• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ২১-৪-২০২৩, সময়ঃ সকাল ০৯:৩৩
  • ৪০ বার দেখা হয়েছে

রিকশায় বসলেন মম ও কোনাল, চালকের আসনে গান ধরলেন বর্ষণ

রিকশায় বসলেন মম ও কোনাল, চালকের আসনে গান ধরলেন বর্ষণ

বিনোদন ডেস্ক ►

আসছে ঈদ। কথাটি মনে হলেই অন্যরকম ভালো লাগায় মন ছুঁয়ে যায়। একই সঙ্গে মনে পড়ে যায় উৎসবকে ঘিরে আরও কত কী করার বাকি। সবার মতো তারকারাও নিজ নিজ অঙ্গনে বাড়তি আয়োজনের জন্য উঠে পড়ে লাগেন। অভিনয়শিল্পীরা দাঁড়িয়ে যান ক্যামেরার সামনে। কণ্ঠশিল্পীরা ভিড় জমান রেকর্ডিং স্টুডিওতে। উপস্থাপক থেকে শুরু করে তারকা নির্মাতারাও ব্যস্ত হয়ে পড়েন বিশেষ কিছু করার তাগিদে। এই বিশেষ আয়োজনই হলো ঈদ উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ; যা বিনোদনের তৃষা মেটাবে কোটি কোটি মানুষের। এত গেল পেশাদারিত্ব অঙ্গনের জায়গা। অন্যদের মতো তারকাদের ব্যক্তিজীবনে সাজসজ্জা নিয়েও মাথা ঘামাতে হয়।

ঈদ যখন দোরগোড়ায় তখন প্রিয়জনদের জন্য ঈদ উপহার, সালামি, মুখরোচক খাবার আয়োজন, বেড়াতে যাওয়া– কোনো কিছুই বাদ পড়া যাবে না। এ ভাবনা নিয়ে শুরু হয় ছোটাছুটি। কখনও আবার ঈদ উৎসবকে রাঙাতে আর নাড়ির টানে ছুটে যেতে হয় স্থায়ী ঠিকানায়। এই চিত্র বহুকালের। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না বলে আমাদের বিশ্বাস। তারপরও তারকাদের কাছে আমরা জেনে নেওয়ার চেষ্টা করেছি ঈদ যখন দোরগোড়ায়, তখন তারা কী ভাবছেন, ঈদ উদযাপন নিয়ে তাদের পরিকল্পনার কথা।

এমনই কিছু প্রশ্নের উত্তর নিয়ে বৈশাখের বিকেলে রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএস এলাকায় নন্দনের ঈদ আড্ডায় হাজির হয়েছিলেন অভিনয়শিল্পী জাকিয়া বারী মম, ইমতিয়াজ বর্ষণ ও কণ্ঠশিল্পী সোমনূর মনির কোনাল। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সেখানে হাজির হন কোনাল। এরপর একে একে সেখানে আসেন মম ও বর্ষণ। রোদ থেকে বাঁচতে রাস্তায় দাঁড়ানো এক অটোরিকশায় উঠে পড়লেন বর্ষণ। খালি রিকশা পেয়ে উঠে পড়লেন মম ও কোনালও। বর্ষণ চালকের আসনে বসে গানও ধরলেন। চলে নানা দুষ্টুমি। এবার বিরতি। ফাঁকে হলো নানা কথা।

শুরুতেই মমর কাছে ঈদ উপযাপন নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এবার ঈদ পরিবারের সঙ্গেই কাটাব। এটাই উদযাপনের জায়গা। ছোটবেলা ঈদ ছিল বেশি আনন্দের। এখন দায়িত্বের। একটা সময় বেশি ঈদ করেছি ঢাকায়। কখনও কখনও নানাবাড়িতে যেতাম। ছোটবেলার ঈদের রঙিন দিনগুলো ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কেটেছে। ঈদ সবার জন্য আনন্দের। যে যার সাধ্যমতো নতুন কাপড় পরেন। নানা রকম খাওয়া-দাওয়া হয়। সবার মনে খুশি থাকে। আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা-সাাৎ হয়। রোবটিক জীবনের বাইরে আমাদের পারিবারিক জীবনের ঈদেই বেশি খুঁজে পাওয়া যায়। এ কারণেই আমার কাছে ঈদ বেশি আনন্দের। এ উৎসবে সবার মুখে যখন হাসি থাকে, তখন অন্যরকম ভালো লাগায় আমাকে ভরিয়ে দেয়।


মমর কথা শেষ হতে না হতেই ঈদ পরিকল্পনা নিয়ে বর্ষণ বলেন, ‘ঈদ উদযাপন করব চট্টগ্রামে। দুই দিন আগেই সেখানে যাব। সকালে নামাজ শেষে মাকে সালাম করে দিনটি শুরু করতে চাই। এরপর নানুর সঙ্গে দেখা করব। গ্রামের বাড়ি ফটিকছড়িতে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। সেখানে বাবার কবর জিয়ারত করব। ঈদে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালো লাগে। শুটিং ব্যস্ততা ও ব্যক্তিগত কারণে ছেলেবেলার বন্ধুদের সঙ্গে আমার দেখা একেবারেই কম হয়। ঈদ বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে দেখার সুযোগটি এনে দেয়। শৈশবের মতো এখনও ঈদের সময়টা কাটাতে চাই। বন্ধুদের সঙ্গে রাতে দেখা করব। দিনের বেলায় আত্মীয়স্বজনদের বাসায় যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। মনে পড়ে, ঈদে এমনও দিন গেছে নিজ বাসায়ই যেতাম না। প্রায় ৪০টির মতো বাসায় যেতাম। এখন দু’চারটা বাসায় গেলেই সময় শেষ হয়ে যায়। ছোটবেলায় বন্ধুদের সঙ্গে যেমন পুরো পাড়া ঘুরে বেড়াতাম। এবার সেভাবেই ঘুরতে চাই। ছোটবেলার হারিয়ে ফেলা সময়টা খুব মিস করছি। সময় বড় বিষয়। এখন কোন দিক দিয়ে ঈদের দিন শুরু হয় আর শেষ হয় টেরই পাই না।’ ঈদে পাঞ্জাবি পরতে পছন্দ বর্ষণের। যে জন্য অনেক আগেই প্রিয় পোশাকটি কিনেছেন।

কণ্ঠশিল্পী কোনাল ঈদের দিন ফাঁকা ঢাকায় ঘুরে আনন্দময় কিছু সময় পার করতে চান। গ্রামে গিয়ে বাবার কবর জিয়ারতও করবেন। বাসায় মায়ের সঙ্গে রান্নায় কাটবে কিছু সময়। ঈদের পরদিন আবার ব্যস্ত হয়ে পড়বেন কনসার্টে। টাঙ্গাইলের মধুপুরে শ্রোতাদের সঙ্গে কাটবে তাঁর আনন্দময় কিছু সময়। আড্ডার ফাঁকে ছোটবেলার ঈদস্মৃতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘ঈদে দুই-তিন দিন আগে আমরা মানিকগঞ্জের সিংগাইরে দাদাবাড়িতে যেতাম। সব আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা হতো। ঈদের দিন বাড়ির উঠানে হকাররা নানা রকম পসরা সাজিয়ে বসতেন। নিজে কিনতাম। অন্যদেরও কিনে দিতাম। বাবা বেঁচে নেই। এ কারণে ঈদে আনন্দ একটু ফিকে হয়ে গেছে। ঈদের দিন বাবার স্মৃতি খুঁজে বেড়াই।’

শুধু উৎসব আনন্দে মেতে ওঠার জন্য নয়, দিনের পর দিন ব্যস্ত থাকার পর এক টুকরো অবসরের জন্য এই দিনটি বহু কাঙ্তি। এমন কথা শোনা যায় সংস্কৃতি অঙ্গনের অনেকের মুখে। মোবাইল ফোনে তারকাদের কাছ থেকে ঈদকে ঘিরে আরও কিছু কথা জানারও চেষ্টা ছিল।

অভিনেতা ফেরদৌস বলেন, ‘শৈশবের ঈদ আনন্দের সঙ্গে কোনো কিছুর তুলনা চলে না। চাঁদ দেখা থেকে শুরু করে, শৈশবের ঈদ উৎসবের মুহূর্তগুলো আজও মনের পর্দায় ভেসে ওঠে। তখন প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসাব-নিকাশ হতো নতুন জামা, জুতা নিয়ে। এখন একটাই আকাঙ্া, একটুখানি অবসর। ব্যস্ত জীবন এভাবেই বদলে দিয়েছে চাওয়া-পাওয়া। এ জন্য ঈদের নামাজ পড়ে বাসায় ফিরে যাই, লম্বা একটা ঘুম। বালিশের পাশে রাখা মোবাইল ফোনে তখন জমা হতে থাকে বন্ধু, প্রিয়জন, আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে অগণিত ভক্তের শুভেচ্ছা বার্তা। ঘুম ভেঙে জেগে ওঠার পর, একে একে দেখতে থাকি বার্তাগুলো। শুভেচ্ছা বার্তা জমিয়ে রাখতেই ভালো লাগে। সেই সঙ্গে ভালো লাগে প্রিয়জনদের সঙ্গে কাটতে। যতদূর পারি, দু’এক জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করি। এভাবেই দিনটা কখন যে ফুরিয়ে যায়, বুঝতেই পারি না।’

ফেরদৌসের মতো অভিনেত্রী ও মডেল সাবিলা নূরও দিনভর ব্যস্ত থাকবেন ঈদের দিন। তাই ঈদের দিনটা একটু অন্যরকম কাটাতে চান তিনি। এবারও নিজ হাতে রান্না করে খাওয়াবেন প্রিয়জনদের। এরপর বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাবেন বলে জানান এ তারকা অভিনেত্রী।

একই রকম পরিকল্পনার কথা শোনালেন অভিনেত্রী ও মডেল তানজিন তিশা, কেয়া পায়েল ও সামিরা খান মাহি। জানালেন, ঈদে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করবেন তাঁরা। ঘুরে বেড়ানোর মধ্য দিয়ে খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করবেন শৈশব-কৈশোরের উচ্ছ্বাস।

নিউজটি শেয়ার করুন


এ জাতীয় আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়