উত্তম সরকার, গাইবান্ধা►
অনেক চেষ্টার পর অবশেষে সক্ষম হলাম বসন্তবৌরি বা ধনিয়া পাখির ছবি ক্যামেরা বন্দী করতে গাইবান্ধা শহরের মুন্সিপাড়ার একটি আম গাছে অবিরাম ডেকে চলেছে বসন্তবৌরি ঝটপট ক্যামেরা হাতে তৈরি হলাম। লাগাল পেলাম বসন্ত বাউরী। পুরনো একটি আম গাছে দেখা মিলল ক্লিক ক্লিক করে কয়েকটি ছবি তুলে নিলাম।
আমাদের এই অঞ্চলের অনেক মানুষ এই পাখিটিকে সিঁদুরী টিয়া নামে পরিচিত। কিন্তু এর আসল নাম ভিন্ন আসলে এই পাখিটি হচ্ছে ধনিয়া বসন্তবৌরি বা বড় বসন্ত বাউরী মেঘলাই মিডি, পরিবার বা গোত্রের অন্তর্গত দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার এক প্রজাতির পাখি হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছেন বাংলাদেশ ভারত পাকিস্তান চীন ভুটান থাইল্যান্ড নেপাল মিয়ানমার সহ আরো কয়েকটি দেশে দেখতে পাওয়া যায়।
বড় বসন্ডবৌরি মুখবয় গলা ও বুকের উপরের দিক আকাশী গারআকাশমনি নীল যার জন্য প্রজাতিটির ইংরেজি নাম ব্লু থরবেড বোরবেড। পাখিটির বাকি সারা দেহ কলাপাতা সবুজ লালমাথার উপরে চুলা বরাবর হলুদ ও কালো পরপর দুটি পট্টি মুখের দুই পাশে একটি করে সিঁদুরের লাল চোখ ভুরু নীলাভ যার উপরে কালো ডোরা যেটির মাথার কালো পট্রির সাথে যুক্ত হয়েছে। ভারী ঠোঁট ঠোঁটের সামনে অর্ধেক কালো বাকি অংশ হয় নীলের উপরে হলুদের আভাযুক্ত। পা ধূসর বা পিটকিলে রঙের। চোখের তারা লালচে, চোখের চারদিক লাল পট্টি বিশেষ চামড়া দেখা যায়। স্ত্রী ও পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম।
বড় বসন্ত বৌরি সাধারনত ছোট ছোট দলে একসঙ্গে থাকে। অনেক সময় ৩০-৪০ জনের বড় দল দেখতে পাওয়া যায়। সাধারণত শীতকালে বড় কোন খাদ্যের উৎসবকে কেন্দ্র করে এরা বড় বড় দল গঠন করে। যেমন বটগাছের ফল খাওয়াকে কেন্দ্র করে এরা নিজেদের মধ্যে অনেক সময় ঝগড়াঝাঁটিতে মেতে ওঠে। একনাগারে ডেকে চলে কুটুরু কুটুরু শব্দ করে। মিনিটে প্রায় ৩০ বারের অধিক ডাকে। এই পাখির ডাকাডাকি শব্দের কাছাকাছি যারা থাকেন তাদের কানতলা লাগার উপক্রম হয়। পাতার রংয়ের নিজের শরীরের রং মিলে গেলেও সহজে এদের দেখা মেলে। একটি ডাকাডাকির প্রতি উত্তরে আর একটি পাখিও ডেকে সারা দেয়। সাধারণত বনাঞ্চল কিংবা যেখানে বেশি গাছপালা থাকে সেখানে এই পাখিগুলো বেশি ঘুরে বেড়ায়। গাছের মগডাল এবং চাঁদওয়া বেশি পছন্দ। এদের খাবার সাধারণত নরম ফল বিশেষ করে বটের ফল কদম দেবদারু গোটা, ডেউয়া, পেয়ারা, আম, কলাসহ কখনো কখনো এরা ছোট ছোট পোকামাকড়ও খেয়ে থাকে।
বসন্ত বৌরি বা বসন্ত বাউরী এরা বংশবৃদ্ধি করে সাধারণত একটি নির্ধারিত স্থানে একই পাখি অথবা তার বংশধররা বংশবৃদ্ধি করে থাকে। মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত এদের প্রজননকাল। চ্যাপ্টা শক্ত ঠোঁট দিয়ে গাছের নরম বা পচা কান্ডে গর্ত করে বাসা বানায়। এছাড়াও কাঠঠোকরার পরিত্যক্ত বাসাতেও তারা ডিম পাড়ে। একনাগারের ৩-৪ টি ছোট সাদা রংয়ের ডিম দেয়। পুরুষ এবং স্ত্রী বসন্ত বৌরি পর্যায়ক্রমে তা দিয়ে ছানা ফোটায়। স্ত্রীও পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম। উল্লেখ্য বিশেষ তথ্য সুত্র, গুগুল ইন্টারনেট থেকে নেয়া।