• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ৩-৫-২০২৩, সময়ঃ দুপুর ০২:৫৯
  • ৬২ বার দেখা হয়েছে

নওগাঁয় ধানের নায্যমূল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা 

নওগাঁয় ধানের নায্যমূল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা 

নওগাঁ প্রতিনিধি ►

নওগাঁর রাণীনগরে পুরোদমে চলছে ইরি-বোরো ধান কাটা-মাড়াই। এবার ধানের ভাল ফলন হলেও বাজারে বিক্রি করতে গিয়ে নাায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা। সরকার মোটা এবং চিকন ধানের একদর নির্ধারণ করায় চিকন ধান উৎপাদন করেও ন্যায্য দাম পচ্ছেন না বলে অভিযোগ উপজেলার প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের। ফলে অনেকটাই লোকসানের কবলে পরেছেন। কৃষকরা বলছেন বাজারে যেখানে মোটা ও চিকন চাল আলাদা দরে বিক্রি হচ্ছে সেখানে ধান কেন আলাদা দরে বিক্রি হবে না। তাই সরকারী ভাবে চিকন ধানের আলাদা দর নির্ধারনের দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা।
    
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম বলেন চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় মোট ১৯হাজার ৮০০হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে জিরাশাইল, ব্রি-ধান ৯০, কাটারীভোগসহ চিকন জাতের ধান রোপন করা হয়েছে ১৬হাজার হেক্টর। এছাড়া মাঝারী ধরনের মোটা জাতের ধান রোপন করা হয়েছে ৩হাজার ৮০০হেক্টর জমিতে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ধানের ফলন ভাল হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় শতকরাা ৮০শতাংশ জমির ধান কর্তন শেষ হয়েছে। চলতি মৌসুমে ধানের গড় উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১লক্ষ ৪৮হাজার ৫০০মেট্টিকটন। তবে নির্ধারিত লক্ষমাত্রা অর্জিত হবে বলে আসা করছেন এই কর্মকর্তা। 

উপজেলার সিংগাড়পাড়া গ্রামের কৃষক মোস্তাক আহমেদ, সিম্বা গ্রামের আজিজুল হকসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বোরো ধান আবাদে চলতি মৌসুমে দফায় দফায় জালানি তেল, রাসায়নিক সার, কীটনাশক ও বালাইনাশক ওষুধসহ সকল ধরণের কৃষি উপকরণের দাম এবং শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদন খরচ বেশি হয়েছে। জমি চাষ, ধান রোপন, সার, কিটনাশক প্রয়োগ এবং ধান কাটা-মাড়াই পর্যন্ত বিঘা প্রতি (৩৩ শতাংশ) অঞ্চল ভেদে ২১হাজার থেকে প্রায় ২৫হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়েছে। ধান কেটে প্রতি বিঘা জমিতে ২০-২৩মন পর্যন্ত ধানের ফলন পাওয়া যাচ্ছে। বাজারে বিক্রি করতে গেলে বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী বিঘা প্রতি কোন কোন ক্ষেত্রে দেড়/দুই হাজার টাকা করে লোকসান হচ্ছে। 

কৃষকরা আরো জানান, আমাদের এলাকা চিকন ধান উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। আমরা চিকন ধান উৎপাদন করে মোটা ধানের দরেও বিক্রি করতে পারছি না। সরকার সব জাতের ধানের একদর বেধে দিয়েছেন ১২শ’টাকা মন। কিন্তু চিকন ধানের আলাদা কোন দর নির্ধারণ করেননি। অথচ বাজারে মোটা চাল এবং চিকন চাল অনেক কম-বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। সুতরাং চিকন ধানের দর আলাদা ভাবে নির্ধারনের দাবি জানান কৃষকরা। কিছুদিন আগেও বাজারে ধান যে দামে বিক্রি হয়েছে, মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে প্রতিমন ধান ৪শ’-৫শ’ টাকা কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। বাজারে চালের উচ্চ দাম থাকলেও অসাধু ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার আশায় কৃষকদের ঠকাচ্ছেন বলে দাবি কৃষকদের।  
  
জেলার অন্যতম ধানের মোকাম উপজেলার আবাদপুকুর হাটের ধান-চাল আড়ৎদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দীন হেলু মন্ডল বলেন, গত বুধবার (০২মে) হাটে প্রতিমন জিরাশাইল ধান (রকম ভেদে) ১১শ’ থেকে ১১শ’ ৮০টাকা, ব্রি-ধান ৯০, ১হাজার ৫০০টাকা, কাটারী ধান ১হাজার ৫০টাকা দরে ক্রয় করা হয়েছে। মোকামের নির্দেশনা অনুযায়ী এই দামে ধান ক্রয় করছেন বলে জানা তিনি। তবে আবহাওয়া ভাল থাকলে ধানের দাম রাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন এই ব্যবসায়ী। 
    
উপজেলার ত্রিমোহনী হাটের ধান ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা বলেন গত আমন মৌসুমে জিরাশাইল ও কাটারী ধান সর্বোচ্চ ১৪শ’ টাকা এবং ব্রি-ধান-৯০ দুই হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতিমন ক্রয়/বিক্রয় হয়েছে।
    
উপজেলা ধান-চাল ক্রয় কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন বলেন, উৎপাদিত মোটা এবং চিকন ধানের আলাদা দর নিয়ে ক্রয় কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে এমপি মহোদয় এবং জেলা প্রশাসক স্যারকে কৃষকদের দাবির বিষয়টি জানানো হবে।
 
 

নিউজটি শেয়ার করুন


এ জাতীয় আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়