Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • ১৭ ঘন্টা আগে
  • ১২৪ বার দেখা হয়েছে

গাইবান্ধায় ব্যাটারিচালিত যানবাহন চালকদের ৭ দিনের আল্টিমেটাম

গাইবান্ধায় ব্যাটারিচালিত যানবাহন চালকদের ৭ দিনের আল্টিমেটাম

নিজস্ব প্রতিবেদক►

গাইবান্ধায় সপ্তাহে ৩ দিন ব্যাটারিচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিলসহ ৫ দফা দাবিতে সকাল-সন্ধ্যা কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করেছেন রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক চালকেরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রীদের। কর্মবিরতি চলাকালে জেলা শহরে প্রায় ৪ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে সমাবেশ শেষে ৭ দিনের আল্টিমেটাম দেন আন্দোলনকারীরা।

সরেজমিনে আজ (বুধবার, ৮ জানুয়ারি) দেখা যায়, ‘রিকশা, ব্যাটারি রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ, গাইবান্ধা’র ডাকে সকাল ৬টায় শুরু হয় পূর্বঘোষিত কর্মবিরতি কর্মসূচি। সকাল থেকেই আন্দোলনকারী চালকেরা রাস্তায় নেমে আসে। মিছিল নিয়ে জেলা শহরসহ বিভিন্ন স্থানে পিকেটিং করতে থাকেন তারা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে দেখা যায় যাত্রীদের।

আন্দোলনকারীরা জানান, পৌর কর্তৃপক্ষ ব্যাটারিচালিত যানবাহনগুলোকে দুই কালার করে দেয়। সপ্তাহে তিনদিন হলুদ রঙের প্লেটের গাড়ি বন্ধ রেখে তিন দিন সবুজ রঙের গাড়ি চলাচলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এমন সিদ্ধান্ত বন্ধের দাবিতে কর্ম বিরতির ডাক দেন তারা। তারা জানান, একটানা তিন দিন করে গাড়ি চালানো বন্ধ রাখলে তাদের পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে।

৫ দফা দাবিগুলো হলো

১. ইজিবাইক, অটো রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহন চলাচলে রং করে তিন দিন বন্ধ ও তিন দিন চালুর সিদ্ধান্ত বাতিল। ২. ব্যাটারিচালিত যানবাহনেরি নিবন্ধন, লাইসেন্স ও রুট পারমিট বিআরটিএ কর্তৃক প্রদান ও নীতিমালা প্রণয়ন। ৩. গাইবান্ধা শহরের যানজট নিরসনের লক্ষ্যে বাইপাস সড়ক নির্মাণ, শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে ইজি বাইক স্টান্ট নির্মাণ এবং পৌর ফি বার্ষিক ১০০০ টাকা নির্ধারণ। ৪. গাইবান্ধা পৌরসভার টোকেন ও প্লেট বাণিজ্য, জুলুম হারানি বন্ধ, পৌরসভায় চলাচলকারী চালকদের স্বল্পমূল্যে রেশন প্রধান। ৫. প্রতিটি সড়ক-মহাসড়কে ইজিবাইকসহ স্বল্পগতির যানবাহনের জন্য আলাদা লেন বা সার্ভিস রোড নির্মাণ।

এদিকে দিনভর কর্মবিরতির কারণে যাত্রীদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। সকালে সুমি ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, স্কুলে যাবো, কিন্তু কোথাও কোনো গাড়ি পাচ্ছি না। তাই বাধ্য হয়ে হেঁটেই রওনা হলাম। দুই হাতে ব্যাগ নিয়ে স্ত্রীসহ রেলগেটে দাড়িয়ে ছিলেন শফিকুল ইসলাম নামে বৃদ্ধ; তিনি বলেন, ঢাকা থেকে আসছি। কিন্তু কোথাও কোনো গাড়ি পাচ্ছি না। শুনলাম ধর্মঘট চলছে। তাই বাধ্য হয়ে হেঁটে যাচ্ছি।

দুপুর ১টার দিকে শহরের পুরাতন জেলখানা মোড়ে রাস্তা অবরোধ করে সমাবেশ করে আন্দোলনকারীরা। এতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে জেলা শহরের সঙ্গে সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার যানবাহন চলাচল। 

সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে ‘রিকশা, ব্যাটারি রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ, গাইবান্ধা’র প্রধান উপদেষ্টা গোলাম রব্বানী, উপদেষ্টা সুকুমার চন্দ্র মোদক, আফরোজা আব্বাস, ইসরাত জাহান লিপি, জেলার প্রধান সমন্বয়ক লাভলু মিয়াসহ জেলা-উপজেলার অন্যান্য সমন্বয়ক ও চালকেরা বক্তব্য দেন। এছাড়াও সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বাসদ (মার্কসবাদী)’র জেলা সদস্য অ্যাডভোকেট নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি দিবস রহমানসহ অন্যান্য শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

প্রায় ৪ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে সমাবেশ শেষে বিকেল ৫টার দিকে মিছিল বের করে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

মিছিল শেষে সমাপনী বক্তব্যে ‘রিকশা, ব্যাটারি রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ, গাইবান্ধা’র প্রধান উপদেষ্টা গোলাম রব্বানী বলেন, আগামী ৭ দিনের মধ্যে যদি আমাদের দাবি মেনে না নেয়া হয় তাহলে আমরা কাফনের কাপড় পড়ে গাইবান্ধা পৌরসভা ঘেরাও করব। প্রয়োজনে আমরা ডিসি অফিস ঘেরাও করব। তিনি বলেন, আমরা সংগঠনের সভা আহ্বান করেছি। সেখানে পরবর্তী কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। কর্মসূচির বিষয়ে মাইকিং করে বিস্তারিত জানানো হবে। 

এ ব্যাপারে গাইবান্ধা পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হানিফ সরদার বলেন, শহরের যানজট নিরসণের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক ও পৌর প্রশাসক অলোচনা করে শহরের ব্যটারিচালিত ৬ হাজার অটোরিকশা দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন হাজার সবুজ ও তিনহাজার হলুদ করা হয়েছে। এই অটোগুলোকে সপ্তাহে তিনদিন করে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। এতে বিদ্যুৎ ও সাশ্রয় হবে যানজটও কমবে। তিনি বলেন, যারা লাইসেন্স করে নাই তারাই এ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। প্রশাসক মহোদয় এলে তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad