সুলতান মাহমুদ, দিনাজপুর►
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বর্তমানে কেন্দ্রটি থেকে কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে না। এতে দেশের উত্তরাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সোমবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক।
তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) থেকে কেন্দ্রটির তৃতীয় ইউনিট বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে রোববার (১৯ অক্টোবর) দিবাগত রাতে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ১ নম্বর ইউনিটের বয়লারের টিউব ফেটে যায়, ফলে ওই ইউনিটটিও বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে ২০২০ সাল থেকে ২ নম্বর ইউনিটটি বন্ধ রয়েছে। ফলে বর্তমানে তিনটি ইউনিটই বন্ধ থাকায় পুরোপুরি বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে পড়েছে।
প্রধান প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক আরও জানান, ইউনিটগুলো চালুর বিষয়ে প্রস্তুতকারক চীনা কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা চলছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ১ নম্বর ইউনিটটি চালু করা সম্ভব হবে। তবে ৩ নম্বর ইউনিটে এখনো বেশ কিছু জটিল সমস্যা রয়েছে, যা সমাধানে আরও প্রায় তিন মাস সময় লাগতে পারে।
তিনি আরও বলেন, সর্বশেষ বন্ধ হওয়ার আগে ১ নম্বর ইউনিট থেকে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছিল। বর্তমানে কেন্দ্রটি থেকে কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না।
এ বিষয়ে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই পিএলসি (নেসকো) রংপুর অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী (অপারেশন) মো. আশরাফুল ইসলাম মণ্ডল বলেন, “বড়পুকুরিয়া থেকে আমরা জাতীয় গ্রিডের মাধ্যমে যে বিদ্যুৎ পাচ্ছিলাম, তা এখন ঘাটতি পড়বে। ফলে রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহে চাপ পড়বে। অন্য অঞ্চল থেকে বিদ্যুৎ আনতে হলে ভোল্টেজের মান কমে যেতে পারে, অর্থাৎ লো-ভোল্টেজের সমস্যা দেখা দিতে পারে।”
উল্লেখ্য, বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৫২৫ মেগাওয়াট। এর মধ্যে ১ ও ২ নম্বর ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা ১২৫ মেগাওয়াট করে ২৫০ মেগাওয়াট, এবং ৩ নম্বর ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা ২৭৫ মেগাওয়াট। বর্তমানে তিনটি ইউনিটই বন্ধ থাকায় কেন্দ্রটির উৎপাদন সম্পূর্ণভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে।