নিজস্ব প্রতিবেদক►
গাইবান্ধা জেলা পরিষদের ডাকবাংলোর পেছনে শতবর্ষী পুকুর ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ এবং পরিবেশের ক্ষতি করে গাছ কাটার অপ-তৎপরতার প্রতিবাদে প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। সমাবেশ শেষে পুকুর পুনঃখননসহ পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালকের মাধ্যমে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে।
শতবর্ষী পুকুর রক্ষা নাগরিক আন্দোলন, গাইবান্ধার উদ্যোগে আজ (সোমবার, ১১ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে জেলা পরিষদের সামনে এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
পরিবেশ আন্দোলন গাইবান্ধার সভাপতি নেতা ওয়াজিউর রহমান রাফেলের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, জেলা শহরের অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা। ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুরগুলো ভরাট করে ঘরবাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করার কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে। কোথাও অগ্নিকাণ্ড ঘটলে নেভানোর জন্য পানির উৎস পর্যন্ত থাকছেনা। এরকম একটি বাস্তবতায় জেলা পরিষদের ডাকবাংলোর পেছনের শতবর্ষী পুকুর ভরাট করে মার্কেট এবং অডিটোরিয়াম নির্মাণ করার পরিকল্পনা জেলাবাসীর জন্য হবে আত্মঘাতী। অথচ সেই আত্মঘাতী সিদ্ধান্তই নিয়েছে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ।
অতীত দিনের জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং বর্তমানের কর্তা ব্যক্তিরা অর্থের লোভে বেআইনি পথে এই কাজ করছে অভিযোগ করে বক্তারা বলেন, জেলা পরিষদের ভবনের সামনে একটি প্রবাহমান শতবর্ষের জলাধার ও খাল আছে। শহরের পানি বের হওয়ার ক্ষেত্রে এই খালটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেই খালটিও ভরাট ও বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে নতুনভাবে দোকান ঘর নির্মাণের পায়তারা করছে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ।
বন্যা ও বৃষ্টির পানির স্বাভাবিক গতিপথ ব্যাহত হওয়ায় প্রতিবছর বর্ষাকালে জলাবদ্ধতার সংকট তৈরি হয় জানিয়ে বক্তারা পরিবেশ ও জলাবদ্ধতার সংকট নিরসনকল্পে খালটির দ্রুত সংস্কারের দাবি করেন; বলেন, এক্ষেত্রে সু-স্পষ্ট আইন আছে। কোনোভাবেই জলাধার ভরাট করা যাবেনা এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ব্যাতিত গাছ কাটা যাবেনা। আমরা শুরু থেকেই জেলা পরিষদের এই বেআইনি কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করে আসছি। তারা মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে দোকান বরাদ্দের কথা বলে একদিকে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা, অন্যদিকে দোকান বরাদ্দ প্রত্যাশী মানুষসহ অন্যদেরকে উন্নয়নের গল্প বলে পক্ষে রাখার চেষ্টা করছে। আমরা অবিলম্বে পুকুরের উপর স্থাপনা নির্মানের কাজ বন্ধ করে মাটি খুরে পুকুরটি পুর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে আনাসহ গাছ কাটার পরিকল্পনা বাতিল করার আহবান জানাচ্ছি।
বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় পাঠচক্র ফোরামের সদস্য মনজুর আলম মিঠুর সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তৃতা করেন জেলা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু, গনফোরামের জেলা সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু, বাসদের জেলা আহবায়ক গোলাম রব্বানী, কমিউনিস্ট পার্টির জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য গোলাম রব্বানী মুসা, বাসদ(মার্কসবাদী)’র জেলা সদস্য নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের জেলা সভাপতি মৃনাল কান্তি বর্মন, বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের জেলা সদস্য সবুজ মিয়া, প্রগতি লেখক সংঘের জেলা সভাপতি দেবাশীষ দাশ দেবু, দোকান মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান হাবীব, সমাজকর্মী কাজী আব্দুল ওয়াদুদ, সদস্য জুলফিকার সরকার লেনিন, সাংবাদিক হেদায়েতুল ইসলাম বাবু প্রমুখ।