Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১১-৩-২০২৩, সময়ঃ বিকাল ০৩:২৪

ব্রীজট্যা হলে ছোলপৈলগুল্যার স্কুলোত যাওয়ারও এ্যাকনা সুবিদ্যা হলো হয়

ব্রীজট্যা হলে ছোলপৈলগুল্যার স্কুলোত যাওয়ারও এ্যাকনা সুবিদ্যা হলো হয়

নিজস্ব প্রতিবেদক ►

'ভ্যানোত করি কোনো মালামাল নিয়ে যাবার সময় খালি কইলজ্যা কাঁপে। কখন জানি ভ্যান সুদ্দ্য্যেয় ব্রীজ ভাঙ্গি ৫০ ফুট তলোত পরোম। এ্যার আগেও কাঠ ভাঙিয়্যা এক বেটিছোল নিচত পড়ি গ্যাচিল। ব্রীজ হওয়ার কতা ম্যালাদিন আগে থাকি শুনব্যার নাগচোম। ব্রীজট্যা হলে ছোলপৈলগুল্যার স্কুলোত যাওয়ারও এ্যাকনা সুবিদ্যা হলো হয়। ম্যালা জাগার মানুষ এই ব্রীজের উপরে দিয়্যা যায়।ব্রীজট্যা হামার খুব দরকার'। কথাগুলো বলছিলেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার বল্লমঝার ইউনিয়নের নারায়নপুর কিশামত বালুয়া গ্রামের ভ্যান চালক রহিমউদ্দিন ব্যাপারি (৪৮)। 

'দীর্ঘদিনেও ব্রিজটি নির্মাণ না করায় প্রতিদিন  এলাকার শিক্ষার্থী, চাকুরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাড়াপাড় হতে হয়। অনেক উচুঁ এবং বহু আগের কাঠের ব্রিজটি এখন নড়বড়ে হয়ে যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে গেছে'। বর্তমানে সেতুটির অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম। তিনি আরও বলেন, যে কোন সময় ব্রিজটি ভেঙ্গে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। অনেকেই কথা দেয়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর ব্রীজ নির্মাণ করা হয়না'। 

নারায়ণপুর গ্রামের স্কুল শিক্ষক শরিফুল ইসলাম বলেন, 'ব্রিজটির অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। স্কুলের  কোমলমতি শিশুদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। যেকোন সময় বড় ধরনের  দুর্ঘটনা ঘটনার আশংকা রয়েছে'।

গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ইউনিয়ন রয়েছে ১৩টি। এরমধ্যে খোলাহাটি, কুপতলা ও বল্লমঝাড়  এই তিন ইউনিয়নের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ হাজারো পথচারীর চলাচলের একমাত্র ভরসা নারায়নপুরের ঘাঘট নদীর উপর নির্মিত জরাজীর্ণ কাঠের সেতুটি। সেতুটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২০০ ফুট হলেও অত্যন্ত সরু এবং নিচ থেকে প্রায় ৬০ ফুট উচুঁতে অবস্থিত। 

ভুক্তভোগী এলাকাবাসী জানান, প্রায় ৮ বছর আগে ঘাঘট নদীর বড় ঘাটে এলাকাবাসীর উদ্যোগে বাঁশ এবং কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয় ব্রীজটি। তখন থেকেই এই ব্রীজের উপর দিয়ে আশপাশের তিন ইউনিয়নের মানুষ যাতায়াত করে। বিশেষ করে শহর ঘেষা চকমামরোজপুর, কুপতলার দুর্গাপুর, চাপাদহ, মোল্লাবাজার, বল্লমঝাড় ইউনিয়নের খোলাবাড়ি, জামেরতলসহ কয়েক হাজার মানুষ। তিন ইউনিয়নের সীমানা অঞ্চলও বলা হয় বড়ঘাট পাড়ের এই ব্রীজটিকে। এর আগে মানুষ প্রথমে নৌকা ও পরে বাঁশের সেতু তৈরি করে যাতায়াত করতেন। দু'বছর আগে স্থানীয় সংসদ সদস্য মাহাবুব আরা বেগম গিনি এমপি ব্রীজটি সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দ করেন এবং স্থায়ী ব্রীজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু এখনো স্থায়ী ব্রীজ নির্মাণ করা হয়নি। 

বল্লমঝাড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুলফিকার রহমান বলেন, 'ব্রীজটির দুপাশে দুটি বিদ্যালয়ে রয়েছে। প্রতিদিন শতশত মানুষ এই ব্রীজের উপর দিয়ে যাতায়াত করেন। পাশেই ভেড়ামারা ব্রীজের কাজ চলছে। ভুক্তভোগী মানুষগুলোর দুর্ভোগ লাঘবে কতৃপক্ষ দ্রুতই ব্যবস্থা নিবে এমনটাই প্রত্যাশা করছি। আমি নিজেও অনেকবার এই বিষয়টি নিয়ে উর্ধতন কতৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি'। 

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ্ সারোয়ার কবির  বলেন, ' সরেজমিনে গিয়ে দেখেছি কাঠের ব্রীজটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে নতুন ব্রীজ নির্মানের জন্য দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধিনে ব্রীজের ছবিসহ ইতিমধ্যে প্রকল্প কর্মকর্তার নিকট তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে। এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে চলতি অর্থবছরেই ব্রিজের কাজ শুরু করার প্রত্যাশা করছি'।

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad