গোবিন্দগঞ্জ প্রতিনিধি ►
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে আগাম লাগানো আলু উঠানো শুরু হয়েছে। এবছর ঘন কুয়াশা দেখা দিলেও আগাম আলুর তেমন কোন ক্ষতি হয়নি তাই ফলন ভালো হয়েছে, সেই সাথে বাজারদর ভালো পাওয়ায় আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।
উপজেলার রাজাহার, শাখাহার, সাপমারা, কাটাবাড়ী, গুমানীগঞ্জ, দরবস্ত, তালুককানুপুর, রাখাল বুরুজ, কামারদহ, কোচাশহর, শিবপুর, মহিমাগঞ্জ, হরিারামপুর সহ ১৭ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় আমন ধান কাটার পর রবি মৌসুমে জমি ফেলে না রেখে স্বল্প মেয়াদি ফসল হিসেবে কৃষকরা আগাম আলুর চাষ করেন। এ বছর ঘন কুয়াশা থাকলেও আগাম আলুতে রোগ বালাইয়ে তেমন কোন ক্ষতি করতে পারেনি। প্রথম দফায় আগাম লাগানো আলুর ফলনো ভালো হয়েছে, সেই সাথে বাজারদর ভালো পাওয়ায় খুশি কৃষক।
গ্যানোলা, খুপরি সেন্দুররী, রার্মা, লাল পাকরি, সূর্যমুুখী, ম্যাজিক সহ নানা জাতের আগাম আলু আবাদ করেছেন কৃষকরা। ক্ষেত জুড়ে আগাম আলু তোলায় ব্যস্ত সময় পর করছেন চাষীরা। বাজারে আলুর চাহিদা থাকায় উৎপাদিত আলু জমি থেকেই পাইকারের কাছে বিক্রি করছেন তারা।
রাজাহার ইউনিয়নের বানেশ্বর গ্রামের আব্দুস সাত্তার বলেন ৫/৬ বছর যাবত তিনি আগাম আলু চাষ করে আসছেন। এ বছর ৫বিঘা জমিতে আগাম আলু লাগিয়েছেন। আলুর ফলন বেশ ভাল হয়েছে। প্রতি শতকে ৫৫ থেকে ৬০ কেজি পর্যন্ত ফলন পাওয়া যাচ্ছে। সে হিসেবে বিঘা প্রতি প্রায় ৪৬ থেকে ৫০ মণ আলু পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ আলু ৫শ”৬০ টাকা থেকে ৯শ টাকায় বিক্রি করে ব্যয়ের সমপরিমান লাভ পাওযা যাচ্ছে।
একই ইউনিয়নের পানিতলা এলাকার আলু চাষী শাহজাহাদা বলেন, এবার আমি ১০ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের আলু চাষ করেছি অন্য বছরের তুলনায় ফলনও বেশ ভাল। দেশের বিভিন্ন এলাকায় চাহিদা থাকায় বাজারদর ভাল। সবচেয়ে সুবিধা হলো জমি থেকেই পাইকারের কাছে আলু বিক্রি করতে পারছি এ জন্য পরিবহন বেঁচে যাওয়া অধিক ভালবান হওয়া যাচ্ছে।
ঢাকা থেকে আসা পাইকার আব্দুর রহমান বলেন, এই এলাকায় এত আলু চাষ হয় জানতাম না।তাছাড়া আলু মান অত্যন্ত ভাল। বাজারদর ভাল তাই এতদুর থেকে পরিবহন করেও ভাল লাভের আশা করছিন তিনি।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকতা সৈয়দ রেজা ই মাহমুদ বলেন, উপজেলা আগম আলু চাষে কৃষক লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। শীত ও ঘন কুয়াশায় আলুর আবাদে কৃষকরা যাতে ক্ষতির শিকার না হয় তার জন্য মাঠ পর্যায়ে তিনি নিজে এবং উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে দিচ্ছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সুত্রে জানা গেছে চলতি মৌসুমে জেলায় ১০ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করলেও এ পর্যন্ত ৯ হাজার ৮৯ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। আর উৎপাদন হবে ২ লক্ষ ৪৯ হাজার ৩শ’৪০ মেট্রিক টন।