Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ৮-৮-২০২৩, সময়ঃ বিকাল ০৩:৩৫

যমুনার ভাঙনে হুমকিতে সাঘাটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ

যমুনার ভাঙনে হুমকিতে সাঘাটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ

সাঘাটা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি►

সাঘাটায় যমুনা নদীর তীরে মুন্সির হাট পয়েন্টে ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। গত দুইদিনের ভাঙনে মুন্সিরহাটের ৯টি দোকানঘর ও হাটের আশপাশের এলাকার ৫২ টি পরিবারের ঘর-বাড়ি বসতভিটা  বিলিন হয়ে গেছে। হুমকিতে পড়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জামে মসজিদ,মাদ্রাসা, মুন্সিরহাট, বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ, শতশত ঘর-বাড়ি, অসংখ্য গাছপালা ও আবাদি জমি।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন এলাকায় বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছে।

তবে এলাকাবাসির অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কমকর্তাদের গাফিলতির কারণে ভাঙন রোধ হচ্ছে না। ফলে ভাঙ্গন এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

মুন্সিরহাট পয়েন্টে প্রতিবছর একাধিকবার ভাঙন শুরু হলে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড তড়িঘড়ি করে লাখ লাখ টাকার বালুর বস্তা ডাম্পিং করে জরুরী ভিত্তিতে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা করলেও তা কোনো কাজেই আসছে না।

এ নদীর তীর রক্ষা কাজের মুন্সিরহাট ক্রসবাঁধ পয়েন্টে গত ১ মাস আগেই তীব্র ভাঙনে বেশ কয়টি ঘর-বাড়ি বিলিন হয়েছে। আবারও গত রবিবার (৬ আগস্ট) রাত থেকে মুন্সিরহাট পয়েন্টে প্রায় ৩ শত ফুট এলাকা জুঁড়ে ভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। ভাঙ্গনে হাটের  ৯টি দোকানঘর, ৫২ টি পরিবারের ঘর-বাড়িসহ বসতভিটা, অসংখ্য গাছপালা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।

ভাঙন কবল থেকে লোকজন নিজেদের দোকানপাট ও ঘর-বাড়ি সরিয়ে নিতে ব্যস্ত রয়েছে। এছাড়াও মারাত্মক হুমকিতে রয়েছে মুন্সিরহাটের শতাধিক দোকানঘর, ঘর-বাড়ি মুন্সিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়, মুন্সিরহাট জামে মসজিদ, মাদ্রাসা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ।

এদিকে ভাঙনে গৃহহারা পরিবারগুলো মুন্সিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয় ও বিদ্যালয় মাঠে আশ্রয় নিয়ে তারা পরিবার পরিজনসহ মানবেতর জীবন জাপন করছেন।

গৃহহারা আব্দুল করিম ও রেজাউল করিম বলেন, “এখন আমরা কোথায় আশ্রায় নেই, কী খাই?   হঠাৎ করে রাতে ভাঙন শুরু হয় সে সময় কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুহুর্তের মধ্যে হামার সব জিনিসপত্র, ট্যাকা-পয়সা, ঘর-বাড়ি, বসতভিটা বিলিন হয়া যায়। ওই মুহুর্তে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কোনরকমে জীবন নিয়ে ঘর থেকে বাইর হওয়া ছাড়া কোনো উপায় আচিল নে।”

সাঘাটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইট জানান, মুন্সির হাট থেকে গোবিন্দি পর্যন্ত এলাকায় যমুনার রক্ষার জন্য স্থানীয় এমপি মাহমুদ হাসান রিপনের প্রচেষ্টায় ২০৬ কোটি টাকা বরাদ্দ এবং কাজের টেন্ডার হয়েছে । বর্ষা মৌসুম শেষে ওই নতুন প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। এদিকে নদীর ভাঙন মুন্সির হাট এলাকায় তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। ভাঙ্গনে বেশ কিছু দোকানঘর, ৫২ টি পরিবারের ঘর-বাড়ি বসতভিটা বিলিন হয়েছে। তবে নদীর তীর রক্ষায় জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে, এই কাজ চলমান না থাকলে এ হাটের সমস্ত দোকানপাট ২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ১ টি জামে মসজিদ, মাদ্রাসা, শতাধিক ঘর-বাড়ি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যাবে। বাঁধটি ভেঙ্গে গেলে বন্যার পানিতে সাঘাটা উপজেলা হেডকোয়াটারসহ বাঁধের পশ্চিমাংশ প্লাবিত হবে।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক মুন্সিরহাট ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি গাফিলতির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ভাঙন প্রতিরোধের ক্ষেত্রে কারো কোনো গাফিলতি নেই। মুন্সিরহাট পয়েন্টের ভাঙন সার্বক্ষণিক মনিটরিং করে সেখানে জরুরি ভিত্তিতে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে নদীর তীর রক্ষার কাজ হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad