায়াত করতে হয়। অনেক কষ্ট করে বাড়ি থেকে বের হতে হচ্ছে তাদের। 
তারা এ প্রতিনিধিকে বলেন, বাবু আপনি এনা ইউএনওক কন হামার ঘাটাগুলা যাতে বান্দি দেয়। আমরা তো তার সাথে দেখা করা বা কথা বলতে পারি না। ঘরের কাজ কর্ম নিয়ে কথা বলেন পাট হিন্দু পাড়ার নরেস, সুধি চরন, বিপুল, নয়ন, জিতেন, নিশি, অমূল্য, সন্তোষ, সনজিত, রাখাল, সূর্য বাবু, জবা, সুধু বালা, সবুজ বলেন, তাদের ফাটল ঘরগুলো কখন মেরামত করা হবে ? ঘরের সমস্যা নিয়ে ইউএনওকে কিছু বলা যায় না। কিছু বলতে গেলেই তিনি রাগ করেন। তারা আরও বলেন, যোগাযোগ না থাকায় রিক্সা বা ভ্যান কিনেত পারছেন না। যা দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করবেন।

নিম্নমানের কাজ নিয়ে কথা বলেন চৈত্রকোল মাহালী পাড়ার রুবেল বাসকে, মানুয়েল মার্ডী,জয়ন্তী হেমরোম, এলিজাবে, বাসকে, সেমন বাসকে জানান, সরকারের টাকায় ঘর হয়েছে দায়সারা ভাবে। দেয়ালের বালু সিমেন্ট হাত দিলেই খুলে যায়, ফাটল তো আছেই। এমনিতেই স্থানী নি¤œ মানের বালু, তাও আবার সিমেন্টের পরিমান অনেক কমদিয়ে দেয়াল গাথুনী। জানালা দরজার হাতল ও ছিটকিনি অনেক আগেই খুলে গেছে। বাঁশ দিয়ে দরজা আটকাতে হয়। তারা আরও বলেন-শুধুমাত্র তদারকির অভাবে কাজগুলোর মান খারাপ হয়েছে। বকশিস না পেলে মিস্ত্রি কাজ শেষ করে না। ঘরের দেয়াল ও পাকা মেঝে নিয়ে বড় আলমপুরের হরিন সিং এর মুনছুর আলী, সুনীল, আব্দুল সালাম, সতিশ, রামকুমার, সনেতা, জানান, পুকুর পাড়ে ১৫ টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ঘরের পাকা মেঝে উঠে গেছে।

এছাড়াও দেয়ালের সিমেন্ট বালু এমনিতেই খুলে পড়ছে। তারা আরও বলেন, গরিব মানুষের কথা কে শোনে ? ঘরের কাজের বিষয়ে কাউকে কিছইু বলা যায়নি। তবে কাজগুলো স্থানীয় ঠিকাদারের মাধ্যমে করা হলে মান অনেকটাই ভালো হতো। কাজের দায়িত্ব নিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তাকে তো কাজের কথা বলাই যায় না। তিনি নিজের ইচ্ছা মতো সাব ঠিকা দিয়ে কাজ করে নিয়েছেন।

স্থানীয় লোকজন জানায়, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের  আশ্রয়ন প্রকল্প-২,এর কাজে দায়সারা ভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। নির্মিত ঘরগুলোতে নিম্নমানের সামগ্রীর ব্যবহার ও  প্রাক্কলনের চাইতে সিমেন্টের পরিমান অনেক কম দেয়া হয়েছে। অতিরিক্ত মুনাফার লোভে সাব ঠিকা গ্রহনকারী লেবার মিস্ত্রী এ অপকর্ম  করেছে। উপজেলার আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসীন্দা এবং স্থানীয় সচেতন মহল আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো জরুরী ভিত্তিতে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। 

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad