ভবতোষ রায় মনা/আমিনুল হক ►
দেশীয় খাবার খেয়ে মাতাল বাবু’র ওজন দাঁড়িয়েছে ১৫ মণ। তার বর্তমান বয়স প্রায় ৪ বছর। ইতোমধ্যে সাদা কালো রঙের এ গরুটির দাম হাঁকা হচ্ছে ৪ লাখ টাকা। মাতাল বাবুকে তিন বেলা খাদ্য দেওয়ার পাশাপাশি গোসল করাতে হয় দু’বার।
সরেজমিন সোমবার সকালে ফুলছড়ি উপজেলার মধ্যকঞ্চিপাড়া গ্রামের বদিয়াজ্জামানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, একটি টিনসেড ঘরে রাখা হয়েছে মাতাল বাবুকে। মাথার ওপর ঘুরছে ফ্যান। মুখের সামনে খাদ্য হিসেবে রাখা হয়েছে গম, ভুট্টা, ভূষি ও চালের খুদ। খাচ্ছে মজা করে। মাঝে মাঝে ডাক ছাড়ছে মনের আনন্দে। মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করছেন গরুর মালিক বদিয়াজ্জামান।
আশপাশের উৎসুক মানুষ মাতাল বাবুকে দেখতে ভিড় করছেন বদিয়াজ্জামানের বাড়িতে। মাতাল বাবুকে ঘিরে মানুষের নানা প্রশ্ন। কেউ জিজ্ঞাসা করছে গরুটি কি খায়, কবে থেকে লালন পালন করা হয়েছে। দাম এত কেন! উৎসুক জনতার এমন নানা রকম প্রশ্ন শুনে বিরোক্ত না হয়ে বদিয়াজ্জামান সাবলীলভাবে সবার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাচ্ছেন। গরুর নাম মাতাল বাবু কেন রাখছেন এমন প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, ছোট বেলায় গরুটির নাম রাখা হয়েছিলো বাবু। গরুটিকে আমি ছাড়া অন্য কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারতো না। এজন্যই পরিবারের অন্য সদস্যরা তাকে মাতাল বাবু নামেই ডাকে।
খামারির দাবি মাংস কতটুকু হবে তা গ্যারান্টি দিতে পারবো না। তবে ফিতার মাপে পুরো গরুটির ওজন ১৫ মণ। তবে গোস্ত হবে সাড়ে ১১ মণ। যা কেজির মাপে ৪৪০ কেজি। তিনি জানান, এই গরুর পিছনে আমার অনেক টাকা খরচ হয়েছে। প্রতিদিন মাতাল বাবুকে শুধুমাত্র খাওয়ানো খরচ হতো ৪০০-৫০০ টাকা। তার দাবি গরুটি শাহীওয়াল জাতের।
তিনি বলেন, আমি যা দাম চাইব ক্রেতা তো সে দাম দেবে না। সেখানে কমবেশি কিছুটা হবে। তবে তার গরুটা শাহীবল জাতের বলেও যোগ করেন তার বক্তব্যে। মাতাল বাবুকে মোটাতাজাকরণ করতে তিনি কোনো ধরণের ওষুধ ব্যবহার করেননি। তার দাবি, গরুটি কি ভালো কিছু খাওয়ানোর ফলে মোটা হয়েছে।
ফুলছড়ি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জহিরুল ইসলাম বলেন, কোরবানি ঈদকে উদ্দেশ্য করে ফুলছড়ি উপজেলার খামারিরা লাভের আশায় গরু পালন করে থাকেন। এবারের ঈদে এ উপজেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ১১ হাজার ৫৫০টি। ইতিমধ্যেই প্রস্তÍুত হয়েছে ১৪ হাজার ৬৩৮টি। তিনি বলেন, কোনো প্রকার ক্ষতিকর উপকরণ ব্যবহার ছাড়াই প্রাকৃতিক উপায়ে পশু মোটাতাজা করণ হওয়ায় আগ্রহীরা কোরবানির জন্য নিশ্চিন্তে এসব পশু কিনতে পারেন।