Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১৭-৫-২০২৫, সময়ঃ সকাল ০৯:৪৩
  • ১৭ বার দেখা হয়েছে

নারীর অধিকার ও সাম্য প্রতিষ্ঠার দাবিতে ‘মৈত্রী যাত্রা’

নারীর অধিকার ও সাম্য প্রতিষ্ঠার দাবিতে ‘মৈত্রী যাত্রা’

মাধুকর ডেস্ক►

নারীর অধিকার, মর্যাদা ও সমতার দাবিতে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রা’ কর্মসূচি। শুক্রবার (১৬ মে) বিকেল সাড়ে ৩টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়। 

এ সময় বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর মানুষের সমন্বিত সাংস্কৃতিক পরিবেশনা তুলে ধরা হয়। পরে মঞ্চ থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়, যা আন্দোলনের মূল দাবি এবং দৃষ্টিভঙ্গির রূপরেখা তুলে ধরে। এরপর অনুষ্ঠানস্থল থেকে একটি র‌্যালি খামারবাড়ী অভিমুখে যাত্রা করে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে গিয়ে শেষ হয়।

‘সমতার দাবিতে আমরা’ স্লোগান সামনে রেখে কর্মসূচিতে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এদিন দুপুর ২টা থেকে হাতে প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার নিয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে সমবেত হতে থাকেন তারা। কর্মসূচিতে অংশ নেন প্রগতিশীল নারী আন্দোলনের কর্মী, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক সংগঠক, শ্রমিক, পেশাজীবী ও সমাজ সচেতন নাগরিকরা।

ঘোষণাপত্রে বলা হয়, ‘চব্বিশের অভূতপূর্ব জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর আজ আমরা এক গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি মুহূর্তে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। আমাদের দাবি, গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ; যেখানে সব মানুষের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে বৈষম্য বিরোধিতা ও সাম্যের যৌথ মূল্যবোধের ওপর। সমতা ও ন্যায্যতার পথে এ মৈত্রীযাত্রায় আমরা সবাইকে স্বাগত জানাই।’

এতে আরও বলা হয়, ‘আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়েও নারীসহ অন্যান্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর এ অগ্রযাত্রায় নানান প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলেছে প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী ও পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা। নারীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রার ক্ষেত্রেও তারা বাধা তৈরি করছে। ব্যক্তিগত আক্রমণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধা এবং অনলাইনে হয়রানি করে রাজনৈতিক পরিসরে নারীর অংশগ্রহণ নিরুৎসাহিত করার তৎপরতা দিবালোকের মতো স্পষ্ট। বিভিন্ন স্থানে অতর্কিত হামলা, আন্দোলনে বাধা, পরিকল্পিত মব-আক্রমণ, মোরাল পুলিশিং, যৌন নিপীড়ন, ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, প্রকাশ্যে মারধর এবং নানান ধরনের হুমকি প্রদান অব্যাহত রয়েছে।’

ঘোষণাপত্রে বেশকিছু দাবিও তুলে ধরা হয় সরকারের প্রতি। দাবিগুলো হলো নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সহিংসতার হুমকি, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ঘিরে গুজব ও অপপ্রচার এবং ধর্মীয় মূল্যবোধকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে আতঙ্ক সৃষ্টির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ। নারী ও প্রান্তিক জনগণের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে আশু পদক্ষেপ গ্রহণ। যেসব রাজনৈতিক দল নারীদের সমর্থন চায়, জাতীয় নির্বাচনে সেসব রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের অন্তত শতকরা ৩৩ ভাগ (ক্রমান্বয়ে জনসংখ্যার অনুপাতে) নারী হতে হবে।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য নারীদের সমঅধিকার নিশ্চিত। একই সঙ্গে নারীর প্রতি সমাজে চলমান অবহেলা, নিপীড়ন ও সহিংসতার বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ জানাতেই এই উদ্যোগ। কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ৩১টি স্লোগানের একটি তালিকা প্রকাশ করেছেন তারা। এসব স্লোগানে উঠে এসেছে নারীর অধিকার, নিরাপত্তা, সামাজিক মর্যাদা, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার, ফ্যাসিবাদ বিরোধিতা এবং বৈশ্বিক সংহতির বিষয়, বিশেষ করে ফিলিস্তিনের নিপীড়িত জনগণের পক্ষে অবস্থান।

নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায় এই কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে অনেক সংগঠন। তার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, নারী মুক্তি কেন্দ্র, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, হিল উইমেন্স ফেডারেশন, আদিবাসী ইউনিয়ন, গার্মেন্টস শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন, বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম, বাংলাদেশ নারী জোট, নারী সংহতি, ছাত্রফ্রন্ট (মার্কসবাদী), তীরন্দাজ, শ্রমিক অধিকার আন্দোলন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad