Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১১-৩-২০২৩, সময়ঃ বিকাল ০৪:৫১

গোবিন্দগঞ্জে বাহা উৎসবে মেতে উঠলো সাঁওতাল জনগোষ্ঠী

 গোবিন্দগঞ্জে বাহা উৎসবে মেতে উঠলো সাঁওতাল জনগোষ্ঠী

নিজস্ব প্রতিবেদক ►

গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ নিজস্ব ঐতিহ্যে নাচ-গানে বরণ করলেন ঋতুরাজ বসন্তকে। উপজেলার কাটাবাড়ি ইউনিয়নের আদমপুর মিশন সংলগ্ন বুজরুকবেড়া আদিবাসী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বাহা পরব বা বসন্ত উৎসব উৎযাপন করে সাঁওতালরা। 

আজ শনিবার গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল পল্লীতে বাহা পরবে মেতে ওঠে সাঁওতাল নারী-পুরুষ। সাঁওতালদের ভাষা-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য রক্ষায় চাই, রাষ্ট্রিয় ও সামাজিক উদ্যোগ এই শ্লোগানে বৃটিশ হাইকমিশন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ও আইইডি’র সহযোগিতায় অবলম্বন ও জনউদ্যোগ গাইবান্ধার আয়োজন করে। নাচে-গানে আনন্দ উল্লাসের মাধ্যমে আদিবাসী সাঁওতালরা তাদের নিজস্ব কৃষ্টি সংস্কৃতিতে বাহা পরবের মাধ্যমে বরণ করেন ঋতুরাজ বসন্তকে।

দিনভর ধর্মীয় পুজা-অর্চনা ও সাঁওতাল সাংস্কৃতিক সংগঠনের পরিবেশনায় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক সাঁওতাল নারী-পুরুষ-কিশোরী অংশ নেন। এ দিন সাঁওতাল-বাঙালিদের আগমনে মিলন মেলায় পরিণত হয় গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল পল্লী। পরে স্থানীয় আদিবাসী শিল্পীদের পাশাপাশি আমন্ত্রিত সাঁওতাল সাংস্কৃতিক দলের সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশনা দর্শকদের মুগ্ধ করে।

বাহা পরব উদযাপন কমিটির আহবায়ক ডা. ফিলিমন বাস্কের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন গাইবান্ধা পুলিশ সুপার মো. কামাল হোসেন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোহাম্মদ জাহেদ হাসান, বাংলাদের কৃষি ও পরিবেশ ইউনিটের প্রধান মোস্তফা নূরুল ইসলাম রেজা, পরিবেশ আন্দোলন-গাইবান্ধার আহ্বায়ক ওয়াজিউর রহমান রাফেল, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম বাবু, অধ্যাপক জহুরুল কাইয়ুম, অবলম্বনের নির্বাহী পরিচালক প্রবীর চক্রবর্তী, গোলাম রব্বানী মুসা, অঞ্জলী রানী দেবী, আদিবাসী নেত্রী প্রিসিলা মুরমু, সুচিত্রা মর্মু তৃষ্ণা, জাকব টুডু, থমাস হেমব্রম, মনির হোসেন সুইট প্রমুখ। 

সাঁওতালরা আমাদের এদেশেরই নাগরিক, তাদের কৃষ্টি ও ঐতিহ্য এদেশের সংস্কৃতিরই অংশ উল্লেখ করে আলোচকরা, সাঁওতালদের ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় রাষ্ট্রীয় ও সামজিক উদ্যোগ গ্রহণ, সাঁওতালসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় তাদের নিজস্ব ভাষায় শিক্ষাদান ও কালচারাল একাডেমি স্থাপন করার দাবি জানান।

বাহা পরব উদযাপন কমিটি আহবায়ক ডা. ফিলিমন বাস্কে বলেন, প্রাণ-প্রকৃতিকে ভালোবেসে সাঁওতাল জনগোষ্ঠী বাহা উৎসব পালন করে। এই বাহা উৎসবের পুজা পার্বন করলে আমাদের সমাজ ও পরিবারের উন্নয়ন হবে। বাহা পুজা না করা পর্যন্ত সাঁওতাল নারীরা বাহা ফুল অর্থাৎ শাল ফুল ছিড়েও না মাথায়ও পরে না। ভবিষ্যতে যাতে এই ঐতিহ্যবাহী বাহা পরব হারিয়ে না যায়, সেজন্য নতুন প্রজন্মকে জানাতেই এই উৎসব আয়োজন।

উল্লেখ্য, আদিবাসী সাঁওতালদের অন্যতম একটি প্রধান পার্বণ হচ্ছে বাহা উৎসব বা বাহা পরব। বাহা অর্থ ফুল। তাই বাংলায় বাহা পরবকে ফুল উৎসব’ বলা হয়। মূলত: নববর্ষ হিসেবে ফালগুণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এই উৎসব পালন করে সমতলে বসবাসকারী আদিবাসী-সাঁওতালরা। উত্তরাঞ্চলে সমতলে বসবাসকারী আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে ওঁড়াও, মুন্ডা, মালো, মাহাতো, মালপাহাড়ী, রাজওয়ারসীসহ মোট ৩৮টি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী এই বাহা উৎসবে অংশ নেয়।
 

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad