সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধি ►
নিয়ম নীতির কোন তোয়াক্কা নেই। এক শ্রেণির অসাধূ মাটি ব্যবসায়ী প্রশাসনের সামন দিয়েই ফসলি জমির মাটি দেদারচ্ছে নিয়ে যাচ্ছে ইট ভাটায়। বিধি মোতাবেক নিচু জলাশয়, নদীর ধার, পরিত্যক্ত জমি হতে গর্ত করে মাটি সংগ্রহ করতে হবে। কিন্তু তা মানা হচ্ছে না। সে কারনে ফসলি জমির উর্বরতা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতি সাধন হচ্ছে। অপর দিকে অবৈধ ট্র্যাক্টরের (কাড়কা) বেপরোয়া চলাচলে কাঁচা-পাকা রাস্তা ঘাটের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হচ্ছে। পাশাপাশি স্কুল কলেজগামি শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। গত বছর ট্র্যাক্টরের ধাক্কায় চার জনের প্রাণ গেছে।
জানা গেছে, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ১৫টিইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মধ্যে ২২টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে ১৪টির ইটভাটার কাগজপত্র রয়েছে। বাকী ভাটাগুলোর বৈধ কোন কাগজপত্র নেই।
উপজেলা ইটভাট মালিক সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম জানান, কয়লা ও শ্রমিকসহ বিভিন্ন উপকরণের দাম সীমাহীন বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার প্রায় অর্ধেক ইটভাটা বন্ধ রয়েছে। চলতি মৌসুমে ১৬টি ইটভাট চালু রয়েছে। তিনি বলেন সর্বশেষ পরিপত্র মোতাবেক ৪টি ইটভাটার বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। ২০১৩ সালের পরিপত্র মোতাবেক ১০টি ইটভাটার কাগজপত্র রয়েছে। বাকী ৮টি ভাটার কাগজপত্রের ঘাটতি রয়েছে।
দক্ষিণ ধুমাইটারি গ্রামের মাটি ব্যবসায়ী মান্নান মিয়া জানান, তিনি বিভিন্ন এলাকায় কৃষকদের নিকট থেকে জমির মাটি ক্রয় করে তা ইটভাটা মালিকদের নিকট বিক্রি করে থাকেন। প্রতি শতক জমির এক ফুট করে মাটির বিক্রি হচ্ছে ৬০০ হতে ৮০০ টাকা দরে। তিনি বলেন তারা সাধারণত উচু জমির মাটি ক্রয় করে থাকেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কৃষকরা মাটি বিক্রি করলে তার করার কিছু নেই।
ঝিনিয়া গ্রামের জমির মালিক কৃষক রাজু মিয়া জানান, তার এক বিঘা জমি উচু। সে কারনে তিনি ওই জমির মাটি এক ফুট করে বিক্রি করেছেন। তিনি আরও বলেন মাটি বিক্রি করার কারনে কমপক্ষে ৩ হতে ৪ বছর ভাল ফসল হবে না। এরপর থেকে ভাল ফসল হবে।
দহবন্দ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল আলম রেজা জানান, ফসলি জমির মাটি ভর্তি ট্র্যাক্টর রাস্তার নিচ থেকে ওপরে উঠার সময় রাস্তা ধসে যাচ্ছে। এছাড়া বেপরোয়া চলাচলের কারনে রাস্তার দুই পাশ ধসে যাচ্ছে। যার কারনে অন্যান্য যানবাহন চলাচল ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার রাশিদুল কবির জানান, ফসলি জমির উরর্বর মাটি কেটে নিলে ৩ হতে ৪ বছর ভাল ফলন হবে না। পুনরায় জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পেতে অনেক পরিচর্যা করতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আল মারুফ জানান, বিধি মোতাবেক ইটভাটা মালিকরা ফসলি জমির মাটি নিতে পারে না। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।