Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১৭-২-২০২৪, সময়ঃ দুপুর ১২:০৭

সুন্দরগঞ্জের ২৬৮ প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার

সুন্দরগঞ্জের ২৬৮ প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার

এ মান্নান আকন্দ, সুন্দরগঞ্জ

১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে নির্মাণ করা হয় শহীদ মিনার। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আজও শহীদ মিনার নির্মানের ক্ষেত্রে সরকারি ভাবে কোন নির্দেশনা, বরাদ্দ প্রদান বা সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়নি। সে কারনে অর্ধেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। সেই ধারাবাহিকতায় গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার প্রাথমিক, মাধ্যমিক, কারিগরি ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ৪১৮ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৬৮ প্রতিষ্ঠানে নেই নিজস্ব ও স্থায়ী শহীদ মিনার।

উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকে ২৫৯টি সরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ৯০টি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে। বাকী ১৬৯টি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ১৫৯টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে নিন্ম মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠান ৮৮টি, মাদ্রাসা ৪৯টি, কলেজ ১৬টি, ও কারিগরি ৬টি। সবমিলে শহীদ মিনার রয়েছে ৫০টিতে। তবে মাদ্রাসা একটিতেও শহীদ মিনার নেই।

সরকার ভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবস পালনে পরিপত্র জারি করলেও শহীদ মিনার নির্মাণ করার ক্ষেত্রে তেমন কোন ভুমিকা পালন করছেন না। সে কারনে শিক্ষার্থীরা বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য দিন দিন ভুলে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মাঝে তেমন কোন সারা দেখা যায়নি। 

সপ্তম শ্রেনির শিক্ষার্থী মাসুম মিয়ার ভাষ্য তার মাদ্রাসায় শহীদ মিনার নেই। পতাকা স্টান্ডের নিচে দাড়িয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং সমাবেশ করা হয়। শহীদ দিবস পালন করলেও শহীদের স্মৃতিস্তম্ভ সর্ম্পকে ধারনা অনেক কম। 

মাদ্রাসা সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহ অত্যন্ত অবহেলিত। এরমধ্যে বিশেষ করে ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাদ্রাসা সমুহের অবস্থা শোচনীয়। অবকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে সরকারি ভাবে নেই কোন উদ্যোগ। প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তি উদ্যোগে কোন কিছু নির্মান করা অত্যন্ত কষ্টকর । স্বদিচ্ছা থাকা সত্বেও অর্থ, পরিকল্পনা, নজরদারি, কতৃপক্ষের উদাসিনতার কারনে কোন কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক সকল জাতীয় দিবস সমুহ যথাযথ ভাবে পালন করা হয়।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ২৫৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ইতিমধ্যে ৯০টি প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী ভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে অল্প সময়ের মধ্যে সবগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল মমিন মন্ডল জানান, স্বদিচ্ছার অভাবে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহে শহীদ মিনার নেই। তবে দিবস সমুহ আসলে ভ্রামম্যান উপায়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করে দিবস সমুহ পালন করে থাকেন প্রতিষ্ঠান সমুহ। ইতিহাস ও ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারি ভাবে প্রতিষ্ঠান সমুহে শহীদ মিনার নির্মাণ করা একান্ত প্রয়োজন। 

উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো. তরিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি ওইভাবে কখনো ভাবা হয়নি। আসলেই ভাষা ও স্বাধীনতার ইতিহাস ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা আবশ্যক। আশু এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম সরকার জানান, স্বাধীনতার ৫২ বছর অতিক্রান্ত হলেও স্বাধীন সার্বভৌমত্বের মর্যাদার ছাপ প্রতিষ্ঠিত করা আজও সম্ভব হয়নি। এর পিছনে অনেক কারন রয়েছে। শুধু সরকারি উদ্যোগে সবকিছু করতে হবে তা নয়। নিজস্ব অর্থায়নে এবং স্বদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে এসব কর্মকান্ডে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলে সম্ভব স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা।

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad