নীলফামারী প্রতিনিধি ►
নীলফামারী জেলায় মাঠে মাঠে চলছে এখন বোরো ধানের চারা রোপণের উৎসব। কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু করে দিনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত মাঠে চাষী-কৃষি শ্রমিকদের চরম ব্যস্ততা। জমিতে পানি সেচ, হালচাষ, বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন ও রোপণ সব নিয়ে কর্মচঞ্চল সময় পার করছেন তারা।
জেলার বেশিরভাগ কৃষক এরই মধ্যে শেষ করেছে জমি প্রস্তুতির কাজ। কৃষকরা জানান, পৌষ মাসের মাঝামাঝিতেই বোরো ধান রোপণের কাজ শেষ হয়ে যায়। কিন্তু মৌসুমের শুরুতে প্রচণ্ড শীত আর ঘন কুয়াশার কারণে কৃষকরা মাঠে নামতে পারেননি। এখন পুরো দমে চলছে কাজ।
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার চাঁদখানা এলাকার কয়েকজন কৃষক জানান, কিছু দিন আগেও প্রচণ্ড শীত আর ঘনকুয়াশার কারণে দুশ্চিন্তায় পড়তে হয়েছিল। অনেক কৃষক ক্যালেনের পানি সময়মতো পাচ্ছেনা। এমনকি বিদ্যুতের লোডশেডিং, সারের দাম বেশির ফলে আগ্রহ কমে যাচ্ছে। তবে এখন আবহাওয়া মোটামুটি ভালো। এ জন্য কৃষকরা মাঠে নেমে পড়েছেন।
প্রথম দিকে প্রচণ্ড শীতের কারণে জমি তৈরির কাজ ঠিক সময় মতো করা সম্ভব হয়নি। শীতের পাশাপাশি কৃষি শ্রমিকেরও সংকট ছিল। বেশি দাম দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে এখন শীতের দাপট কমায় মাঠে মাঠে কৃষকের ব্যস্ততা বেড়েছে।
নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ ড. এস এম আবু বকর সাইফুল ইসলাম জানান, আমাদের সার ব্যবস্থা খুব ভালো। আগামী বিশ বা পঁচিশ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই সব জমিতে রোপণ কাজ শেষ হয়ে যাবে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সবসময় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, অতিরিক্ত কুয়াশায় বীজতলার ঠিকমতো পরিচর্যা না করলে নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ জন্য প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা বীজতলার পানি পরিবর্তন করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আর রাতে পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখতে হবে। তাহলে বীজতলা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশেই কম থাকবে।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, নীলফামারী জেলায় মোট জমির পরিমাণ ১ লক্ষ ২৪ হাজার ৩ শত ৯৬ হেক্টর। চলতি মৌসুমে জেলায় ৮১ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২৭ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে পুরো লক্ষ্য মাত্রা অর্জন হবে।