নিজস্ব প্রতিবেদক►
গাইবান্ধায় নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই পিএলসির (নেসকো) গ্রাহকদের প্রিপেইড মিটার স্থাপনের কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। আন্দোলনের ধারাবহিকতায় আজ (বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি) বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময়, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন বক্তারা।
বেলা ১১টার দিকে শহরের গানাসাস মার্কেটের সামনে ডিবি রোডে এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে নেসকোর গ্রাহকেরা ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
ডিজিটাল প্রিপেইড মিটার প্রতিরোধ কমিটি এবং বিদ্যুৎ গ্রাহক ও সেচ পাম্প মালিক সমিতি, গাইবান্ধা এ আয়োজন করে।
প্রিপেইড মিটার সংযোগ নিয়ে নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলীরা জোর জবরদস্তি করছেন বলে অভিযোগ করে সমাবেশে বক্তারা বলেন, নেসকোর কর্মচারীরা গোপনে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের বাড়িতে গিয়ে সকলের অজান্তেই প্রিপেইড মিটার সংযোগ দিচ্ছেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে গাইবান্ধাবাসী। নেসকোর এমন একগুঁয়েমি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। সেইসঙ্গে প্রিপেইড মিটার স্থাপনে নেওয়া সিদ্ধান্ত দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
প্রিপেইড মিটারের ব্যয় তুলে ধরে বক্তারা বলেন, প্রিপেইড মিটারে প্রতিবার ১ হাজার টাকা রিচার্জে গ্রাহকের এজেন্ট কমিশন বাবদ ২০ টাকা পরিশোধ করতে হবে। সেইসেঙ্গ প্রতিমাসে গ্রাহকের মিটার ভাড়া বাবদ ৪০ টাকা পরিশোধ করতে হবে। গ্রাহকেরা নিজের টাকায় ইতিপূর্বে এনালগ ও ডিজিটাল মিটার কিনলেও তার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ কোনো টাকা পরিশোধ করেনি। প্রতি ১ হাজার টাকার বিনিময়ে কত ইউনিট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে তাও অস্পষ্ট। প্রিপেইড মিটারের ব্যালেন্স ফুরিয়ে গেলে ২০০ টাকা এমার্জেন্সি ব্যালেন্সের জন্য ৫০ টাকা হারে গ্রাহককে সুদ পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া প্রিপেইড মিটার কোনো কারণে লক হয়ে গেলে লক খোলার জন্য ৬০০ টাকা জমা দিতে হবে।
প্রিপেইড মিটার প্রতিরোধ কমিটি, গাইবান্ধার আহবায়ক গোলাম রব্বানী মুসার সভাপতিত্বে ও সাম্যবাদী আন্দোলনের মনজুর আলম মিঠুর পরিচালনায় বক্তব্য দেন সংগঠনের সদস্য সচিব মোশাররফ হোসেন বাবু, প্রবীণ রাজনীতিক আমিনুল ইসলাম গোলাপ, বীর মুক্তিযোদ্ধা এনামুল হক টুকু, গাইবান্ধা আদর্শ কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মমতাজুর রহমান বাবু, ক্রীড়া সংগঠক ওয়াজিউর রহমান রাফেল, রাজনীতিক বীর মুক্তিযোদ্ধা ময়নুল ইসলাম রাজা, শ্রমিক নেতা রেজাউন্নবী রাজু, সংস্কৃতি সংগঠক দেবাশীষ দাশ দেবু, গাইবান্ধা বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম বাবু, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আনিছুর রহমান নাদিম, জাতীয় পার্টির আনোয়ারুল ইসলাম লেবু, দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোস্তা মল্লিক, রাজনীতিক রেবতী বর্মণ, শ্রমিক নেতা কাজী আব্দুল ওয়াদুদ, বাসদ (মার্কসবাদী)’র জেলা সদস্য অ্যাডভোকেট নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী, বিদ্যুৎ গ্রাহক ও সেচ পাম্প মালিক সমিতির আসাদুজ্জামান শাহীন, মাসুদার রহমান, সমাজকর্মী মনির হোসেন সুইট, সোমা ইসলাম, বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের জেলা সংগঠক সবুজ মিয়া প্রমুখ।
এর আগে, একই দাবিতে গত এক মাসে কয়েক দফা বিভিন্ন ব্যানারে জেলা শহরে মানববন্ধন, মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।