সুলতান মাহমুদ চৌধুরী, দিনাজপুর ►
ইউটিউব চ্যানেল দেখে দিনাজপুর সদরের কমলপুর ইউনিয়নের মাড়িহার নিজ গ্রামের বাড়ীতে শখের বশে বারোমাসি কাটিমন জাতের আম চাষ করেই রীতিমত তাক লাগিয়ে দিয়েছেন দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেন্সি বিভাগের চিকিৎসক প্রভাষক ডাক্তার হাবিবুর রহমান হাবিব ।
গত তিন বছর পূর্বে কৃষি কর্মকর্তা এক বন্ধুর পরামর্শে ময়মনসিংহের একটি নার্সারি থেকে মাত্র ৪০ শত জমিতে ৫শত টি কাটিমন বারোমাসি জাতের আমের বাগান শুরু করেন । গত বছর থেকেই তার কাটিমন বারোমাসি আমের বাগানে আম আসতে শুরু হয় । এখন তার কাটিমন আমের বাগানে প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় আম ঝুলছে । প্রতিটি আম গাছের ডালে ডালে আম ঝুলছে । প্রতিটি আমের গাছে কমপক্ষে ৩ থেতে ৫ কেজি পর্যন্ত আম ধরে আছে। আবার কোন কোন গাছে আবার নতুন করে মুকুল আসছে কোন কোন গাছে আমের গুটি চলে এসেছে এই অসময়ে আম গাছে আম দেখে সত্যি অসাধারন লাগছে । প্রতিটি আম গাছেই পরির্পূন হয় ।
আম চাষী ডাক্তার হাবিবুর রহমান হাবীব বলেন, আমি একজন আধুনিক চাষাবাদে বিশ্বাসী তাই আমি আমারকৃষিবিদ বন্ধাুর পরামর্শে আমি বারোবাসি আমের বাগান শুরু করেছি। মাত্র তিন বছরে কাটিমন জাতের আমের ব্যাপক উৎপাদন হওয়ায় ছুটির দিনে একটু সময় বের করে নিজেই ছুটে আসি আমার আমের বাগানে। প্রতিটি গাছের যতœ ও পরিচর্যা করে থাকি।
তিনি বলেন, প্রতিটি আম গাছে ৫ থেকে ৭ কেজি পর্যন্ত আম সোভা পাচ্ছে। যা দেখে মনটা ভরে যায়। এই অসময়ে আম সুস্বাদু ও পুষ্টিকর হওয়ায় আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে আম উপহার হিসেবে পাঠাচ্ছি। তারা এই অসময়ে আম পেয়ে অনেক খুশি।
ডাক্তার হাবীব আরোও বলেন, প্রতিটি গাছে আম অনেক বেশি হওয়ায় ব্যবসায়ীরা তার বাগান থেকেই আম ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। এই বারোমাসি কাটিমন জাতের আমের বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় আমের পাইকাররা প্রতি কেজি আম ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি ধরে ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। এই বারোবাসি আম বাগান থেকে বছরে ৪ বার আম পাওয়া যাচ্ছে। এই বারোবাসি কাটিমন জাতের আমের বাগান আরোও সম্প্রসারন করার জন্যই তিনি আরোও ২ হাজার ৫ শত আমের কলম চারা রোপন করেছেন। আগাছা পরিস্কার ও কীটনাশক প্রয়োগ ও জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয়। আগামী বর্ষাকালে কলম আমের চারা দিয়ে বাগান সম্প্রসারন করবেন।
ডাক্তার হাবীবের বড় ভাই আমিনুল ইসলাম বলেন, ডাক্তার হাবীব ব্যস্ত মানুষ তাই নিজ গ্রামে গড়ে তোলা বারোবাসি কাটিমন জাতের আমের বাগান তিনি দেখা শোনা করেন। তিন বছরের প্রতিটি আমের গাছ খুব বেশি বড় হয়নি। তাই প্রতিটি আমের গাছের বাড়তি যতœ নিতে হয়। আগাছা পরিস্কার করতে হয় আর নিয়মিত স্প্রে করতে হয় যাতে আমের মুকুল জড়ে পড়ে না যায়।
ডাক্তার হাবীরের ব্যাক্তিগত সহকারী মহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের এই আমের বাগান থেকে আমরা আমাদের অনেক আত্মীয় স্বজনদের বাড়ীতে আম পাঠিয়েছে। এই আমের স্বাদ আর মিষ্টি হওয়ায় অনেকেই আমাদের এই আমের প্রংশসা করছে। আর যারা আমাদের আম একবার ক্রয় করে নিয়ে গেছেন তারা আবার ক্রয় করার জন্য ইচ্ছা প্রসোন করছেন।
প্রতিবেশি আবুল কাশেম বলেন, ডাক্তার হাবীবের আমের বাগানে এসে আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি। এই অসময়ে তার আমের বাগানে থোকায় থোকায় আম দেখে। প্রতিটি আম গাছেই পরিপুষ্ট। খেতেও অসাধারন। ডাক্তারের আমি দেখে আমি তার কাছ থেকে আমের চারা ক্রয় করতে আগ্রহ প্রকাশ করছি।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর অতিরিক্ত উপ পরিচালক খালেকুর রহমান বলেন, জেলায় বারোবাসি কাটিমন জাতের আমের চাষ বাড়ানোর জন্য আলাদা একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। প্রতি বছর এই জেলায় বারোমাসি কাটিমন আমের বাগানের সংখ্যা বাড়ছে। এই জাতের আম বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় অনেকেই এই জাতের আম চাষে আগ্রহ বেড়েছে। বারোমাসি এই কাটিমন জাতের আমবাগান দেখে অনেকেই নতুন ভাবে এই জাতের আম বাগান করতে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।