Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১৬-১-২০২৩, সময়ঃ বিকাল ০৫:৪৩

মৌমাছির মৌচাক কাটতে বলায় এলাকাবাসীর নামে মামলা

মৌমাছির মৌচাক কাটতে বলায় এলাকাবাসীর নামে মামলা

IMG_20230116_172205

শাহজাহান আলী মনন, সৈয়দপুর ►

মৌমাছির আক্রমণে একের পর এক আহত ও  মরণাপন্ন অবস্থায় নিপতিত হয়ে মৌচাক ভাঙতে চাওয়ায় এক নারীর মিথ্যে মামলার আসামী হয়েছে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। ফলে একদিকে মৌমাছির কামড়, অন্যদিকে মিথ্যে মামলায় চরম হয়রানীতে পড়েছেন তাঁরা। প্রতিবাদ করায় হেনস্থার শিকার হয়েছেন মেম্বার চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। এমনই অমানবিক ও অনভিপ্রেত কান্ড ঘটেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নে।

ওই এলাকার আইসঢাল পানাতিপাড়ার লোকজন এই ধরণের অন্যায়ের প্রতিবাদে সোচ্চার হলেও পেরে উঠছেন ঝগড়াটে ও মামলাবাজ ওই নারীর সাথে। তাই ভোগান্তি ও হয়রানী থেকে বাঁচতে এবং বিচার দাবীতে প্রশাসন, সংবাদপত্র, মানবাধিকার সংগঠন ও আইন সহায়তাকারী সংস্থার সহায়তার আবেদন জানিয়েছেন। সোমবার (১৬ জানুয়ারী) বেলা ১২ টায় এলাকায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই আহ্বান জানানো হয়েছে।

এসময় এলাকাবাসীরা জানান, প্রতিবেশী সামবারুর বাড়ির বটগাছে দীর্ঘ প্রায় এক বছর থেকে একটা মৌচাক হয়েছে। এতদিন মৌমাছি কোনরকম সমস্যা করেনি। কিন্তু একমাস ধরে

মাছিগুলো চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে। গাছের নিচ দিয়ে যাতায়াতের রাস্তায় চলাচল করলেই মৌমাছির আক্রমণের শিকার হচ্ছে। এমনকি ঘরবাড়িতে ঢুকেও কামড়াচ্ছে। এলাকার ১০-১৫ জনকেসহ বেশকিছু গরু-ছাগলকেও কামড় দিয়েছে। ৩-৪ জনের অবস্থা খুবই মারাত্মক হয়ে পড়েছিল। এর মধ্যে এক স্কুল পড়ুয়া সিদ্দিকা খাতুন নামের একটি মেয়ের অবস্থা ভয়াবহ হয়েছিল।

মেয়েটির বাবা মৃত তসির উদ্দীনের ছেলে ফারাজ উদ্দীন বলেন, শতাধিক মৌমাছি ঘরের ভিতরে এসে কামড়ানোর ফলে মেয়ের অবস্থা খুব খারাপ হয়। প্রথমে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়েও মরণাপন্ন অবস্থা হওয়ায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে হয়েছে। একসপ্তাহ হাসপাতালে থেকে বাড়ি আনার পরও আজও চিকিৎসা চলছে।

ওবায়দুল ইসলাম বলেন, এভাবে একের পর এক অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পাড়ার লোকজন সামবারুরকে মৌচাকটি কেটে ফেলার জন্য বলে। এতে তার স্ত্রী সামিনা বেগম ক্ষিপ্ত হয়ে এলাকাবাসীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে জানালে তাঁরা লোক পাঠিয়ে অনুরোধ জানালেও ওই পরিবার গুরুত্ব দেয়নি। ফলে তাঁরা এলাকাবাসীকে মৌচাকটি কাটার নির্দেশ দেন।

আতিয়ার রহমান বলেন, জনপ্রতিনিধিদের কথামত চাক কাটার লোক নিয়ে আসলে সামিনা বেগম বাধা দেয় এবং দা নিয়ে লোকজনকে তাড়া করে ধোঁয়া করার জন্য তৈরী আগুনসহ লাঠি কেড়ে নেয়। পরে ফারাজ ও ওবায়দুলের বাড়িতেও চড়াও হয় এবং একটি ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। এনিয়ে প্রতিবাদ করায় আমাকেও আসামী করেছে। অথচ আমিও মৌমাছির কামড় খেয়েছি। এলাকার ঠিকাদার এজাবুল, সাংবাদিক খলিলুর সহ অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিও আক্রান্ত হয়েছেন।

মন্নুজা বেগম বলেন, এলাকাবাসীর সমস্যার একারণেই মৌচাকটি কাটতে বলা হয়েছে। অথচ এই সামান্য বিষয়কে নিয়ে এখন নিজেই নিজের শরীর কেটে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আহতদের বিরুদ্ধেই মিথ্যে অভিযোগ এনে উল্টো মামলা করেছে সামিনা। পাড়ার ৫ টি পরিবারসহ ১০ জনকে আসামী করা হয়েছে।

এটা ষড়যন্ত্রমুলক এবং হয়রানী করে আর্থিক ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টা। চরম ভোগান্তিতে পড়েছি আমরা পুরো পাড়ার লোকজন। একজনের জন্য এমন কষ্টকর পরিস্থিতি মেনে নেয়া যায়না। এর বিচার চাই। তার সাথে সুর মিলিয়ে উপস্থিত ৩০-৩৫ জন পাড়াবাসী নারী-পুরুষ সমস্বরে দাবী জানান। তারা তদন্ত করে সঠিক তথ্য তুলে ধরাসহ প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করেন।

এব্যাপারে সামিনা বেগমের সাথে যোগাযোগ করলেও তাকে বাড়িতে  পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি এবং মোবাইলে কল দিলে রিসিভ না করায় তার মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। এদিকে সামান্য ঘটনায় মামলা করায় এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে এবং সচেতন মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad