দিনাজপুর প্রতিনিধি ►
দিনাজপুর সদরের ফুলবাড়ি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ডাচ বাংলা ব্যাংকের বুথ ফাস্ট ট্র্যাক সিডিএম (টাকা জমা মেশিন) তে চুরি যাওয়া ১১ লাখ ৯১ হাজার ৫০০টাকা উদ্ধারসহ দুই চোরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরে আদালতের মাধ্যমে দুই চোরকে কারাগারে প্রেরন করেছে পুলিশ।
আজ দুপুর ১ টার দিকে দিনাজপুর পুলিশ সুপার শাহ ইফতেকার আহমেদ চুরি হওয়া সমুদয় টাকা উদ্ধারসহ ও দুই চোকে গ্রেফতারের সংবাদ নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন , গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১০টায় বুথের সিডিএম মেশিনের কিছু অংশ ভেঙে ১১ লাখ ৯১হাজার ৫০০ টাকা চুরির ঘটনা ঘটে। এ সময় কয়েকটি এটিএম কার্ড ও ভুয়া ডিপোজিট স্লিপ জব্দ করে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত ব্যাক্তিরা হল চুরি হওয়ায় ডাচবাংলা ব্যাংকে কর্মরত ফাষ্ট ট্রাকের জুনিয়ার চ্যানেল অফিসার বরকত জামান (৩৫) তিনি পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলা বাগপুর গ্রামের মৃত তবিজুল ইসলামের ছেলে। দিনাজপুর সদরের গাবুরা বাজারে বিকাশ ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম (৩৮), তিনি দিনাজপুর জেলা সদরের রাজারামপুর গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে এবং দিনাজপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলামের ভাগনি জামাতা।
দিনাজপুর পুলিশ সুপার জানান, ডাচবাংলা বুথ থেকে চুরির পরিকল্পনা করে বরকত-রেজাউল। পরিকল্পনা অনুয়ায়ী ডাচবাংলা ব্যাংকের ফাস্ট ট্র্যাক বুথ থেকে গ্রাহকদের জমাকৃত টাকা উত্তোলন করেন অরনেড (তৃতীয় পক্ষ) নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। ব্যাংকের সাথে তাদের চুক্তি রয়েছে। টাকা উত্তোলনের সময় বুথের ব্যবস্থাপক ও অরনেডের কর্মকর্তা পৃথক পৃথক গোপন নম্বর ব্যবহার করে টাকা উত্তোলন করেন। আসামী বরকত জামান কয়েক বছর ধরে ফাস্ট ট্র্যাক বুথে কর্মরত আছেন। তবে গত এক বছর ধরে সিডিএম মেশিন থেকে টাকা চুরির পরিকল্পনা করে আসছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় ছয়মাস আগে স্থানীয় বিকাশ ব্যবসায়ী রেজাউলের সাথে সখ্যতা
গড়ে তোলেন। সপ্তাহ খানেক আগে রেজাউলকে চাকুরি পাইয়ে দেন অরনেডে। তিনদিন কাজ করে বেতন না পোষানোর অজুহাতে চাকুরী ছাড়েন রেজাউল ইসলাম।
গত ১১ নভেম্বর রাতে ৮টার সময় ফাস্ট ট্র্যাক বুথে দ্বিতীয় শিফটে দায়িত্বে আসেন প্রহরী রাশেদ ইকবাল। বরকত জামান তাকে নাস্তা আনতে পাঠান। এই সুযোগে প্রহরীর টিফিন কেরিয়ারে রাখা ভাতের সাথে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে দেন। নাস্তা খেয়ে কিছু সময় পরে অফিস থেকে বের হয়ে যান বরকত। রাত ১০টায় রেজাউলসহ বুথে প্রবেশ করেন। প্রহরী তখন ভাত খেয়ে গভীর ঘুমে। প্রথমে তারা বুথের ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা ডিভিআরটি সরিয়ে ফেলেন। পরে উভয়ের কাছে থাকা গোপন নম্বর ব্যবহার করে বুথ থেকে ১১ লাখ ৯১হাজার ৫০০টাকা চুরি করেন। রাত আড়াইটায় প্রহরীকে বুথের বারান্দায় গভীর নিদ্রা অবস্থায় দেখতে পেয়ে বরকতকে ফোন দেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। বরকত তখন ওই ব্যক্তিকে বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করতে বলেন।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরও জানান, সিসি টিভির ডিভিআরটি শহরের মাতাসাগর এলাকায় পৌরসভার ময়লা গাড্ডায় ফেলে দিয়েছেন। তাদের কথার সূত্র ধরে কতোয়ালী পুলিশ ময়লা গাড্ডায় একজন টোকাইয়ের সহযোগিতায় স্থানীয় একটি ভাঙরির দোকান থেকে ভাঙা অবস্থায় ডিভিআরটি উদ্ধার করেছে। সেইসাথে উভয়ের বাড়িসহ কয়েকটি জায়গা হতে ১১ লাখ ৯১ হাজার ৫০০টাকা জব্দ করেছে পুলিশ।