জয়নুল আবেদীন, সাঘাটা ►
বর্ষা শুরুর সাথে সাথে উজান থেকে পাহাড়ী ঢল আর ভারী বর্ষনে কারণে গাইবান্ধার সাঘাটায় যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে মরা যমুনা নদীতে এখন সব দিক থেকে নৌকা চলাচল আবার শুরু হয়েছে। চর এবং নদী কুলের মানুষ নৌকা চড়েই সবখানে চলাচল করছে। জেলেরা জাল দিয়ে নদীতে মাছ ধরছে। নদী এচিত্র দেখে মনে হয় যে, যমুনা তার নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছে ।
নদীর নব্যতা সংকটে গত সপ্তাহেও এই যমুনায় ছিলো ধুঁ ধুঁ বালুচর। এখানে কৃষক ফসল ফলাতো রাখাল গরু-ছাগল, মহিষ চরাতো । মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে যমুনা নদীতে “পানি আর পানি সব খানেই অথৈ পানি”। কয়েক দিন আগেও মানুষকে ধুঁ ধুঁ দুর্গম বালুচর পায়ে হেটে পারি দিয়ে হাট-বাজার,আত্মীয় স্বজনের বাড়ি ও শহরে যাতায়াত করতে হতো।
বালির কারনে চরবাসির যেমন ভোগান্তি পোহাতে হতো তেমনি সময়ও অপচয় বেশী হতো। “সেই ভোগান্তি আর সময় অপচয়ের ধুঁ ধুঁ বালুচরে এখন অথৈ পানি”। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রবল স্্েরাতও বয়ে চলছে নদীতে। নদীতে পানি আসায় চরের মানুষের ভোগান্তি কমে গেছে । তারা নৌকায় চরে সহজেই গন্তেব্যে পৌঁছিতে পারছে।
প্রবাহমান নদীতে জেলেরাও জাল ফেলে মনের সুখে মাছ ধরে সহজেই বাজারে বিক্রি করতে পারছে। ফলে চর ও নদী কুলের মানুষের মধ্যে যেন প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। স্থানীয় চিনিরপটল গ্রামের জেলে সুকুমার জানান, “আমরা দীর্ঘ দিন থেকে মানবেতন জীবন কাটাচ্ছি। কারন যমুনায় জল ছিল না।
গত দুদিনে যমুনায় পানি বৃদ্ধি ফলে নিম্নাঞ্চলের চলগুলো ডুবে গিয়ে মাছ ধরার উপযোগী হয়েছে। আমরা এখন মাছ ধরে সংসার চালাতে পারছি। হলদিয়া ইউনিয়নেরর দীঘন কান্দিগ্রামের ভুট্টা চাষী আবতাব হোসেন জানান, “নদীতে পানি না থাকার করনে আমার চরের জমিতে উৎপাদিত ভুট্টা চর থেকে শহরে নিতে পারিনি”। ফলে বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। এখন নদীতে পানি হওয়ায় আমি নৌকায় করে ভুট্টাগুলো শহরের হাটে নিয়ে বিক্রি করতে পারবো। এতে আমার পরিবহন খরচ কম হবে। আপর দিকে ভোগান্তি কমে যাবে।”
সাঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইট জানান,“প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পানি বৃদ্ধির ফলে যমুনা নদী ভরে যায়। এবছর বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠে তেমন বৃষ্টিপাত না হওয়া চরের মানুষ অনেকটা ভোগান্তিতে ছিল। চলিতি সপ্তাহের বর্ষণ ও উজান থেকে ঢল নেমে আসায় যমুনা বেষ্টিত নিচু চর গুলো এখন ডুবে গেছে। ফলে এখানকার লোকজনকে আর পায়ে হাটতে হচ্ছেনা। তারা নৌকাযোগে সহজেই গন্তব্যে পৌছাতেহ পারছে।”
সাঘাটা-ফুলছড়ি আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ হাসান রিপন জানান, “নদী মানুষের শুধু ক্ষতিই করে না, নদী মানুষের উপকারেও আসে। কারণ নদী আছে বলেই নদী এলাকায় বন্যা হয় আর বন্যার কারণেই কৃষকের জমিতে পলিপড়ে জমি উর্বর হয়। এতে জমিতে অধিক ফসল ফলে। তিনি জানান “চরের মানুষের জীবন মান উন্ননে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে চরের মানুষেনর বিভিন্ন দাবী সংসদে তুলে ধারেছি। আগামীতে চরের মানুষ যেন চরে উৎপাদিত ফসল সহজেই শহরের হাটবাজারের মতো ন্যায্য মুল্যে বিক্রি করতে পারে এজন্য চর ভিত্তিক ক্রয় বিক্রয় কেন্দ্রে করা হবে।