• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১৩-৫-২০২৩, সময়ঃ বিকাল ০৪:৩৫
  • ৫৭ বার দেখা হয়েছে

হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের রাস্তা অবরোধ করেই বিক্ষোভ, ঘন্টা খানিক পর পুলিশের হস্তক্ষেপে যান চলাচল স্বাভাবিক

হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের রাস্তা অবরোধ করেই বিক্ষোভ, ঘন্টা খানিক পর পুলিশের হস্তক্ষেপে যান চলাচল স্বাভাবিক

দিনাজপুর প্রতিনিধি ে►

দিনাজপুর হাজী মুহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাঁশেরহাট দোকান মালিক সমিতির মধ্যে পাল্টাপাল্টি অভিযোগের ভিত্তিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ঘন্টা খানিক যান চলাচল বন্ধ থাকার পর পুলিশের হস্তক্ষেপে যান চলাচল স্বাভাবিক।  আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১১ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত দিনাজপুর টু দশ মাইল মহাসড়কের বিশ্ববিদ্যালয় সম্মুখ সড়কটি অবরোধ করে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা । এতে করে মহাসড়কের পাশের শত শত যানবাহন দুর্ভোগের শিকার হয়।

জানা যায় গত শুক্রবার দিনাজপুর হাজী দানেশ বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বাঁশের হাটের ভাতের হোটেলে খাবারের দাম নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে ঐ খাবার হোটেলের প্লেট ও  পাতিল ভাঙচুর করে। এই ঘটনার পর বাঁশের হাটের সমস্ত দোকান মালিক সমিতি জরুরী ভিত্তিতে  মিটিং করে নীরব প্রতিবাদ স্বরূপ আজ শনিবার সকল দোকান পাঠ বন্ধ ঘোষণা করেন।  এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা খাবার হোটেল সহ অন্যান্য দোকানপাট বন্ধ থাকায় খাবার সংকর দেখা দেয় । এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাঁশেরহাট দোকান মালিক সমিতির সদস্যদের সাথে এক জরুরী সভার আয়োজন করেন মালিক সমিতি বাঁশেরহাট দোকান মালিক সমিতি।  সিদ্ধান্ত গ্রহনের শেষের দিকে হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা মহা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে  । 

হাবিপ্রবি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত ছাত্র বুলবুল আহমেদ বলেন, গত শুক্রবার  হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যরালয়ের পাশে বাঁশের হাটের এক হোটেলের একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার ঘটে।  যা আসলে দুঃখজনক । তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী বাশেঁরহাটের বিভিন্ন দোকান মালিকেরা যেকোনো পণ্যের দাম অতিরিক্ত নেওয়ার প্রতিবাদে  এবং খাবারের দাম বৃদ্ধির করা হয়েছে ।  যা একই পন্যোর দাম  অন্যান্য বাজারের তুলনায় অনেক বেশি নেয়। কারণ ছাত্ররা দেশের বিভিন্ন দূর-দূরান্ত বাবা-মায়ের কাছে এটা নির্দিষ্ট পরিমাণে টাকা নিয়ে তাদের শিক্ষাজীবন চালিয়ে যাচ্ছে । আর হঠাৎ করেই প্রতিটি নিত্যপন্যের  মূল্য বৃদ্ধি ও ছাত্রাবাসের ভাড়াওা অস্বাভাবিক ভাবে  বৃদ্ধি করায় আমরা া অনেকটাই অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।

আন্দোলনকারী ছাত্র সেলিম মিয়া বলেন, আমরাও তো সাধারণ আমাদের বাবা-মা ও জনসাধারণ আমরা এটি নির্দিষ্ট পরিমাণের অর্থ নিয়ে আসি। যা সেই টাকা  প্রতি মাসে  আমাদের প্রতি মাস চলতে হয় ।  হঠাৎ করেই বিশ্ববিদ্যালয় পার্শ্ববর্তী বাজার বাঁশেরহাটে প্রতিটি পণ্যের দাম ঊর্ধগতি হওয়ার কারণে আমাদের বাড়ী থেকে যে পরিমাণ টাকা পাঠানো হয় তা ২০/২৫ দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যায় । আমাদের দেওয়ালে পিট ঠেকে গেছে বাধ্য হয়েই  বাঁশের হাটের সমস্ত খাবারের দোকান থেকে শুরু করে সকল পণ্যের দোকান বন্ধ করে দিয়েছে ।  আমরা দুপুর পর্যন্ত না খেয়ে আছি ।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, বর্তমানে প্রতিটি পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেলেও বাঁশেরহাটের দোকানদাররা অতিরিক্ত ভাবে প্রতিটি পণ্যের দাম বৃদ্ধি করেছে যা শতকরা ৩৫ থেকে ৪০% বাড়িয়ে দিয়েছে ।  আমরা অনেকটাই  অনেকবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানালেও বিশ্ববিদ্যালয় কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেন নাই । তাই বাধ্য হয়েই সাধারণ ছাত্ররা এবং আজকে বিশ্ববিদ্যালয় আশপাশের সকল দোকান বন্ধ করে দিয়েছে দোকান মালিকরা অবস্থিত ধর্মঘট পালন করছে।  

বাশেঁরহাট দোকান মালিক সমিতির ষভাপতি  নজরুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীরা ঠুলকো কিছু ঘটনা কে কেন্দ্র করে  দোকান মালিকের সামনেই  ছেলেকে মারধর করে । আবার ছেলের সামনেই বাবাকে মারধর করে। বিষয়টি বারবার আমরা বিশ্ববিদ্যালয়  প্রশাসনকে অভিযোগ করলেও কোন সুরাহা পাই নাই।  গতকালকে  বাঁশরহাটের এক হোটেল মালিক কে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও ভাতের প্লেট ভেঙ্গে ফেলেছে এবং পাতিল লাথি মেরে ঘড়েিয় দিয়েছে শিক্ষার্থীরা । মাঝেমধ্যেই শিক্ষার্থীরা অমানবিক আচরণ করে। আমরা তো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদেও সাথে পারব না তাই আমরা বাঁেশর হাট দোকান মালিক সমিতি জরুরী ভাবে  সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আজকে বাঁশেরহাটের সকল দোকানপাট বন্ধ থাকবে।  নিরব প্রতিবাদস্বরূপ দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ।

বাঁশেরহাট মালিক সমিতি দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমরান আলী  বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্নভাবে বাশেঁরহাটের বিভিন্ন দোকান মালিকদেরকে নির্যাতিত ও অপমানিত করে । বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্ররা অমানবিক উগ্র ও  নিকৃষ্ট যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না । কয়েকদিন পর পর  দোকানদের উপর পর পর হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে । 

দিনাজপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোহাম্মদ জিন্নাহ মামুন বলেন, দোকান মালিক সমিতি ও সাধারণ ছাত্রদের বিষয় নিয়ে আমরা এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যাপক আলোচনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের এই বিষয়টি আমলে নিয়েছি এবং এই ঘটনাটিকে যেন সুষ্ঠুভাবে সমাধান করা যায়।  এজন্য আগামী বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় দোকান মালিক  সমিতির প্রতিনিধি ও ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিদেরকে নিয়ে সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে । সকল পক্ষ বিষয়টিকে পজিটিভ ভাবে গ্রহণ করায় দিনাজপুর টু দশ মাইলের  অবরোধ ছাত্ররা  অবরোধ তুলে নেয় । এখন যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে  তবে ঘন্টা খানেক যান চলাচল বন্ধ থাকায়  সাময়িকভাবে পথচারীদের চলাচলের অনেকটাই বিঘœ ঘটেছিল।

হাবিপ্রবি প্রক্টও ডঃ মামুনুর রশিদ বলেন  রাস্তা অবরোধের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক । প্রাথমিকভাবে আমরা আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করে আন্দোলন স্থগিত করার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। পরে পুলিশ প্রশাসন আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে আলোচনা ও বিষয়টি পরবর্তীতে মীমাংসার করার উদ্যোগ গ্রহণ করার কারণে আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীরা আন্দোলন স্থগিত করে ।  ফলে যান চলাচল স্বাভাবিক আছে বাশেঁরহাটের দোকানপাট স্বাভাবিক ভাবেই চলছে। 
 

নিউজটি শেয়ার করুন


এ জাতীয় আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়