নিহত শফিকুল ইসলাম ও সোহরাব হোসেন আপেল।
নিজস্ব প্রতিবেদক►
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী থেকে যৌথ বাহিনী তুলে নিয়ে যাওয়ার পর দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে তুলে নেয়ার পর মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তাদের মৃত্যু হয়।
মৃত ব্যক্তিরা হলেন- সাঘাটা উপজেলার সাঘাটা ইউনিয়নের গোবিন্দি গ্রামের মৃত রোস্তম আলীর ছেলে সোহরাব হোসেন আপেল (৩৫) ও মৃত মালেক উদ্দিনের ছেলে শফিকুল ইসলাম (৪৫)।
এর মধ্যে সোহরাব হোসেন গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল এবং শফিকুল ইসলাম বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, সোমবার গভীর রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৬০ থেকে ৭০ জনের একটি দল উপজেলার সাঘাটা ইউনিয়নের গোবিন্দী গ্রামের মৃত আবদুল গনি সরকারের ছেলে সাঘাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন সুইটের বাড়িতে অস্ত্র আছে বলে অভিযান চালায় এবং মোশাররফ হোসেন সুইটসহ পাঁচজনকে তুলে নিয়ে যায়।
অপর চারজন হচ্ছেন, মোশাররফ হোসেন সুইটের ভাতিজা গোবিন্দী গ্রামের মৃত রোস্তম আলীর ছেলে সোহরাব হোসেন আপেল (৩৫), রিয়াজুল ইসলাম রকি ও মৃত মালেক উদ্দিনের ছেলে শফিকুল ইসলাম (৪৫), একই ইউনিয়নের বাশহাটা গ্রামের মৃত সেফায়েত আলীর ছেলে শাহাদত হোসেন পলাশ (২৮) ও একই ইউনিয়নের উত্তর সাতালিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে রিয়াজুল ইসলাম রকি (২৮)।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে পুলিশ পাহাড়ায় তিন জনকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ও দুই জনকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে সোহরাব হোসেন আপেল ও বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শফিকুল ইসলাম মারা যান।
আহতদের মধ্যে রিয়াজুল ইসলাম রকি বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং মোশারফ হোসেন সুইট ও শাহাদত হোসেন গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
জানতে চাইলে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মোহাম্মদ আসিফ মুঠোফোনে বলেন, মঙ্গলবার সকালে পুলিশ সোহরাবকে মারাত্মক আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। তার শরীরে মারধরের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর পৌনে একটার দিকে তিনি মারা যান। তিনি আরও বলেন, লাশের ময়নাতদন্ত হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ছাড়া মৃত্যুর কারণ বলা যাচ্ছে না।
সাঘাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন সুইট চিকিৎসাধীন অবস্থায় বলেন, ‘কী কারণে তারা আমার বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেছে, তা আমার জানা নেই। আমার নামে কোনো ওয়ারেন্টও নেই। সারারাত তারা আমাদের মারপিট করেছে। মারপিটের কারণে আমার ভাতিজাসহ দু’জন মারা গেছেন।’
এসব বিষয়ে সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তিনি ফোন ধরেননি।
গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) ইবনে মিজান মুঠোফোনে জানান, যৌথবাহিনীর অভিযানের সময় অসুস্থজনিত কারণে দুইজন মারা যান। কত জনকে আটক এ বিষয়ে তিনি কোনো সঠিক হিসেব জানাতে পারেননি।