সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধি ►
গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলাবাসির দীর্ঘ দিনের স্বপ্নের তিস্তা পিসি গার্ডার সেতু এখন দৃশ্যমান হয়ে দাড়িয়েছে। প্রতিদিন হাজারও উৎসুক নারী পুরুষ সেতুর কাজ দেখতে ভির করছে সেতু এলাকায়। ইতিমধ্যে ৩১ স্লাবের মধ্যে ৮টি স্লাব বসানো কাজ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল সোমবার স্থানীয় সাংসদ ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী সেতুর নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নিবার্হী প্রকৌশলী ছবিউল ইসলাম, উপজেলা প্রকৌশলী শামসুল আরেফীন খান, উপজেলা জাতীয় পাটির সহ-সভাপতি মাওলানা আবুল হোসেন, যুবসংহতির সভাপতি সাইদুর রহমান, উপজেলা ছাত্র সমাজের সভাপতি শাহ সুলতান সরকার সুজন, পল্লী বন্ধু পরিষদের আহবায়ক আব্দুর রাজ্জাকসহ উপজেলা, ইউনিয়ন জাতয়ি পাটি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীগণ। সাংসাদ শামীম সেতুর বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং খোঁজ খবর নেন।
২০২০-২০২১ অর্থ বছরের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর- চিলমারি উপজেলা সদরের সঙ্গে সংযোগকারি সড়কে তিস্তা নদীর উপর ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ (দ্বিতীয় সংশোধীত) প্রকল্প অনুমোদন দেন। ২০১২ সালে তিস্তা সেতু নির্মাণ আলোর মুখ দেখতে শুরু করে। ২০১৪ সালে সেতু নির্মাণ কাজের সুচনা হয়। সিডিউল মোতাবেক ২০২৩ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
হরিপুর সেতু সংলগ্ন এলাকা হতে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শহর পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বর্ন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি সেতুর সংযোগ সড়কে রুপান্তের কাজ এবং গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর ধাপেরহাট থেকে হরিপুর সেতু পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের কাজ অনেকটা এগিয়ে রয়েছে। ২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাইবান্ধার সার্কিট হাউজে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হরিপুরÑচিলমারি তিস্তা সেতুর ভিত্তি উদ্বোধন করেন ।
কুড়িগ্রামের চিলমারি, রাজীবপুর ও রৌমারী এবং গাইবান্ধা জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল হরিপুর চিলমারি তিস্তা সেতুর। ৭৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা বরাদ্দে নির্মাণ করার হবে তিস্তা সেতু। এর মধ্যে ২৭৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা মূল সেতু নির্মাণে ব্যয় হবে। সড়ক নির্মাণে ব্যয় হবে ১০ কোটি ২৫ লাখ টাকা, নদী শাসনে ৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা এবং জমি অধিগ্রহণে ব্যয় হবে ৬ কোটি টাকা। সেতুটিতে পিলার থাকবে ৩০টি এর মধ্যে ২৮টি পিলার থাকবে নদীর ভিতরে অংশে এবং ২টি পিলার থাকবে বাহিরের অংশে। সেতুর উভয়পাশে^ নদী শাসন করা হবে ৩.১৫ কিলোমিটার করে। সেতুর উভয় পাশ্বে সড়ক নির্মাণ করা হবে ৫৭. ৩ কিলোমিটার। এর মধ্যে চিলমারি মাটিকাটা মোড় থেকে সেতু পর্যন্ত ৭.৩ কিলোমিটার এবং গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর ধাপেরহাট থেকে হরিপুর সেতু পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার। চিলমারী অংশে একসেস সড়ক সেতু থেকে কাশিম বাজার পর্যন্ত ৫.৩ কিলোমিটার। এবং গাইবান্ধা ধাপেরহাট থেকে হরিপুর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার।
উপজেলা প্রকৌশলী শামসুল আরেফিন খান জানান, সেতুর কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। আশা করা হচ্ছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হবে।
সাংসদ শামীম জানান, দুই জেলাবাসীর স্বপ্ন পুরুনে তিস্তা পিসি গার্ডার সেতুর নির্মাণ কাজ এখন দৃম্যমান। সেতু চালু হলে কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধাবাসীকে ১০০ কিলোমিটার পথ ঘুরে চলাচল করতে হবে না। এছাড়া ব্যবসা-বানিজ্যে ফিরে আসবে নতুন সম্ভাবনা।