শাহজাহান আলী মনন, সৈয়দপুর ►
রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃৃপক্ষের উদাসীনতায় সৈয়দপুরে রেলওয়ের মূল্যবান সম্পদসমুহ হারিয়ে যাচ্ছে। কোনটা অযন্ত অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে। কোনটা অবৈধ দখলের ফলে বেহাত হয়ে পড়েছে। আবার কোনটা ইতোমধ্যেই ভেঙ্গে বিক্রি করে দিয়েছে চোরাকারবারী চক্র। এভাবেই একের পর এক ধ্বংস ও তসরুপ করা হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকার সরকারী সম্পদ।
সৈয়দপুরে রেলওয়ে কারখানাসহ পুরো শহরজুড়ে দ্বিতল বাংলো, কোয়াটার, পতিত জমি, জলাশয়, পানির ট্যাংকী-হাুউজ, বৈদ্যুতিক খুটি ও অন্যান্য জিনিসপত্র মিলে বেসুমার সম্পত্তি বিদ্যমান। এসব সম্পদের মধ্যে কারখানা ও স্টেশন বাদে সিংহভাগই অবৈধ দখলদারদের হাতে। রেলওয়ে কর্মচারীসহ বহিরাগতরা বিভিন্নভাবে দখল করে ইচ্ছেমত ব্যবহার করাসহ অবকাঠামোগত পরিবর্তন সাধন ও বিক্রি করেছে।
ফলে কালের সাক্ষী বড় বড় বাংলো ও অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা হারিয়ে গেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মুন্সিপাড়া ও মিস্ত্রীপাড়ার পানির হাউজ, গার্ডপাড়া এলাকায় পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরের দেড়শত বছরের বিশালাকৃতির ভবন (বাংলো), অসংখ্য কোয়াটার। আর আবাসিক এলাকাসহ বিভিন্ন অফিস, রেলওয়ে স্টেসন, রেললাইনের পাড় সংলগ্ন ফাঁকা জায়গায় গড়ে উঠেছে হাজার হাজার বসতি।
একইভাবে রেলওয়ে কারখানা প্রতিষ্ঠাকালে স্থাপিত ইটভাটার পতিত জমি, নিষ্কাশিত পানির ভাগাড়, জলাশয়ের প্রায় হাজার একর জায়গাও বেদখল। এই দখলদারিত্বের হাত থেকে রেহাই মিলেনি ওয়াটার পাম্প ঘর ও ট্যাংকীরও। সৈয়দপুর শহরের পানি সরবরাহের জন্য ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ৫ টি ট্যাংকীই আজ অকেজো। ইতোমধ্যে সবগুলোর আশেপাশের জায়গা এমনভাবে বেহাত হয়েছে যে প্রয়োজনে ট্যাংকীগুলোতে উঠতে যাওয়ার পথও নেই।
মূল্যবান এই ট্যাংকীগুলো অযত্ন অবহেলায় মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নানা আগাছায় আচ্ছন্ন ও দখলী বাসা বাড়ির আড়াল হয়ে হারিয়ে গেছে। চুরি হয়ে গেছে অনেক আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি। ফলে চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে প্রায় ৫০ ফুট উচ্চতার এই স্থাপনা। যেকোন সময় ধ্বসে পড়ে ভয়াবহ দূর্ঘটনায় অসংখ্য প্রাণহানী ঘটতে পারে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃৃপক্ষ আইওডাব্লু অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের উদাসীনতায় এমন বেহাল দশা বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। তাঁরা এব্যাপারে উর্ধতন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করেছেন।