নিজস্ব প্রতিবেদক►
সারাদেশে ছাত্র-জনতা হত্যা, হামলা-মামলা, গ্রেপ্তার, হয়রানি ও নিপীড়নের প্রতিবাদে গাইবান্ধায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও পেশাজীবী সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নিপীড়ন বিরোধী নাগরিক সমাজ, গাইবান্ধার ব্যানারে আজ (শনিবার, ৩ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে জেলা শহরের গাইবান্ধা নাট্য ও সাংস্কতিক সংস্থার (গানাসাস) সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে ছাত্র-জনতা হত্যার দায় নিয়ে সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি জানান বক্তারা। এ কর্মসূচিতে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করেন।
সমাবেশে অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য দেন শিক্ষাবিদ মাজহারউল মান্নান, প্রভাষক মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল ও আব্দুর রাজ্জাক রেজা, আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম বাবু, নওশাদুজ্জামান, মুরাদজামান রব্বানী, শাহনেওয়াজ, মোহাম্মদ আলী প্রামাণিক, ফারুক কবির, নাহিদ মন্ডল, পার্থ বর্মন, জাকিউল স্বাধীন, আহসান হাবীব আকাশ, অভিভাবক গোলাম রব্বানী মুসা, বিজলী বেগম ও গোলাম রব্বানী, শিক্ষার্থী মৃত্তিকা, আফজাল সিরাজ, ফারিয়া ফাতেমা স্বস্তি ও শাকিল আহম্মেদ প্রমুখ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক রোকেয়া খাতুন।
সমাবেশে শিক্ষাবিদ মাজহারউল মান্নান বলেন, গত ১০০ বছরে ভারতীয় উপমহাদেশে যে আন্দোলন হয়েছে, ‘একসঙ্গে এতগুলো প্রাণ ঝরে যাবার নজির নেই। লজ্জায় আর ঘৃণায় কোনো কিছুই বলতে পারি না। এই আন্দোলনের প্রতি কটাক্ষ, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার মধ্য দিয়ে এই আন্দোলন এতটুকু পর্যন্ত গড়িয়েছে।’ শহীদদের রক্তের ওপর দিয়ে তাদের লাশের ওপর দিয়ে আমরা কিন্তু হেঁটে যেতে পারি না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সময় শেষ; এখন দাবি একটাই। ছাত্র-জনতা হত্যার দায় নিয়ে অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ।’
ছাত্র-জনতার ওপর যে নির্বিচারে হামলা হয়েছে তার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ এবং সুষ্ঠু বিচার চেয়ে সংহতি সমাবেশে বক্তারা বলেন, ছাত্ররা যে ৯ দফা দাবি দিয়েছে তা যৌক্তিক, আমরা তার সঙ্গে একমত। আমরা চাই সুষ্ঠু নিরপেক্ষ বিচার হোক। আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে এর সঠিক বিচার হোক।
যেসব মন্ত্রী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে গুন্ডাবাহিনী লেলিয়ে দিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়ে আইনজীবীরা বলেন, ছাত্র-জনতার ওপর আমরা আর গুলি দেখতে চাই না। রাতের বেলায় গণ গ্রেফতার ও তল্লাশির নামে হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
আমরা রাস্তায় থাকতে চাই না, আমরা ক্লাসে ফিরতে চাই জানিয়ে সংহতি সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি দ্রুত মেনে নিন। তাদের ওপর আর গুলি চালাবেন না। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করবেন না।
সংহতি সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবারও গানাসাসের সামনে মিলিত হয়ে কর্মসূচি শেষ হয়।