তিস্তা আকন্দ, সুন্দরগঞ্জ►
চাকরির বেতনে চলে সংসার এবং ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার খরচ। শতকরা ৯৫ ভাগ বেসরকারি শিক্ষক বেতনের ওপর নির্ভরশীল। ইএফটির (ইলেকট্রনিকস ফান্ড ট্রান্সফার) মাধ্যমে প্রতিমাসের ৭ তারিখের মধ্যে বেতন দেয়ার কথা। অথচ মাসের ১৬ তারিখেও বেতনের কোন খবর নেই। সে কারনে পরিবার নিয়ে কষ্টে আছেন বেসরকারি শিক্ষকরা বলছিলেন বেলকা মজিদপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. জালাল উদ্দিন। বেতন ছাড় না দেয়ার কোন কারন জানা যায়নি। তিনি আরও বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষকরা ইতোমধ্যে বেতন পেয়েছেন। একই মন্ত্রনালয়ের আওতাভূক্ত তারপরও এই অবস্থা। শিক্ষকতা পেশায় চাকরি করে বলতে হচ্ছে বেতন ভাতা না পাওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন। কে শুনে কার কথা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসসূত্রে জানা গেছে, গত ডিসেম্বর মাস হতে ইএফটির মাধ্যমে বেসরকারি কলেজ, স্কুল ও কারিগরি স্কুল এবং কলেজের বেতন ভাতা প্রদান শুরু হয়েছে। মাদ্রাসার বেতন ভাতা এখনো এমপিও এর মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে। উপজেলায় ১২টি কলেজ, ৯১টি স্কুল ও কারিগরি স্কুল এন্ড কলেজ রয়েছে। বেতন না পাওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীদের সংসার চালানো অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ইএফটির সমস্যা নেই বললে চলে, তারপরও কেন? বেতন ছাড় করা হচ্ছে না সেটি জানে না উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস।
উপজেলার ঘগোয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল হাকিম বলেন, প্রতিটি উৎসবের সময় বেতন নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। গত ঈদুল ফিতরের সময় বেতন-ভাতা না পাওয়ায় অনেকে ঈদের কেনাকাটা করতে পারে নাই। ফের কোরবানির ঈদের সময় বেতন-ভাতা নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে । আশঙ্কা করা যাচ্ছে আগামী সপ্তাহের মধ্যে বেতন-ভাতা ছাড় না করলে অনেকে কোরবানি দিতে পারবে না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, বেতন-ভাতা নিয়ে শিক্ষা অধিদপ্তরের সুস্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় শিক্ষক-কমচারীগণ মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বেতন-ভাতা সংক্রান্ত বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কোন তথ্য জানা নাই।
সুন্দরগঞ্জ সোনালী ব্যাংক পিএলসি শাখার ব্যাবস্থাপক মো. আব্দুল হাদী বলেন, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারিগণের বেতন-ভাতা এমন সংকট মহুত্বে দেয়া হয়, ঈদের আগে অনেকে টাকা উত্তোলন করতে পারেন না। সে কারনে সময়ের আগে বেতন-ভাতা ছাড় করলে শিক্ষক-কর্মচারীগণ স্বস্তি পাবেন।
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মো. মনোয়ার আলম সরকার বলেন, এটি গুনগত শিক্ষার মনোন্নয়নে একটি বড় চ্যালেন্স এবং অন্তরায়। শিক্ষকদের খুশি রেখে শিক্ষার মান উন্নয়ন সম্ভাব।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে শিক্ষা অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তার সাথে বহুবার যোগাযোগ করে তাদের মতামত নেয়া সম্ভব হয়নি।