• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ৩-১২-২০২২, সময়ঃ সকাল ০৯:১৯
  • ২৫৫ বার দেখা হয়েছে

তিনটি হিমালিয়ান প্রজাতির শকুন উদ্ধার

তিনটি হিমালিয়ান প্রজাতির শকুন উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক ►

গত কয়েকদিনে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কঞ্চিবাড়ি বাজার ও চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদের আশে পাশের এলাকায়  শকুনের একটি বড় ঝাকের আনাগোনা দেখে স্থানীয় এলাকাবাসী। এর মধ্যে কয়েকটি শকুন কান্ত হয়ে খাবারের খোঁজে ও বিশ্রামের জন্য গাছের মগ ডালে বসে, কয়েকটি মাটিতে নেমে আসে। 

শকুনের ১২ ফিটের ডানায় ভর করে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে গিয়ে বিশাল আকৃতির ÒHimalayan griffon vulture” বা ‘হিমালীয়ান গৃধিনী’ শকুন জাতের পাখি গুলো মানুষের রোষানলে পরে। দীর্ঘ হিমালয়ের পাদদেশ থেকে আগত এসব শকুন কান্ত হয়ে গ্রামের বিভিন্ন স্থানে পড়লে এর মধ্যে কয়েকটি শকুনকে মানুষ ধরে ফেলে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও বিশ্বস্ত সূত্রের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরিবেশবাদী সংগঠন ‘টিম ফর এনার্জি এন্ড এনভায়রণমেন্টাল রিসার্চ-তীর’ গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখার নজরে আসে বিষয়টি। 

অতপর ‘তীর গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখা’র সভাপতি জাহিদ রায়হান ‘তীর-কেন্দ্রীয় কমিটির পরামর্শ ও সহযোগীতায় ‘আইইউসিএন-বাংলাদেশ’ ও ‘সামাজিক বনবিভাগ রংপুর’ এর বন সংরক্ষক মহোদয়কে বিষয়টি অবহিত করলে তাৎক্ষনিক ‘তীর-গাইবান্ধা শাখার’ স্বেচ্ছাসেবীদের ঘটনাস্থলে যেতে বলেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেন। ‘তীর গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখা’র সভাপতি মোঃ জাহিদ রায়হান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আশিক, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহীম রাফি, কোষাধ্য শেখ ফরিদ, সহ-প্রচার সম্পাদক মোঃ রূপম মিয়াসহ পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। তাদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় শুক্রবার থেকে সুন্দরগঞ্জের বিভিন্ন স্থান থেকে তিনটি হিমালিয়ান প্রজাতির শকুন উদ্ধার হয়।

তীর-কেন্দ্রীয় সভাপতি রিফাত হাসানের পরামর্শে শকুন গুলো উদ্ধারের পাশাপশি উক্ত এলাকায় সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং করে সচেতনতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য শকুন তিনটিকে রংপুরে বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তরের ব্যবস্থা করা হবে এবং পরে এইগুলোকে দিনাজপুর সিংড়া জাতীয় উদ্যানের শকুন পরিচর্যা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে বলে বন সংরক্ষক মহোদয় অবহিত করেছেন। 

শকুনের বিষয় নিয়ে গাইবান্ধা সরকারি কলেজের অধ্য ও তীর এর উপদেষ্টা প্রফেসর মো: খলিলুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শকুন হচ্ছে প্রকৃতির ঝাড়ুদার। শকুন বড় ডানার বৃহদাকার পাখি, এটি তীক্ষন দৃষ্টির অধিকারী মৃত ভক্ষণকারী পাখি। শকুনই একমাত্র প্রাণী যারা রোগাক্রান্ত মৃত প্রাণী খেয়ে হজম করতে পারে এবং অ্যানথ্রাক্স, যক্ষা, খুরারোগের সংক্রমণ থেকে জীবকূলকে রা করে।

শিক্ষার্থীদের পরিবেশবাদী সংগঠন ‘টিম ফর এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ’ (তীর) শকুনসহ সকল বন্যপ্রাণী সংরণে ২০১১ সাল থেকে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। ‘তীর’ গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখার সেচ্ছাসেবী পরিবেশ প্রেমীরা গত কয়েক বছর ধরে গাইবান্ধা তথা উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন স্থান থেকে শকুন উদ্ধারে ‘বন বিভাগ’ ও ‘আইইউসিএন-বাংলাদেশ’ কে সহযোগিতা করে আসছে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে ভূমিকার জন্য সংগঠনটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিষয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জাতীয় পদক ‘বঙ্গবন্ধু এওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ড লাইফ এন্ড কনজারভেশন ২০২১’ এ ভূষিত হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন


এ জাতীয় আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়