• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ৫-৬-২০২৩, সময়ঃ বিকাল ০৫:১০
  • ৬৪ বার দেখা হয়েছে

ফুলবাড়ীতে মাদ্রাসা শিক্ষককে মারপিটকারিদের শাস্তির দাবিতে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মচারিদের মানববন্ধন

ফুলবাড়ীতে মাদ্রাসা শিক্ষককে মারপিটকারিদের শাস্তির দাবিতে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মচারিদের মানববন্ধন

ধীমান চন্দ্র সাহা, ফুলবাড়ী ►

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার খাজাপুর একরামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক রশিদুল ইসলামকে শারীরিক নির্যাতনকারিদের গ্রেপ্তারসহ শাস্তির দাবিতে ক্লাস বর্জন করে মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন মাদ্রাসার শিক্ষক, কর্মচারীসহ শিক্ষার্থীরা। 

আজ সোমবার (৫ জুন) সকাল সাড়ে ১০ টায় মাদ্রাসার সম্মুখ সড়কে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে দাবির সমর্থনে বক্তব্য রাখেন মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক শাহানাজ পারভীন, সহকারী অধ্যাপক সাদরুল আমিন, সহকারী শিক্ষক মাসুম পারভেজ, শিক্ষার্থী ইতি মনি, নাদিয়া আক্তার, মিফতাহুল জান্নাত প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, দামোদরপুর গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে রমজান আলী ও মৃত ওসিয়ার রহমানের ছেলে আল আমিনসহ এলাকার কয়েকজন বখাটে রবিবার মাদ্রাসার শিক্ষক কমন কক্ষ থেকে সহকারী অধ্যাপক রশিদুল ইসলামকে টেনে হেঁচড়ে বের করে মাঠে নিয়ে বেদম পারপিট করে। এ সময় অন্যান্য শিক্ষকরা রশিদুল ইসলামকে রক্ষার জন্য এগিয়ে গেলে তাদেরকেও মারপিট করে ওই বখাটেরা। এজন্য হামলাকারি রমজান আলী ও আল আমিনসহ জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি নিশ্চিত করতে শিক্ষক-কর্মচারিসহ শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছেন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত মাদ্রাসার ক্লাস বর্জনসহ অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শাখার শিক্ষকরা।

এদিকে মানবন্ধন কর্মসূচি পালনসহ ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের জন্য অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষা দিতে আসা ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে মাদ্রাসায় এসে বিপাকে পড়েন। আন্দোলনের জন্য পরীক্ষা না দিয়েই বাড়ী ফিরতে হয়েছে ওইসব শিক্ষার্থীকে। 

পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থী মুনতাহা আনিকা সুফাইয়া, আব্দুর রহমান ও বিলকিস আরা বলেন, আমরা পরীক্ষা দিতে এসেছিলাম। কিন্তু এসে দেখি একজন শিক্ষককে বখাটেরা মারপিট করায় মাদ্রাসার স্যারেরা মানববন্ধন করছেন। স্যারেরা বলেছেন তারা ক্লাস ও পরীক্ষা নেবেন না। এজন্য বাড়ী ফিরে যেতে হচ্ছে।

মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মাসুম পারভেজ ও সহকারী অধ্যাপক সাদরুল আমিন বলেন, হামলাকারীদের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা শিক্ষকরা পাঠদান ও অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করেছি। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
অভিযুক্ত যুবক রমজান আলী বলেন, বিষয়টি সমাধানের জন্য মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টন দুইপক্ষকে নিয়ে বসেছেন। বিষয়টি সমঝোতার মাধ্যমে নিষ্পত্তি হবে। 

মাদ্রাসা সুপার হাফেজ মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ইউসুফা ও তার বাবা ইদ্রিস আলী গত ২৮ মে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। তাতে মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক রশিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওই শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগ রয়েছে। পরে ১ জুন মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভায় কোনোপ্রকার দোষ না থাকা সত্ত্বেও ওই শিক্ষক সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এরপর আমি মাদ্রাসার কাজে ঢাকায় থাকা কালীন সময়ে মোবাইল ফোনে জানতে পারি রবিবার (৪ জুন) ওই শিক্ষার্থীর ভাইসহ স্থানীয় যুবকরা শিক্ষকদের ওপর হামলা করেছে। বর্তমানে মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক রশিদুল ইসলাম দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রয়েছেন। ঘটনার পর জড়িদের শাস্তির দাবিতে পাঠদানসহ পরীক্ষা বর্জন করে আমার বরাবর দরখাস্ত জমা দিয়েছেন সকল শিক্ষক। বিষয়টি সমাধানের জন্য মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাথে আলোচনা চলছে।
মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টন বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষক ও অভিযুক্ত যুবকদের পরিবারের সাথে সমঝোতার জন্য আলোচনা চলছে।
 

নিউজটি শেয়ার করুন


এ জাতীয় আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়