Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ২৫-২-২০২৩, সময়ঃ দুপুর ০২:২২

দিনাজপুরে সুদ ব্যবসায়ীদের খপ্পরে পড়ে অনেক পরিবার সর্বশান্ত

দিনাজপুরে সুদ ব্যবসায়ীদের খপ্পরে পড়ে অনেক পরিবার সর্বশান্ত

দিনাজপুর প্রতিনিধি ►

দিনাজপুরে সুদ ব্যবসায়ীদের চক্রবৃদ্ধির সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারা অনেক পরিবার সর্বশান্ত হয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এই সুদ ব্যবসায়ীরা ঋনগ্রহীতার অভাবের সুযোগ কাজে লাগিয়ে চেকের পাতায় দ্বিগুন পরিমান টাকার অঙ্ক লিখে নেয় । 

সুদ ব্যবসায়ী সুদের টাকা গ্রহণ করলেও আরোও বেশি টাকার আশায় চেকের পাতায় দ্বিগুন পরিমান টাকার আশায়  সিনিয়র  জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে মামলা দায়ের করে।    

এমন অনুসন্ধানে দেখা গেছে দিনাজপুরের ২নং উপশহরের সুদ ব্যবসায়ী রইস উদ্দিনের নিকট থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা সুদের উপর গ্রহন করে আশরাফুল ইসলাম  নামে এক হোটেল ব্যবসায়ী। করোনা কালীন সময়ে হোটেল ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়া আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ৩৫ হাজার করে মাসিক সুদের টাকা প্রদান করলেও হোটেল ব্যবসায় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে। সুদের টাকা প্রদান করতে না পারায় এক সময় সুদের টাকা বন্ধ করে দিলে সুদ ব্যবসায়ী রইচ উদ্দীন দিনাজপুর  সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে মামলা দায়ের করে দেয়। বর্তমানে মামলাটি চলমান।    

ঋনগ্রহীতা আশরাফুল ইসলাম বলেন , সুদ ব্যবসায়ী রইচ উদ্দীনের নিকট  গত ১০ জানুয়ারী ২০১৫ সালে সুদের উপর এক লক্ষ গ্রহন করি। তার বিনিময়ে আমার অভারের সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমার নিকট থেকে ২ লক্ষ টাকার ব্যাংকের চেক পাতায় লিখে নিয়েছে। তিন মাস আমি ৭ হাজার করে সুদের টাকা প্রদান করেছি। পরবর্তীতে ২০ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে আমাকে আরোও ৫ লক্ষ টাকা ঋন প্রদান করবেন এই শর্তে আরোও ১ লক্ষ ৫০ টাকা প্রদান করে। পরবর্তীতে আরোও দুইবার ৫০ হাজার করে, ১ লক্ষ টাকা সুদের উপর ঋন প্রদান করে। এর বিনিময়ে আমার নিকট থেকে সাদা  স্ট্যাম্প ও ১০ লক্ষ টাকার চেকের পাতায় স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। 

তিনি আরোও বলেন, প্রথমবার দুই লাখ টাকার চেক এবং পরবর্তীতে আরও ১০ লাখ টাকার আরেকটি চেকের পাতা ও বিপরীতে  বিভিন্ন পর্যায়ে  সুদের টাকা ১ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা পরিশোধ করা হলেও ব্যাংক চেকের পাতা ফেরত দিতে তালবাহানা করে। এক পর্যায়ে রইছ উদ্দিন কৌশলে চেকের পাতার মামলা দায়ের করে। মামলাটি বর্তমানে চলমান রয়েছে। বর্তমানে তার সুদের টাকা চক্রবৃদ্ধি হারে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এক সময়ে সেই হোটেল ব্যবসাটি বন্ধ করতে বাধ্য হই । 

তিনি বলেন, পরিবার পরিজন নিয়ে ঢাকা শহরে চলে আসতে বাধ্য হয়েছি। এ বিষয়টি নিয়ে পরিবার-পরিজনসহ বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যম দিয়ে সুদ ব্যবসায়ী রইস উদ্দিন এর সাথে কয়েকবার আপোষ মীমাংসার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করলেও শেষ পর্যন্ত মীমাংসা হয়নি।

দিনাজপুর শহরের ইমরান আলী মিঠু বলেন, আমিও সুদ ব্যবসায়ী রইচ উদ্দীনের নিকট থেকে তিন কিস্তিতে ২৫ হাজার ২৫ হাজার ২৫ হাজার টাকা করে মোট ৭৫ হাজার টাকা সুদের উপর  ঋন গ্রহন করি। এই ৭৫ হাজার টাকার বিপরীতে আমার নিকট থেকে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার ব্যাংক চেকের পাতায় স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছে। পরবতীতে যখন সুদের টাকা পরিশোধ করার শেষ পর্যায়ে এসেছে। তখন চেকের পাতা ফেরত চাইলে রইচ উদ্দীন আমার নামেও মিথ্যা মামলা দায়ের। সুদ ব্যবসায়ীর খপ্পরে পড়ে আমার মত অনেক পরিবার সর্বশান্ত হয়ে গেছে। 

রইচ উদ্দীন বলেন, আমি সুদের ব্যবসা করি না। কেউ আমার নিকট টাকা নিলে প্রমান স্বরুপ স্ট্যাম্প ও ব্যাংক চেক জমা নিয়ে থাকি। যারা ঋনের টাকা গ্রহন করে তারা নিজেরাই নিজ হাতে নিজ নিজ ব্যাংকের চেকের পাতায় টাকার অঙ্ক লিখে থাকেন। আশরাফুল ইসলামের সাথে ১০ লক্ষ ও ২ লক্ষ টাকা পৃথক পৃথক দুটি মামলা আদালতে চলমান রয়েছে। আর মিঠুর মামলাটিও আদালতে চলমান রয়েছে।    

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad