• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ৪-৫-২০২৩, সময়ঃ সকাল ০৯:৪৩
  • ২২ বার দেখা হয়েছে

নীলফামারীতে বোরোর বাম্পার ফলন

নীলফামারীতে বোরোর বাম্পার ফলন

নীলফামারী সংবাদদাতা ►

নীলফামারীতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে বোরো ধান। এখন চলছে ধানকাটা ও মাড়াইয়ের ব্যস্ততা। সরকারের ভর্তুকি মূল্যে দেওয়া কম্বাইন হারভেস্টর ও রিপার মেশিন দিয়ে ধানকাটা ও মাড়াই করছেন কৃষকরা। এজন্য জেলায় ব্যবহার হচ্ছে ৫৩টি হারভেস্টর ও ১৪৪টি রিপার মেশিন।

জানা যায়, নীলফামারীতে ৮১ হাজার ৭শ’ হেক্টর ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে আরও ১০ হেক্টর বেশি। অর্থাৎ মোট ৮১ হাজার ৭১০শ’ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে বোরো ধান। এদিকে তিন লাখ ৬৬ হাজার ৭৮০ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। জেলার ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ, সদর ও সৈয়দপুর উপজেলায় ঝড় বৃষ্টির শঙ্কায় পুরোদমে ধানকাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। শ্রমিক সঙ্কটে কম্বাইন হারভেস্টর ও রিপার মেশিন কৃষকের বন্ধু হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক স্থানে যান্ত্রিক কৃষি যন্ত্র ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলার দিয়ে চলছে ধান কাটা ও মাড়াইয়ে কাজ।

জেলার সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের কৃষক সোলেমান আলী জানান, আমার পাঁচ বিঘা জমির ধান একসঙ্গে পেকেছে। কিন্তু ধানকাটা শ্রমিক পাচ্ছি না। এলাকার অনেক শ্রমিক ধানকাটার জন্য বাইরের জেলায় গেছেন। আকাশের অবস্থাও ভালো নেই। তাই কম্বাইন হারভেস্টর মেশিন দিয়ে ধানকাটার চিন্তা করছি।

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন ধানের সোনালি সমারোহ। যতদূর পর্যন্ত চোখ যায় ততই সবুজে ঢাকা মাঠগুলো অপরূপ সুন্দরে ছেয়ে আছে। ওই সমারোহ দেখে রঙিন হয়ে উঠেছে প্রান্তিক কৃষকের স্বপ্ন। এ যেন সোনালি স্বপ্নের ছড়াছড়ি। প্রতিদিনই পাল্টে যাচ্ছে মাঠে থাকা ধানের চেহারা। নতুন ধানের আগমনী বার্তা কৃষকের পরিবারে এনেছে আনন্দের ঢেউ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা কোনো বিপর্যয় না ঘটলে ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন হাজারো কৃষক।

চর খড়িবাড়ী এলাকার কৃষক গোলাম রব্বানী বলেন, গত বছর বোরো চাষ করে দাম ভালো পেয়েছিলাম। এবার সেই আশায় পাঁচ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করেছি। ইতোমধ্যে ধানে পাক ধরেছে কয়েক দিনের মধ্যেই ধানকাটা শুরু হবে। টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চাষি হুমুজ আলী বলেন, গত বছর ১০ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করে বেশ লাভবান হয়েছিলাম। জমিতে চাষাবাদ খরচ ও সারের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় এবছর মাত্র চার বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছি।

ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেকেন্দার আলী বলেন, এ বছরে ধানের আবহাওয়া ভালো। তাপে ধানের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। ইতোমধ্যে কৃষকরা ধান কাটতে শুরু করেছেন। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন দিয়ে বোরো ধানকাটা শুরু করেছেন কৃষকরা। এতে শ্রমিক সঙ্কট অনেকটা কমে আসবে। এছাড়া যেসব ক্ষেতে ধান নুয়ে পড়েছে সেসব ক্ষেতের ধান দ্রুত কাটার জন্য আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১৩-৫-২০২৩, সময়ঃ সকাল ০৯:৩৫
  • ২২ বার দেখা হয়েছে

নীলফামারীতে বোরোর বাম্পার ফলন

নীলফামারীতে বোরোর বাম্পার ফলন

নীলফামারী সংবাদদাতা ►

এবছর অনুকূল আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় নীলফামারীতে ইরি-বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। এ গোটা জেলায় চলছে এসব ধান কাটা-মাড়াইয়ের পালা। আর এসব ধান শুকিয়ে কেউ কেউ হাটে তুলছেন। ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা সেই টাকায় সংসারের চাহিদা পূরণ করছেন।
 
কৃষি বিভাগের সূত্রমতে, জেলায় চলতি বোরো মৌসুমে আবাদের ল্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৮১ হাজার ৭০০ হেক্টর। তবে ল্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ৮১ হাজার ৭১০ হেক্টর। উৎপাদন ল্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৭৮০ মেট্রিক টন। তবে বেশি জমি আবাদ হওয়ায় ল্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। অর্জিত জমির মধ্যে সদরে ২৩ হাজার ৭০২ হেক্টর, সৈয়দপুরে সাত হাজার ৭০০ হেক্টর, ডোমারে ১৩ হাজার ২১৫ হেক্টর, ডিমলায় ১১ হাজার ২৬০ হেক্টর, জলঢাকায় ১৪ হাজার ৬৬৮ হেক্টর ও কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ১১ হাজার ১৬৫ হেক্টর বোরোর আবাদ হয়েছে।

জেলার ডোমার উপজেলার বোড়াগাড়ির বোরো চাষি নজরুল ইসলাম জানান, এবছর ইরি-বোরোর খুব ভালো ফলন হয়েছে। তবে ধানের শীষ বের হওয়ার সময় একটুখানি বৃষ্টি হলে বোরোর ফলন আরও বাড়তো। তবে যেটুকু হয়েছে তাতে খুশি তিনি। তিনি বলেন, বাজারে শুকনো বোরো প্রতি মণ এক হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এভাবে দাম পেলে আবাদের জমি বাড়াবেন বলে জানান নজরুল ইসলাম। 

সৈয়দপুর-নীলফামারী সড়কের শিমুলতলী এলাকায় দেখা গেল কৃষকের নিয়োজিত শ্রমিকরা দোলা থেকে ধান কেটে পাকা সড়কে আনছেন। তারপর ধান মাড়াই করে রোদে শুকানোর পর কেউ গোলাজাত কেউবা বাজারে বিক্রি করছেন। কৃষক মজেউদ্দিন বলেন, যে কোনো সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ হতে পারে তাই দ্রুত ধান কাটতে হচ্ছে। ফলে একটু মজুরিও বেশি দিতে হচ্ছে। প্রতিবিঘা জমির ধান কাটতে পাঁচ হাজার টাকা শ্রমিককে দিতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।

জেলার সৈয়দপুর উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের কৃষক আবেদ আলী জানান, চলতি মৌসুমে ৬৫ শতক (দুই বিঘা পাঁচ শতাংশ) জমিতে ব্রি ধান-২৮ ও ৫৮ জাতের ধান চাষ করেছেন। বীজতলা, জমি চাষ, রোপণ, স্যার, কীটনাশক, সেচ ও শ্রমিক বাবদ খরচ হয়েছে ২৮ হাজার ৩১২ টাকা। জমির ধান কেটে ঘরে তুলেছেন ৪১ মণ। প্রতিমন এক হাজার ২০০ টাকা হিসাবে মূল্য দাঁড়ায় ৪৯ হাজার ২০০ টাকা। এতে খরচ বাদে লাভ হয়েছে ২১ হাজার টাকা।

কিশোরগঞ্জের বাহাগিলি ইউনিয়নের কৃষক শরাফত আলী জানান, ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। সবাই একসঙ্গে কাটা-মাড়াই শুরু করায় ধানকাটা শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে বাড়তি মজুরিতে ধান কাটতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ধান কাটার কিছু আগে কারেন্ট পোকা ফসলের ব্যাপক তি করছে। নাহলে বোরোর উৎপাদন আরও বাড়তো বলে জানান তিনি। 

সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ধীমান ভূষণ জানান, পুরোদমে ইরি-বোরো ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ায় বাম্পার ফলনে কৃষক বেজায় খুশি। ল্যমাত্রার চেয়ে অর্জন বেড়ে যাওয়ায় আবাদ বেশি হয়েছে। আশা করি, আবহাওয়া ও বাজার দর অনুকূলে থাকলে অন্যান্য বছরের তুলনায় কৃষকরা এবার লাভবান হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. এসএম আবু বকর সাইফুল ইসলাম বলেন, গোটা নীলফামারী জেলায় এবার ল্যমাত্রার চেয়ে ১০ হেক্টর জমি বেশি আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও হয়েছে বাম্পার। জেলায় শ্রমিক ও মেশিনে ধান কাটা-মাড়াই চলছে। আশা করছি, বাজারে ভাল দাম পেলে বিক্রি করে লাভবান হবেন তারা এবং আগামীতে আবাদের জমির পরিধি বাড়বে বলে মনে করেন তিনি। 

নিউজটি শেয়ার করুন


এ জাতীয় আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়