• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১০-৪-২০২৩, সময়ঃ বিকাল ০৫:২২
  • ১৪২ বার দেখা হয়েছে

ব্রীজ নির্মাণে দূর্ভোগ কাটবে কয়েক হাজার মানুষের

ব্রীজ নির্মাণে দূর্ভোগ কাটবে কয়েক হাজার মানুষের

এস এম রাফি চিলমারী (কুড়িগ্রাম) ►

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে একযুগেরও বেশি সময় আগে নির্মাণ হওয়া সরু ব্রীজটি স্থানীয়দের জন্য আর্শিবাদ হলেও কয়েকবছর থেকে মরণ ফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলাচলের অনুপযোগী ব্রীজটিতে প্রায়ই দূর্ঘটনার খবর পাওয়া যেতো। বর্তমানে ওই অঞ্চলের মানুষের দুঃখ-দূর্দশা লাঘব ও নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচলের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের আওতায় ৬৮ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি ব্রীজ নির্মাণ হচ্ছে। এতে কয়েক গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার মানুষের দুঃখ ঘুচবে। উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের পাত্রখাতা খরখরিয়া স্লুইস গেট হতে মদিরা পাড়া মন্ডলেরহাট সড়কে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হচ্ছে এই ব্রীজটি। 

স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘদিনের চাওয়া এ অঞ্চলের মানুষের এই ব্রীজটি। বর্তমানে যে ব্রীজ রয়েছে সেটি সরু হওয়ার কারণে বড় ধরণের গাড়ি চলাচল করতে পারে না। জরুরী প্রয়োজনে দমকল বাহিনী বা এম্বুলেন্স এ পথে আসতে পারে না। এতে এ এলাকার মানুষ জরুরী সেবা থেকে বঞ্চিত থাকতে হত। তবে বর্তমানে যে ব্রীজটি নির্মাণ করা হচ্ছে এতে করে সবধরণের সুযোগ সুবিধা পাবেন স্থানীয়রা। 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী দপ্তর (এলজিইডি) জানায়, চলতি বছরে ব্রীজটির কাজ শুরু হয়েছে। ৬৮ মিটার দৈর্ঘ্যরে ব্রীজটিতে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৪০লাখ ৩১ হাজার টাকা। কাজটি যৌথভাবে করছেন কুড়িগ্রামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স বসুন্ধরা এন্ড মেসার্স খাইরুল এন্টারপ্রাইজ। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এ বছরের জুনেই ব্রীজটির কাজ শেষ হবে। 

দীর্ঘদিনের আক্ষেপ ঘুচবে এ অঞ্চলের মানুষের বলে জানান পাত্রখাতা রিয়াজুল জান্নাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. আব্দুল আজিজ। তিনি বলেন, এলাকা মানুষ যাতায়াতের সমস্যা নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে চলাচল করে আসছেন। এই ব্রীজ টি দিয়ে প্রতিদিন কয়েকশ শিক্ষার্থী চলাচল করে। প্রায়ই শোনা যেতো কেনো না কোন দূর্ঘটনার কথা। এবার নতুন এই ব্রীজ হলে যাতায়াতের সমস্যা থাকবে না। এতে সদর এলাকার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রমনা মডেল ইউনিয়নের পাত্রখাতার ওই অঞ্চলটিতে ৫টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাদ্রাসা ও একটি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। ব্রীজটি ব্যবহার করে ওই পথে প্রতিদিন পাত্রখাতা, ডাঙারচর, কারেন্ট বাজার, মাদারীপাড়া সহ বেশ কিছু এলাকার মানুষ চলাচল করে। তাদের সমস্যা প্রয়োজনীয় কোন কিছু ট্রাক কিংবা ট্রলিতে করে নেয়া যায় না সরু ব্রীজটির কারণে। প্রায় ব্রীজের পাশে প্রয়োজনীয় মালামাল রেখে পরবর্তীতে ঘোড়ার গাড়ি কিংবা ছোট ভ্যানে বা রিকশায় করে ব্রীজটি পাড় করতে হয়। এত করে যাতায়াত ভাড়া দ্বিগুন বেড়ে যায়।

পাত্রখাতা এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আইনুল মোল্লা বলেন, প্রায় ১৪ /১৫ বছর আগে এখানকার মানুষের চলাচলের জন্য সরু ব্রীজটি নির্মান হয়। কিন্তু তখন থেকে চলাচল করা গেলেও ভারী বা বড় ধরণের গাড়ি এ ব্রীজ দিয়ে পাড় হতে পারে না। আর পাত্রখাতা এলাকার বেশির ভাগ মানুষই কৃষির সাথে জড়িত। চিলমারীর মানুষের শাক সব্জির বড় একটি যোগান দেন এ এলাকার মানুষ। ফলে সরু ব্রীজটি দিয়ে খুব সহজেই পণ্য বাজারে নেয়া যায় না। ছোট অটো বা ভ্যানে করে মালামাল বা শাক সব্জি সহ সব কিছু বহন করতে হয়। এতে দেখা যায় তাদের পরিবহণ ব্যয়ও বেড়ে যায়। তবে বর্তমান সরকার এই ব্রীজটি করে দেয়াতে আমরা খুবই খুশি এবং আনন্দিত। 

নাসির উদ্দিন নামে অপর এক স্থানীয় ব্যক্তি বলেন, ভঙ্গুর অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা চিকন ব্রীজটির কারণে আমরা দ্রুত কোনো সেবা পাইনা। দেখা যায় যদি এই এলাকায় কোথাও আগুন লাগে তাহলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যাওয়ার মতো রাস্তা নেই শুধুমাত্র ব্রীজটি চিকন হওয়ার কারণে। এখন নতুন যে ব্রীজ হচ্ছে তাতে আর এমন দূর্ভোগে পড়তে হবে না। 

উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা মো. ফিরোজুর রহমান বলেন, ব্রীজের কাজটি দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করছি এবং শতভাগ সঠিক ভাবে কাজ করে নেয়া হচ্ছে। অফিস থেকে প্রতিনিয়ত তদারকি করা হচ্ছে কাজটি। 

নিউজটি শেয়ার করুন


এ জাতীয় আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়