শাহজাহান আলী মনন, সৈয়দপুর ►
একটি হাসপাতাল ও একটি মেডিকেল কলেজ নির্মাণের মাধ্যমে উত্তরের জনপদ নীলফামারীর সৈয়দপুরে চিকিৎসা সেবার নতুন দ্বার উম্মুক্ত হতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব পিপিপি অথরিটির প্রধান নির্বাহী ডা. মো. মুশফিকুর রহমান এমন সুসংবাদ দিয়েছেন। তিনি শনিবার (২৬ আগষ্ট) দুপুরে উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে শেলটেক হোল্ডার কন্সালটেশন সভায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নীলফামারী জেলা প্রশাসক নীলফামারী জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষের সভাপতিত্বে ও সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল রায়হানের সঞ্চালনায়। এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডা. মো. মুশফিকুর রহমান। এর আগে তিনি সৈয়দপুর রেলওয়ে হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রকল্প প্রধান আবুল বাশার, বীরমুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলী, বীরমুক্তিযোদ্ধা মোনায়মুল হক, সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোকছেদুল মোমিন, সাধারণ সম্পাদক মহসিনুল হক, ডা: আবু আহমেদ মরতুজা, ডা: মাহবুবুল হক, ডা: শেখ নজরুল ইসলাম, সাংবাদিক সাকির হোসেন বাদল, ব্যবসায়ী সিদ্দিকুল আলম, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ডিএস সাদিকুর রহমানসহ উপজেলা বিভিন্ন শেণী পেশার নেতৃবৃন্দ।
সভায় ডা. মুশফিকুর রহমান বলেন, দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ১২ হাজার ৫ শত মার্কিন ডলারের লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। এজন্য সময়ের দরকার। লক্ষ্য অর্জনে ১৫ থেকে ১৬ টি খাতকে চিহ্নিতের মাধ্যমে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তার মধ্যে এই শহরে ৫০ সিটের একটি মেডিকেল কলেজ ও একটি সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ সৈয়দপুর রেলওয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণ হচ্ছে। যেখানে কার্ডিওলজি, নেফ্রোলোজি, মাদার এ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার, নাক কান গলা ও ডায়ালোসিস কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। যাতে দেশের ১৫ ভাগ উত্তরাঞ্চলবাসীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত হয়।
জানা যায়, ২০১২ সালে তৎকালীন রেলপথ মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা পরিদর্শনে আসলে স্থানীয় জনগনের মাঝে এখানে বিদ্যমান রেলওয়ে হাসপাতালকে কেন্দ্র করে আলোচ্য মেডিকেল কলেজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে জরিপের কাজ করা হয়। সৈয়দপুর রেলওয়ে হাসপাতালকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশ এলাকার প্রায় ১০ একর জমি মেডিকেল কলেজের আওতায় নেয়া হয়।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্বাবধায়ক (ডি এস) কে আহবায়ক করে বিভাগীয় বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী, বিভাগীয় মেডিকেল অফিসার ও রেলওয়ের পূর্ত বিভাগের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী (ইনচার্জ) কে নিয়ে গঠন করা হয় চার সদস্য বিশিষ্ট কমিটি। পরে ২০১২ সালের ২ জুলাই পিপিপিএ তে প্রকল্পটি প্রেরণ করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ রেলওয়ে মন্ত্রালয়ের অধীনে ২০১৩ সালে প্রকল্পটি নীতিগত অনুমোদন পায়। এতে সম্ভাব্য ব্যায় ধরা হয় ৭৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার। এরপর ২০২২ সালে ২৭ জুন চুক্তি করা হয়। নিয়োগ দেয়া হয় বিশেষজ্ঞ। ড্রাফ ফিজিবিলিটি রিপোর্ট দাখিলের পর ২০২৩ সালের ১৯ জুন সভায় উপস্থাপন করা হয়।
নীরিক্ষনের জন্য মাঠ পর্যায়ে চুড়ান্ত হয় ফিজিবিলিটি রিপোর্টে। ৪ থেকে ৫ শত পরিবারের ওপর জরিপের পর নির্দেশনা দেয়া হয় এটি নির্মাণের। চুলচেরা বিশ্লেষণের পর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও প্রাইভেট অংশিদারের সঙ্গে চুড়ান্তের মাধ্যমে করা হবে চুক্তি। প্রক্রিয়াগতভাবে অবকাঠামো নির্মাণ এবং পর্যায়ক্রমে চিকিৎসা সামগ্রী, জনবল নিয়োগ সম্পন্নের মাধ্যমে চালু হবে উত্তরের চিকিৎসা সেবার নতুন এ চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়।