Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • ১৯ ঘন্টা আগে
  • ৬৬ বার দেখা হয়েছে

গাইবান্ধায় সাড়ে পাঁচ শতাধিক মন্দির-মণ্ডপে দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি

গাইবান্ধায় সাড়ে পাঁচ শতাধিক মন্দির-মণ্ডপে দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি

আবু সায়েম►

শরতের আকাশে সাদা মেঘের ভেলা আর কাশফুলের শুভ্রতাই জানান দিচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব আসন্ন। তাইতো গাইবান্ধাজুড়ে চলছে দেবী বন্দনার প্রস্তুতি। হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা আর শৈল্পিক ভাবনায় তৈরি হচ্ছে একেকটি প্রতিমা। যেন দম ফেলার ফুরসত নেই প্রতিমা শিল্পীদের। অবয়ব দেয়া শেষে আর কয়েকদিন বাদেই প্রতিমার গায়ে পড়বে রঙের আঁচড়। এবছর গাইবান্ধা জেলায় সাড়ে পাঁচ শতাধিক মন্দির-মণ্ডপে চলছে দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি।

পঞ্জিকা অনুযায়ী, আগামী ২ অক্টোবর দেবীর আবাহনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার ক্ষণগণনা। মহালয়ার ছয় দিন পর শুরু হবে দেবী দুর্গার আরাধনা। সেই হিসেবে ৯ অক্টোবর দুর্গতিনাশিনী দশভুজা দেবীর মহাষষ্ঠী পূজা দিয়ে শুরু হবে শারদীয় দুর্গাপূজা। এরপর মহাসপ্তমী, মহাষ্টমী, মহানবমী শেষে ১৩ অক্টোবর বিজয়াদশমীতে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের দুর্গোৎসব। এবার দেবী দুর্গতিনাশিনী মর্ত্যে আসবেন দোলায় চড়ে এবং কৈলাশে ফিরবেন গজে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার সাত উপজেলার মন্দির ও মণ্ডপগুলোতে চলছে প্রতিমা তৈরি এবং সাজসজ্জার কাজ। খড়, কাঠ, সুতা আর মাটি দিয়ে নিপুণ হাতে তৈরি করছেন প্রতিমা। পূজা যতই ঘনিয়ে আসছে, শিল্পীদের ব্যস্ততা ততই বাড়ছে। দেবী দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, অসুরসহ প্রতিমাগুলোকে মনোমুগ্ধকর অনিন্দ্য সুন্দর রূপ দিতে ও নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলতে সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়ে কাজ করছেন প্রতিমাশিল্পীরা। জেলা শহরের শনি মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে প্রতিমা তৈরি করছেন শিল্পী বাদল চন্দ্র বিশ্বাস। পাশেই তার স্ত্রী ববিতা রানী প্রতিমায় পোশাক পড়াচ্ছেন। 

প্রতিমাশিল্পী বাদল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, বংশ পরম্পরায় আমরা প্রতিমা বানানোর কাজ করে আসছি। এবছর দুর্গাপূজা সামনে রেখে প্রতিমার অবয়ব তৈরির কাজ শেষের দিকে। প্রতিমায় যে নকশা করা আছে সেগুলো দেখা হচ্ছে। কোনো সংযোজন বিয়োজন থাকলে তা পরিবর্তন করা হবে। মাটির কাজ শেষে অক্টোবরের শুরুতেই প্রতিমার গায়ে রঙের আঁচড় দেয়া শুরু হবে। 

এদিকে শহরের ভি-এইড রোড কালিবাড়ী মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানেও প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ। শুধু রঙ দেয়া বাকী। মন্দির প্রাঙ্গনেই প্রতিমা তৈরির কাজ করছিলেন হরেন ঠাকুর নামে এক প্রতিমাশিল্পী। এসময় তিনি বলেন, চারজন মিলে ৪টা মণ্ডপের প্রতিমার কাজ করছি। দরকারি জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ায় খুব সীমিত আয় হবে। শুধু বাপ-দাদার পেশাটাকে টিকিয়ে রাখার জন্য এ কাজ করতে হচ্ছে।

বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ গাইবান্ধা জেলা শাখার তথ্য অনুযায়ী, এবছর এ পর্যন্ত জেলার ৭ উপজেলায় ৫৫৬টি মন্দির-মণ্ডপে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি চলছে। এর মধ্যে গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ৯৪টি, সুন্দরগঞ্জে ১১৩টি, সাদুল্লাপুরে ৯২টি, পলাশবাড়ী উপজেলায় ৫৮টি, গোবিন্দগঞ্জে ১২৭টি, সাঘাটায় ৫৮টি এবং ফুলছড়ি উপজেলায় ১৩টি রয়েছে।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, গাইবান্ধা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) বিমল চন্দ্র সরকার মাধুকরকে বলেন, এ পর্যন্ত জেলায় ৫৫৬টি মন্দির-মণ্ডপে দুর্গোসব আয়োজনের তথ্য পাওয়া গেছে। এ সংখ্যা কম-বেশি হতেও পারে। দুর্গোৎসব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে পর্যবেক্ষণ কমিটি করা হয়েছে। আশা করছি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুর্গোৎসব উদ্যাপিত হবে।

গাইবান্ধা পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন মাধুকরকে বলেন, যেসব জায়গায় দুর্গাপূজার প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে সেসব এলাকায় আমাদের টহল অব্যাহত রয়েছে। আমরা মন্দির-মণ্ডপের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। যেকোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা সবসময় প্রস্তুত রয়েছি। দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে কঠোর নজরদারি রাখা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad