• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ২৬-৪-২০২৩, সময়ঃ বিকাল ০৩:১০
  • ১৯০ বার দেখা হয়েছে

এক প্রতিষ্ঠানের দুই প্রধান শিক্ষক, পরীক্ষা কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব পেলেন শিক্ষা কর্মকর্তা 

এক প্রতিষ্ঠানের দুই প্রধান শিক্ষক, পরীক্ষা কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব পেলেন শিক্ষা কর্মকর্তা 

সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধি ►

এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুই প্রধান শিক্ষকের দ্বন্দ্বের কারনে এসএসসির পরীক্ষা কেন্দ্র বিদ্যালয়টিতে কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব পেলেন উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার। দীর্ঘ সাত বছর ধরে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান ধর্মপুর ডিডিএম উচ্চ বিদ্যালয়ে দুই প্রধান শিক্ষকের দ্বন্দ্বের কারনে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষা পরিচালনা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়ে আসছে।

বিদ্যালয়ের আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র বিতরণ সহ পরীক্ষার কেন্দ্রের যাবতীয় কায়ক্রম পরিচালনা নিয়ে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। পরীক্ষাথীসহ অভিভাবকরা রয়েছে নানা উৎকন্ঠায়। গত মঙ্গলবার বিকালে উপজেলা নিবার্হী অফিসার (চলতি দায়িত্ব) সচিবের দায়িত্ব প্রদান করেছেন। এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র ধর্মপুর ডিডিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের সচিবের দায়িত¦ পালন নিয়ে চলছিল নানা জল্পনা কল্পনা, আইনি ও  স্নায়ুযুদ্ধ। 

দীর্ঘ সাত ধরে ওই বিদ্যালয়ে দুইজন প্রধান শিক্ষক প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে দাবি করে আসছেন। এনিয়ে আদালতে ডজন খানেক মামলা রয়েছে। পাশাপাশি অভিযোগও রয়েছে অর্ধশতাধিক। শিক্ষা মন্ত্রনালয়, শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষাবোর্ড একনামে ধর্মপুর ডিডিএিম উচ্চ বিদ্যালয়েকে জানে বা চিনে। কিন্তু অত্যন্ত মজার বিষয় আজ কোন সমাধান হয়নি। সে কারনে বিদ্যালয়টি চলছে নিজের ইচ্ছায়। প্রতিষ্ঠান প্রধান দাবিদার দুইজন হচ্ছেন শিরিন মোছাঃ শামসাদ বেগম ও শরিফুল ইসলাম।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ৮ এপ্রিল বিদ্যালয়ের তৎকালিন এডহক কমিটির সভাপতি আনিছুর রহমান বিধি বহিভূত এবং ডিজি প্রতিনিধির সাক্ষার জাল-জালিয়াতি করে শরিফুল ইসলাকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। এর চার বছর পর ২০১৭ সালের ৮ অক্টোম্বর তৎকালিন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাজ্জাত হোসেন ডাকুয়া বিধি মোতাবেক শিরিন মোছাঃ শামসাদ বেগমকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। এরপর থেকে দুইজনে তাদের পদ বহাল রাখার জন্য উচ্চ আদালতে একাধিক মামলা করে। বর্তমানে ডজন খানেক মামলা চলমান রয়েছে। কিন্তু কোন সুরাহা হয়নি। এখন পর্যন্ত তাদের এমপিও( মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) হয়নি। 

২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় সচিবে দায়িত্ব পালন করেছেন বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক জালাল উদ্দিন। আসন্ন এসএসসি পরীক্ষায় সচিবের এবং কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত¦ প্রদান করা হয়েছে উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহমানকে। 

ওই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীর অভিভাবক মশিউর রহমান মিঠু জানান, এখন পর্যন্ত তার ছেলে প্রবেশ পত্র পায়নি। কে প্রবেশ পত্র বিতরণ করবেন তাও জানা যায়নি। এনিয়ে তিনি উৎকষ্ঠায় রয়েছেন অভিভাবকগণ। 

দাবিদার প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম জানান, তিনি বৈধ প্রধান শিক্ষক। আদালতের রায় তার পক্ষে রয়েছে, এবং শিক্ষাবোর্ড ইতিমধ্যে তাকে এডহক কমিটি প্রদান করেছে।  তিনি গত ফেব্রয়ারী ও মার্চ মাসের শিক্ষক কর্মচারির বিল দিয়েছেন। মামলা নিয়ে পাল্টাপাল্টি আদেশ থাকায় সে পুরোপুরি দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না।

অপর দাবিদার প্রতিষ্ঠান প্রধান শিরিন মোছাঃ শামসাদ বেগম জানান, তিনি প্রকৃতপক্ষে বৈধ প্রধান শিক্ষক। তিনি দীর্ঘদিন হতে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আদালতের আশেদ তার পক্ষে রয়েছে। গত দুই সপ্তাহ আগে শরিফুল ইসলামের কমিটি বাতিল করে দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ড পুনরায় তাকে এডহক কমিটি প্রদান করেছে এবং  তিনি শিক্ষক কর্মচারিগণের এপ্রিল মাস ও বেশাখী এবং ঈদ বোনাস  প্রদান করছেন। প্রশাসন অন্যায়ভাবে তাকে কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব হতে বিরত রাখছেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল মমিন মন্ডল জানান, মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারনে ওই প্রতিষ্ঠান প্রধানের পদটি নিয়ে ¯œায়ুযুদ্ধ চলছে। কেন্দ্র সচিবের বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন নির্ধারণ করেছেন। 

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রফেসর মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানান, উচ্চ আদালতের আদেশের ভিত্তিত্বে কমিটি প্রদান করা হয়েছে। আদালতের বাইরে শিক্ষা বোর্ডের কাজ করার সুযোগ নেই।

উপজেলা নিবার্হী অফিসার (চলতি দায়িত্ব) মো. মাসুদুর রহমান জানান, ওই প্রতিষ্ঠান প্রধানের পদ নিয়ে আদালতে একাধিক মামলা রয়েছে। সে কারণে সচিবের দায়িত্ব নিয়ে জটিলতা রয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য উপজেলার সহকারি শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।
 

নিউজটি শেয়ার করুন


এ জাতীয় আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়