তাজুল ইসলাম রেজা, সাদুল্লাপুর►
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গায় চুরির অপবাদ দিয়ে এক শিশুকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এ নিয়ে ওই শিশুর পিতা আনছার আলী বাদি হয়ে সাদুল্লাপুর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের দশলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এবং গত বুধবার ঘটনাটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পরে। ৯ বছর বয়সী ওই শিশুর নাম রানা মিয়া। সে উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের দশলিয়া গ্রামের আনছার আলীর ছেলে।
শিশু রানাকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতনের ৫৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রানার দুই হাত পেছনের দিকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। পিঠ ও দুই হাতের মাঝখানে খুঁটি। কিছু নারী-পুরুষ শিশুটিকে ঘিরে আছে, তাকে নানা প্রশ্ন করছে। এ সময় শিশুটিকে বলতে শোনা যায়, ‘হাত খুলে দেন, ঝিনঝি (ব্যথা) লাগছে।’
এলাকাবাসী ও শিশুটির পরিবার জানান, ৩ দিন আগে দশলিয়া গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের বাড়ি থেকে মুঠোফোন ও কিছু টাকা হারিয়ে যায়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শিশু রানাকে মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে তার বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে আসা হয়। ঘণ্টাখানেক স্থানীয় বাজারে একটি মুদি দোকানের সামনে রড-সিমেন্টের তৈরি খুঁটির সঙ্গে তার দুই হাত বেঁধে রেখে মোস্তাফিজ ও তাঁর লোকজন মারধর করেন। পরে স্থানীয় লোকজনের হস্তক্ষেপে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পরে মঙ্গলবার রাতেই রানাকে সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার রাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যস্ত শিশুটি হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডের ৮নম্বর শয্যায় চিকিৎসাধীন। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সুরঞ্জন কুমার বলেন, শিশুটি বাঁ হাত ও বাঁ পায়ে আঘাত পেয়েছে। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
রানার মা রেখা বেগম অভিযোগ করেন, টাকা চুরির অভিযোগ এনে মোস্তাফিজুর তাঁর ছেলেকে বাড়ি থেকে জোর করে ধরে নিয়ে যান। এরপর শিশুটিকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন চালান। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় রানাকে ছাড়িয়ে এনে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন তাঁরা। ছেলেকে নির্দোষ দাবি করে রানার মা এই ঘটনার বিচার দাবি করেন। তিনি অভিযোগ করেন, তাঁকে মীমাংসার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।
অভিযুক্ত ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
সাদুল্লাপুর থানার ওসি তাজ উদ্দিন খন্দকার জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।