• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১৬-৫-২০২৪, সময়ঃ সকাল ১১:৫১
  • ৫৭ বার দেখা হয়েছে

স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও সাঁকোটি রুপান্তরিত হয়নি সেতুতে

স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও সাঁকোটি রুপান্তরিত হয়নি সেতুতে

শাহজাহান আলী মনন, সৈয়দপুর

প্রায় ৩ গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা নিজ অর্থায়নে গড়া বাঁশ এর সাঁকো। জনসাধারণের চলাচলে ভোগান্তি হওয়ায় বিভিন্ন দপ্তরে এটির সংস্কার বা ব্রিজ নির্মানে আবেদন করেও মেলেনি কোন প্রতিকার।

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত চিকলি নদী। এই নদীর উপর অবস্থিত সাকোটি পানিতে ডুবে গেলে মাঝে মাঝে চরম ভোগান্তি হয়। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় ৩ গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষকে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে অনেকে প্রতিশ্রুতি সত্বেও শেষ হয়নি প্রতীক্ষা।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, কামারপুকুর ইউনিয়নের পশ্চিম ওসুর খাই, পুর্ব অসুর খাই ও দক্ষিণ অসুর খাই এলাকায় অবস্থিত কাছারি ঘাট। এই ঘাট থেকে সাঁকোর উপর দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ।

ওই এলাকার চেয়ারম্যান ও মেম্বার জানান, দেশ স্বাধীনের বয়স প্রায় ৫৩ বছরে পদার্পন করেছে। এই সময়ে একাধিক সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, পানি উন্নয়ন বোর্ড সহ একাধিক দপ্তরে আবেদন করেও ভুক্তভোগীরা পায়নি কোন প্রতিকার। 

এর ফলে বাধ্য হয়েই মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে ওই এলাকার সাবেক মেম্বার আনসারুল হক ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আনোয়ার প্রামানিকের নিজ অর্থে সাঁকোটি সংস্কার করা হচ্ছে। ইতোপূর্বেও স্থানীয়ভাবেই নিজেদের প্রয়োজনে সংষ্কার করেছে এলাকাবাসী।

আব্দুল কুদ্দুস নামের এক ব্যাক্তি জানায়, ১৯৭১ সালের পর ৬-৭ জন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন এই আসনে। তারা সকলেই মানুষের চলাচলের ভোগান্তি কথা জেনে ঘটনাস্থল তদন্ত করে সেতু নির্মানের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্ত কিছু দিন পরই তারা বলতে শুরু করেন বরাদ্দ নাই, এজন্য সেতু নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না। 

এরপর পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে যাওয়া হয় সেতু নির্মারের আশা নিয়ে কিন্তু তারা বলেন এমপি সাহেব ডিও লেটার দিলে কিছু করা সম্ভব। তাছাড়া আমাদের পক্ষে কিছু করার সুযোগ নাই। আর এমপিরা প্রতিশ্রুতি দিলেও ডিও দেয়নি।

সর্বশেষ সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোকছেদুল মোমিন এর কাছে গেলে তিনি বলেন, সেতুর নির্মানের বিষয়টি দেখেন সংসদ সদস্যরা। তারা চেষ্টা করলে ৬ মাসের মধ্যেই ব্রিজ নির্মাণ করে দিতে পারেন। উপজেলা চেয়ারম্যানরা শুধু সম্মানের চেয়ারে বসে থাকেন। উপজেলার উন্নয়নে তেমন কিছুই বরাদ্দ মেলেনা।

কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার সরকার জানান, কামার পুকুর ইউনিয়ন ও কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়ন এর প্রায় ২০-২৫ হাজার মানুষ প্রতিদিন ওই নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে চলাচল করছে। এতে এলাকার মানুষের ভোগান্তির শেষ নাই। 

তিনি বলেন, কামারপুকুর ইউনিয়নের ৩ গ্রামের একমাত্র ভরসা এই ঘাটের বাঁশের সাঁকোটি। এখানে একটি সেতুর জন্য এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষের কাছে ধর্না ও আবেদন দিলেও আজাবধী নির্মাণ হয়নি সেতুটি। 

গতকাল শুক্রবার কামার পুকুর ইউনিয়ন ও কাশিরাম ইউনিয়ন এর শত শত মানুষ জানায়, প্রায় ৫৩ বছর থেকে আমরা এই চিকলি নদীর কাছারি ঘাটে ব্রিজ নির্মানের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু কে শুনে কার কথা। গরীবের দিকে তাকানোর যেন কেউ নাই। 

দেশ স্বাধীনের পর থেকে প্রতিশ্রুতি পাইতে পাইতে আমারা বিশ্বাস ও ভরসা দুটোই হারিয়ে ফেলেছি। তাই বাধ্য হয়েই কামার পুকুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আনোয়ার প্রামানিক ও সাবেক মেম্বার নিজ অর্থায়নে জনগনের সুবিধার্থে বাঁশের সাঁকোটি সংস্কার করে চলেছেন।

তারা বলেন জননেত্রী শেখ হাসিনা ও স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম সাহেব নেক নজর দেলেই এই চিকলি নদীর কাছারি ঘাটে ব্রিজ নির্মান সম্ভব, নচেৎ নয়। তাই তারা এবিষয়ে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এবিষয়ে নীলফামারী-৪ আসনের সাংসদ আলহাজ্ব সিদ্দিকুল আলম সিদ্দিক এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোন এমপি বা চেয়ারম্যান প্রতিশ্রুতি দিয়ে কথা রাখেননি, তা আমার জানার বিষয় না। তবে আল্লাহ পাক যদি আমাকে আগামী ৫ বছর বাঁচিয়ে রাখেন, তাহলে ব্রিজটি নির্মাণ হবেই হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন


এ জাতীয় আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়