ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ►
শিকলবন্দি জীবন যাপন করছেন ঠাকুরগাঁওয়ের মিলন হক। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস পায়ে শিকল আর ছোট ছাউনির ভেতরে পুরো দুনিয়ার স্বাদ পেতে হয় তাকে।
জীবনের ৩০টি বছর পার হয়েও জীবনের কোনো মানে খুঁজে পাননি তিনি। অপরিচিত জনের সঙ্গে আচরণ স্বাভাবিক হলেও নিজের পরিবারের লোকদের সঙ্গে করেন অস্বাভাবিক আচরণ। অনেক সময় নানাভাবে বিড়ম্বনায় ফেলে স্থানীয়দের। পরিবারে উপার্জনক্ষম মানুষ না থাকায় হচ্ছে না উন্নত চিকিৎসা।
জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া ইউনিয়নের পূর্ব কুজি শহরে মফিজ উদ্দীন ও শাহেদা বেগম দম্পত্তির সন্তান মিলন হক। নয় বছর বয়সে গলায় টিউমার ধরা পড়ে মিলনের। চিকিৎসা নেওয়ার পরে কিছুদিন সুস্থ হলেও আবার শুরু হয় অসুস্থতা। ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে এ অসুস্থতা। এখন শিকলে বেধে না রাখলে নানাভাবে মানুষকে হেনস্তায় ফেলে। একদিকে স্বামীর অসুস্থতা অন্যদিকে ছেলের শিকলবন্দি জীবন যাপন নিয়ে দুশ্চিন্তায় সময় পার করেন বৃদ্ধা শাহেদা বেগম। নিজের অসুস্থতা থাকা সত্ত্বেও বাধ্য হয়ে অন্যের বাড়িতে কাজ করতে হয় তাকে।
মিলনের মা শাহেদা বেগম বলেন, ভিটেমাটি ছাড়া আর কিছু নেই আমাদের। মিলনের বাপ অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে রয়েছে। সুস্থ থাকলে তিনি কাজ করতে পারতেন। আমি একদিন কাজে গেলে আবার অসুস্থ হয়ে যাই। এখন মিলনের চিকিৎসা না হলে আমাদের পরিবারটা কীভাবে চলবে। যা ছিল সব শেষ হয়ে গেছে। আমাদের পাশে কেউ না দাঁড়ালে আমাদের আর অস্তিত্ব থাকবে না।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন বলেন, বিষয়টি অবগত হলাম। এমন হলে খুবই দুঃখজনক। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।