আন্তর্জাতিক ডেস্ক►
সম্প্রতি বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারতের। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী।
আজ (বুধবার, ৪ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী আলোচনার জন্য আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশ সফর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। গত আগস্টে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর সিনিয়র কোনো ভারতীয় কর্মকর্তার ঢাকায় এটিই প্রথম সফর হতে চলেছে।
হিন্দুস্তান টাইমস আরও বলছে, উভয় দেশের কেউই এখনও এই সফরের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি। তবে বিক্রম মিশ্রী সম্ভবত আগামী ১০ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক আলোচনার জন্য বাংলাদেশে আসবেন। বিক্রমের সফরের প্রস্তুতির বিষয়ে অবগত ব্যক্তিরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিষয়টি জানিয়েছেন।
সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর কথিত হামলা এবং ইসকন নেতা চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তার নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক নজিরবিহীন চাপের মধ্যে রয়েছে। এসব ইস্যুতে প্রতিদিনই বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতের কয়েকটি রাজ্যে বিক্ষোভ হচ্ছে। ওই দেশের নেতারাও বিভিন্ন আপত্তিকর মন্তব্য ও প্রস্তাব করছেন। এ পরিস্থিতিতে গত সোমবার আগরতলায় বাংলাদেশের কনস্যুলেটে একটি বড় বিক্ষোভ থেকে হামলা হয়। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখানোসহ মঙ্গলবার ভারতীয় রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মাকে তলব করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
অবশ্য ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিবের সফরের এই সিদ্ধান্ত গত ২৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে সাইডেলাইনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের মধ্যে একটি বৈঠকে নেওয়া হয়েছিল। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আগস্টে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর এটিই ছিল ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগ।
এর আগে, সবশেষ পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈঠক ২০২৩ সালের নভেম্বর নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এবারের এই প্রস্তাবিত বৈঠকে ভারতের অর্থায়নে উন্নয়ন প্রকল্প পুনরায় শুরু করা, ভিসা ব্যবস্থার সহজীকরণ, সরাসরি ফ্লাইট বাড়ানো এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিষয়গুলো আলোচনা করা হবে বলে জানা গেছে।
হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, বাংলাদেশ এই সফরকে এগিয়ে নিতে আগ্রহী। কারণ, একে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমানো এবং সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।