Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • ১২ ঘন্টা আগে
  • ৪৫ বার দেখা হয়েছে

স্কুল ভবনের ১৮ মাসের কাজ শেষ হয়নি ৫ বছরেও

স্কুল ভবনের ১৮ মাসের কাজ শেষ হয়নি ৫ বছরেও

ভবতোষ রায় মনা ও আবু সায়েম►

বিদ্যালয় ভবন জরাজীর্ণ হওয়ায় নতুন চারতলা ভবনের জন্য বরাদ্দ পাওয়া যায়। কথা ছিল ১৮ মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে নতুন ভবনের। কিন্তু পাঁচ বছর পরও ওই নতুন ভবনে ক্লাস করতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। এতে পাঠদানসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে ভোগান্তিতে পড়েছেন গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী বন্দর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, পুরোনো একতলা ভবনে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। একতলা পাকা ভবনে চারটি কক্ষ রয়েছে। একটি কক্ষে প্রধান শিক্ষক এবং একটিতে অন্যান্য শিক্ষকদের বসার জন্য কয়েকটি চেয়ার ও টেবিল রয়েছে। অপর তিনটি কক্ষে ক্লাস চলছে। একমাত্র ওয়াশরুম ব্যবহার করতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। চারতলা ভবনের অবকাঠামো হলেও বাকী কোনো কাজ হয়নি। ভবনের কক্ষে পড়ে আছে চেয়ার-টেবিলসহ অন্যান্য সামগ্রী। 

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৭ সালে যমুনা নদীর পাড়ে বিদ্যালয়টি একটি ছোট টিনশেড ঘরে প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৮৫ সালে এমপিওভুক্ত হয় বিদ্যালয়টি। পরে ১৯৯৪ সালে একটি একতলা পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। পুরোনো ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়লে গাইবান্ধা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর একটি নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। চারতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য ২০২০-২১ অর্থবছরে দরপত্র আহ্বান করা হয়। বরাদ্দের পরিমাণ ২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। কাজ পায় পাবনার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শাওন অ্যান্ড শায়লা ট্রেডার্স। পরে ২০২০ সালের ৭ জানুয়ারি চারতলা একাডেমিক ভবনটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়। 

দরপত্র অনুযায়ী, ১৮ মাসের মধ্যেই ভবনটির কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও ঠিকাদার বারবার কাজের সময় বাড়ানোর আবেদন করে নির্মাণকাজ নিয়ে কালক্ষেপণ করছেন। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাজিয়া ফেরদৌসি রেমি, অপূর্ণা আক্তার ও নীলা আক্তার বুশরা বলেন, নবম ও দশম শ্রেণির মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষার ক্লাস করার সময় অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন হয়। তখন রুম না থাকায় বাধ্য হয়ে আমাদের স্কুল মাঠেও ক্লাস করতে হয়। নতুন ভবনের কাজ দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা দাবি জানাচ্ছি। বিদ্যালয়ের শিক্ষক লায়লা আরজুমান বানু, হায়দার আলী ও পলি রানী দেব বলেন, আমাদের একটিমাত্র টয়লেটে শিক্ষক ও ছাত্রীদের ব্যবহার করতে হয়। দীর্ঘদিন থেকে আমরা এমন ভোগান্তি পোহাচ্ছি। দ্রুত এর সমাধান চাই আমরা।

ভরতখালী বন্দর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান সরকার বলেন, বারবার কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারকে কাজ শেষ করার কথা বলা হলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। আমাদের তিন শতাধিক ছাত্রী ও ২০ শিক্ষক-কর্মচারী ভোগান্তিতে রয়েছি। এমন অবস্থার জন্য অভিভাবকরা এ স্কুলে মেয়েদের ভর্তি করাতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। আমরা পিছিয়ে পড়ছি।

অভিযোগের ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শাওন অ্যান্ড শায়লা ট্রেডার্সের প্রতিনিধি মুজীবুর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. বেলাল আহমেদ বলেন, ‘করোনার প্রভাব এবং জিনিসপত্রের দামের ঊর্ধ্বগতির জন্য ঠিকাদার কাজ করতে পারে নাই। বর্তমানে কাজ বন্ধ আছে। কাজ শুরুর জন্য ঠিকাদারকে মৌখিকভাবে তাগাদা দিচ্ছি। তাদেরকে এ মাসের মধ্যেই কাজ শুরু করা কথা বলা হয়েছে। যদি তারা কাজ শুরু না করে তবে বিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আশাকরি আগামী জুনের মধ্যেই আমরা ভবনের কাজ শেষ করতে পারব।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad