দিনাজপুর প্রতিনিধি ►
দিনাজপুর পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কয়লা উত্তোলনের কারণে কয়েকটি গ্রামের বাসাবাড়ি কম্পনে ফেটে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতি সাধন হওয়ায় গ্রাম বাসীর ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেছে গ্রামবাসী ।
সোমবার ( ২৪ জুলাই ) সকাল ১১টায় পার্বতীপুর উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নের পাতরাপাড়া মোড়ে ভূমি ও বসতবাড়ি রক্ষা কমিটির সভাপতি মোঃ মতিয়ার রহমানের নেতৃত্বে কয়েকটি গ্রামের গ্রামবাসী মিলে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেন ।
মানববন্ধনে ৬ দফা দাবি বাস্তবায়নে উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন, ভূমি ও বসতবাড়ি রক্ষা কমিটির সভাপতি মোঃ মতিয়ার রহমান। তিনি বলেন, কয়লাখনির অধিগ্রহণকৃত এলাকার বাহিরে পাঁচঘরিয়া ও পাতিগ্রামের ঘর বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। প্রায় সব সময় বড় ভূ-গর্ভের নিচে মাইন বিস্ফোরনে বাড়িঘর ফেটে যাচ্ছে। এসব বাড়িঘর ভেঙ্গে যেকোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। পাচঘরিয়া, পাতিগ্রামের বাড়িঘরে কম্পন জনিত ফাটলের বিষয়ে গত ৭ মে, -২০২৩ ইং তারিখ হতে ৯ জুলাই ২০২৩ ইং তারিখ পর্যন্ত বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কর্তৃপক্ষকে পত্রের মাধ্যমে অবগত করানো হয়। কিন্তু কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।
ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসীর সাথে সমঝোতা চুক্তি মোতাবেক এলাকার বেকারদের চাকুরী দেওয়ার কথা থাকলেও চাকুরী দেওয়া হয়নি। খনি কর্তৃপক্ষ সমঝোতা চুক্তি ভঙ্গ করে বহিরাগতদের চাকুরী প্রদান করেছেন। তা বন্ধ করতে হবে। পূর্বের অধিগ্রহণকৃত মসজিদ ও কবরস্থানগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য খনি কর্তৃপক্ষকে দৃষ্টি দিতে হবে। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার বাহিরের গ্রামগুলিতে তীব্র পানির সংকট দেখা দিয়েছে। সেখানে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে হবে। বর্ষাকালে রাস্তাগুলি দিয়ে সাধারণ জনগণ স্কুল কলেজ মাদ্রাসার ছাত্র ছাত্রীরা ফুলবাড়ী শহর সহ অন্যান্য জায়গায় যেতে পারেনা। তা পূন: নির্মাণ করতে হবে। খনির কারণে পরিবেশ, রাস্তা, সামাজিক প্রতিধ্বনিগুলোর সঠিক রক্ষনাবেক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত পরিমান সিএসআর ফান্ড থাকলেও তা ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় ব্যয় করা হচ্ছে না।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কর্মকর্তা কর্মচারীরা লাভবান হলেও এলাকা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আমরা অতি দ্রæত এই মানববন্ধনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি যাতে করে আমাদের এই ৬ দফা দাবি মেনে নিয়ে দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তা না হলে আগামীতে দূর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে রাস্তা ঘাট, রেল সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া হবে।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ সাইফুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি জানান, কমিটি করা হয়েছে, কমিটি পর্যবেক্ষণ করে রিপোর্ট প্রদান করলে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ আলী মন্ডল সহ ভূমি বসতবাড়ি রক্ষা কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। মানববন্ধন শেষে পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করেন। মানববন্ধনে কয়েকটি গ্রামের প্রায় ২ হাজার নারী-পুরুষ, স্কুল কলেজ মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রী অংশ নেন।