
সুলতান মাহমুদ, দিনাজপুর►
দিনাজপুরে উপ-খাদ্য পরিদর্শক পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ও ডিভাইস ব্যবহারকারী গ্রেপ্তার হওয়া সংঘবদ্ধ চক্রের তিন সদস্যকে কারাগারে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন শেষে গ্রেফতারদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেফতাররা হলেন—চিরিরবন্দর উপজেলার পশ্চিম সাইতারা গ্রামের করুণাকান্ত রায়ের ছেলে হরসুন্দর রায় সবুজ (৩৮), একই উপজেলার কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে মো. মামুন (৩৫) এবং বিরল উপজেলার সাঙ্গুল পূর্ব রামচন্দ্রপুর এলাকার আতুতোষ রায়ের ছেলে কৃষ্ণপদ রায় (২৫)।
তাদের মধ্যে হরসুন্দর রায় সবুজ ও মামুন উভয়েই স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মারুফাত হোসেন মারুফ জানান, শনিবার শহরের ফকিরপাড়া এলাকার স্বপ্নচূড়া ছাত্রাবাসে পুলিশের একটি চৌকস দল অভিযান চালিয়ে হরসুন্দর রায় সবুজ ও মামুনকে গ্রেফতার করে। এর আগে দিনাজপুর শহরের কেরি মেমোরিয়াল স্কুল কেন্দ্র থেকে চাকুরী প্রার্থী কৃষ্ণপদ রায়কে ডিভাইসসহ হাতেনাতে আটক করা হয়। তার দেওয়া তথ্যে পরবর্তীতে দুই ডিভাইস চক্রকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়।
অভিযানকালে পুলিশের দল পাঁচটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস, একাধিক মোবাইল সিম, বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড, ও নকল স্ট্যাম্প জব্দ করে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার দুই শিক্ষক স্বীকার করেছেন, তারা নিজেরাও একসময় চাকরি প্রার্থী ছিলেন এবং এই ধরনের ডিভাইস ব্যবহার করেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে চাকরি পান। পরে তারা বড় আকারে এই ডিভাইস চক্রে যুক্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ও প্রযুক্তিগত জালিয়াতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারদের দেওয়া তথ্যে শনিবার দিনগত রাতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আরও কিছু ডিভাইস উদ্ধার করা হয়েছে। এই চক্রের পেছনে কারা রয়েছে, প্রশাসনের কেউ জড়িত কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গোয়েন্দা পুলিশ এ বিষয়ে তৎপর রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মামুন ও সবুজের আর্থিক অবস্থার হঠাৎ পরিবর্তন ঘটে ২০১৮ ও ২০২০ সালে শিক্ষক হওয়ার পর থেকে। অল্প সময়ে তারা বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হন। প্রাথমিক তদন্তে তাদের ও তাদের পরিবারের নামে কোটি টাকার সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গেছে।