Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ২৯-১২-২০২৩, সময়ঃ সকাল ০৮:৪০

শীতকালীন সবজিতে ভরে গেছে বাজার লাউ কপি ১৫, মুলার কেজি ১ টাকা

শীতকালীন সবজিতে ভরে গেছে বাজার লাউ কপি ১৫, মুলার কেজি ১ টাকা

রংপুর প্রতিনিধি

রংপুর শীতকালীন উৎপাদিত সবজি প্রতিদিন ট্রাকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন কাঁচামালের আড়তে যাচ্ছে। এ বছর উৎপাদন মৌসুমের শুরুতেই হরতাল-অবরোধের কারণে বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকার আসছেন কম। এই সুযোগে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ‘সিন্ডিকেট’ করে কমিয়ে দিয়েছেন দাম। বাইরে থেকে আসা পাইকাররাও দিচ্ছেন না ন্যায্যমূল্য। এতে আগাম সবজিতেও অনেক চাষির উৎপাদন খরচ উঠছে না।

সবজির বেশির ভাগই জোগান দেন মিঠাপুকুর ও গঙ্গাচড়া উপজেলার কৃষকরা। এখানকার জমি অপেক্ষাকৃত উঁচু হওয়ায় সব ধরনের সবজিই হয়। প্রতিকূল আবহাওয়ায়ও ফলানো যায়। তবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকা এবং স্থানীয় বাজার ব্যবস্থার অভাবে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন চাষিরা।

সরেজমিন মিঠাপুকুরের মমিনপুর, বলদিপুকুর, বাড়ইপাড়া, তাজনগর, কোনাপাড়া ও রানীপুকুর গ্রামে দেখা যায়,  মুলা, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, শিমসহ রকমারি শীতকালীন সবজিতে ভরে আছে মাঠ। ক্ষেত পরিচর্যায় কিষান-কিষানি ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ ক্ষেত থেকে ফসল তুলছেন, কেউবা কীটনাশক স্প্রে করছেন।

বলদিপুকুর এলাকার কৃষক শাহাদাৎ হোসেন নিজের ক্ষেত থেকেই মুলা বিক্রি করছিলেন স্থানীয় পাইকারের কাছে। দাম জানতে চাইলে বলেন, প্রতি মণ মুলা বিক্রি করছেন মাত্র ৪০ টাকায়। সেটিও অনেকে নিতে চাচ্ছেন না। তিনি বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে মুলা চাষ করতে খরচ হইছে ৫ হাজার টাকার মতোন। সেই মুলা বেচা নাগোচে ৫০০ টাকায়। তবু কায়ও নিবার চায় না। এমন করি কি বাঁচি থাকা যায়!’

মুলা কিনতে আসা পাইকার সোহরাব আলী জানান, এখান থেকে বিভিন্ন সবজি কিনে তিনি রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও যাত্রাবাড়ীর আড়তে বিক্রি করেন। হরতাল-অবরোধে গাড়ি ভাড়া বেড়েছে দাবি করে তিনি জানান, প্রতি মণ মুলা শ্রমিক দিয়ে পরিষ্কার করাসহ ঢাকায় পৌঁছাতে খরচ পড়ে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। এই হিসাব ধরলেও মুলার কেজিপ্রতি দাম পড়ে ১১ টাকা। ঢাকায় এখন মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকায়। অর্থাৎ কেজিতে মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভ করছেন প্রায় দ্বিগুণ। অথচ কৃষক জমির খরচ, শ্রম ও সময় দেওয়ার পর দাম পাচ্ছেন মাত্র ১ টাকা।

কৃষকরা জানান, রংপুরে সবজি সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেই। এই সুযোগে পাইকার ও আড়তদাররা সিন্ডিকেট করে তাদের কাছ থেকে অনেক কম দামে সবজি কেনেন। আগাম সবজি তোলার পর দ্বিতীয় দফায় একই জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করা যায়। তবে ভরা মৌসুম হওয়ায় তখন আর ভালো দাম পাওয়া যায় না। এখন আগাম সবজিতেও ঠকছেন তারা।

কৃষি বিভাগ জানায়, রংপুর কৃষি অঞ্চলের পাঁচ জেলায় শীতকালীন শাকসবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪১ হাজার ২৭৮ হেক্টর জমিতে। এ পর্যন্ত আবাদ হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার হেক্টরে। এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) আনোয়ার হোসেন বলেন, সবজি পচনশীল পণ্য। সংরক্ষণ সুবিধা না থাকায় ক্ষেত থেকে উত্তোলন করেই কৃষকদের বিক্রি করতে হয়। আবার সিন্ডিকেটসহ নানা সংকটে প্রকৃত মূল্য পান না তারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad