• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১১-৫-২০২৩, সময়ঃ সকাল ০৯:২৬
  • ৮২ বার দেখা হয়েছে

ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে শনিবার রাতে

ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে শনিবার রাতে

মাধুকর ডেস্ক ►

বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপটি আজ বৃহস্পতিবার দিক পরিবর্তন করে ক্রমান্বয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। 

এদিকে গভীর নিম্নচাপটি সুপার সাইকোনে রূপ নিতে পারে এ আশঙ্কায় সব ধরনর প্রস্তৃুতি নিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। গভীর সমুদ্র থেকে সব নৌযানকে সরিয়ে আনা হয়েছে। আগামী শনিবার রাত থেকে রোববার সকালের মধ্যে এটি আঘাত হানতে পারে কক্সবাজার বিশেষ করে সেন্টমার্টিনের নিচু এলাকায়। 

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে সর্বশেষ আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দণিপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪২০ কিলোমিটার দেিণ, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩৪০ কিলোমিটার দেিণ, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪০০ কিলোমিটার দণি-দণিপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩৬০ কিলোমিটার দণি-দণিপূর্বে অবস্থান করছিল। 

এটি আরও ঘণীভূত হয়ে আজ বৃহস্পতিবার উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে এবং পরবর্তীতে দিক পরিবর্তন করে ক্রমান্বয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। 

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হলো। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য কোনো সতর্কবার্তা নেই। কোনো সংকেতও দেখাতে হবে না। বুধবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তাপপ্রবাহ: রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, দিনাজপুর, নীলফামারী ও চুয়াডাঙ্গা জেলার উপর তীব্র তাপপ্রবাহ এবং দেশের অন্যত্র মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। তাপমাত্রা: সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। শনিবারের পর তাপমাত্রা কমতে পারে। মঙ্গলবারের পর বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি তৈরি হলে বাংলাদেশের দণি-পূর্ব উপকূল এবং মিয়ানমারের উত্তর উপকূল দিয়ে তা অতিক্রম করতে পারে রোববার বিকেল বা সন্ধ্যা নাগাদ। রোববার সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র বাংলাদেশ অংশে আঘাত হানতে পারে। এর অগ্রবর্তী অংশ আরও ১২ ঘণ্টা আগেই স্পর্শ করবে।

এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান বলেছেন, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নিম্নচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে পরিণত হয়েছে গভীর নিম্নচাপে। এটি বুধবার সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড়ে রূপ পেতে পারে বলে আভাস দিচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা। আর তখন এর নাম হবে ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’। তিনি বলেন, গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে এটা মোটামুটি নিশ্চিত বলা যায়। এটি ‘সুপার সাইকোন’ হতে পারে।

বুধবার বিকালে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে ঘূর্ণিঝড়বিষয়ক প্রস্তুতিমূলক সভায় তিনি বলেন, আমরা সবদিক থেকেই প্রস্তুত আছি। প্রতিবারের মতো এবারও ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করতে পারব। সেনা, নৌ, কোস্টগার্ড প্রস্তুত আছে। এটা সুপার সাইকোন হবে, এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এটি ১৩ মে রাত থেকে ১৪ মে সকালের মধ্যে আঘাত হানতে পারে। বাংলাদেশের কক্সবাজারে এটি আঘাত হানতে পারে। বিশেষ করে সেন্টমার্টিনের নিচু এলাকায় আঘাত হানতে পারে। রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি য়তি হওয়ার একটা আশঙ্কা আছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকায় আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থানকারীদের জন্য নগদ ২০ লাখ টাকা, চাল এবং শুকনা খাবার পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি গভীর সমুদ্র থেকে সব নৌযানকে সরিয়ে আনা হয়েছে। 

নিউজটি শেয়ার করুন


এ জাতীয় আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়