আবু সায়েম►
গাইবান্ধার হাট-বাজারে হঠাৎ করেই পাওয়া যাচ্ছে না বোতলজাত সয়াবিন তেল। সেইসঙ্গে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে খোলা সয়াবিন ও পাম তেল। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডিলাররা সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন বলে এমন সংকট। আর ডিলারদের ভাষ্য, কোম্পানি থেকে তেল না পাওয়ার কারণে সরবরাহ বন্ধ হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে জেলা শহরের পুরাতন বাজার, হকার্স মার্কেট, নতুন বাজার ও ডিবি রোডের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া না গেলেও বাজার ঘুরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খোলা সয়াবিন তেল পাইকারি পর্যায়ে লিটারপ্রতি ১৬০-১৬২ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে তা ১৬৮-১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে পাম তেল পাইকারিতে ১৫০-১৫৬ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে লিটারপ্রতি ১৫৮-১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত এক সপ্তাহ আগেও লিটারপ্রতি অন্তত ৫-১২ টাকা কম ছিল।
সদর উপজেলার খোলাহাটি গ্রাম থেকে জেলা শহরের পুরাতন বাজারে এসেছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী হাবিজার রহমান। সবজি, মাছসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার পর এক দোকান থেকে অন্য দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেল খুঁজছিলেন তিনি। এসময় তিনি বলেন, কোথাও বোতলজাত সয়াবিন তেল পাচ্ছি না। এখানে দু’একটা দোকানে দেখলাম দু’একটা করে আছে। কিন্তু বোতলের গায়ের দামের চেয়ে বেশি দাম চাচ্ছে। ঠিকমতো বাজার মনিটরিং করলে এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। শহরের হকার্স মার্কেটে গৃহিণী সিমন্তিনী রানী বলেন, কোথাও বোতলজাত সয়াবিন পাচ্ছি না। বাধ্য হয়ে খোলা সয়াবিন তেল কিনতে হচ্ছে। কিন্তু বোতলজাত সয়াবিন তেলের চেয়েও খোলা তেল বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। শুনতেছি কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বেশি লাভের আশায় বোতলজাত সয়াবিন কেটে খোলা দরে বিক্রি করছে। শহরের নতুন বাজারে রিকাশাচালক আলম মিয়া বলেন, ‘অন্য জিনিসের যে দাম, তার মইধ্যে ত্যালের দামও বাড়লো। হামরা গরীব মানুষ কেমন করি চলমো।’
পুরাতন বাজারের ভাই-ভাই দোকানের স্বত্বাধিকারী জুলহাস হোসেন বলেন, গত এক মাস ধরে ডিলারদের কাছ থেকে নিয়মিত সাপ্লাই পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে কয়েকদিন থেকে সরবারহ একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। জেলা শহরের বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সবুর অ্যান্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী আব্দুস সবুর সরকার বলেন, গত এক মাস ধরে কোম্পানি থেকে বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহ পাচ্ছি না। সবশেষ গত সপ্তাহে সরবরাহ পেয়েছি। বাজারে চাহিদা থাকায় তা মুহুর্তেই শেষ হয়ে গেছে। তাই বাজারে এমন সংকট।
জেলার বিশেষ টাস্কফোর্স কমিটির আহ্বায়ক ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জহির ইমাম বলেন, জেলার হাট-বাজারগুলোতে আমাদের নিয়মিত তদারকি অব্যাহত রয়েছে। সয়াবিনের বোতল কেটে খোলাদরে বিক্রির অভিযোগ প্রাথমিকভাবে আমরাও পেয়েছি। কিন্তু সুনির্দিষ্ট প্রমাণ কিংবা এর সত্যতা আমরা পাইনি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঠিক কী কারণে বাজারে সয়াবিন তেলের এমন সংকট তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।