• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ২৩-৪-২০২৪, সময়ঃ সকাল ১০:৪৩
  • ৩৭ বার দেখা হয়েছে

দিনাজপুরে বাঁশের ফুল থেকে চাল, হচ্ছে ভাত-পোলাও

দিনাজপুরে বাঁশের ফুল থেকে চাল, হচ্ছে ভাত-পোলাও

মাধুকর ডেস্ক►

বাঁশের ফুল থেকে চাল উৎপাদন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার এলুয়াড়ী ইউনিয়নের পাকাপান গ্রামের যুবক সাঞ্জু রায়। এ চাল খাওয়ার পাশাপাশি বিক্রিও করছেন তিনি।

বাঁশের বীজ থেকে চাল উৎপাদন হয় এই প্রথম জানলাম। দেশের কোথাও এমন ঘটনা শোনা যায়নি। এটা একটি বিরল ঘটনা।

ফুলবাড়ী উপজেলার এলুয়াড়ী ইউনিয়নের পাকাপান গ্রাম। দেখা গেলো সাঞ্জু রায়ের বাড়িতে অনেক মানুষের ভিড়। বাড়ির পাশের ঝাড় থেকে বাঁশের বীজ সংগ্রহ করছেন তিনি। সেই বীজ পানিতে ধুয়ে পরিষ্কার করে রোদে শুকাচ্ছেন। এরপর সেগুলো ধানের হাসকিং মিলে ভাঙাবেন। 

বাড়ির উঠানে প্রস্তুত করা এমন কয়েকটি বীজের বস্তা রেখেছেন। কিছু দানা ভাঙিয়ে রেখেছেন, গ্রামের অনেকেই তা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বাঁশের ফুল থেকে চাল উৎপাদন করার বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। এটি দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে উৎসুক মানুষ ভিড় করছেন তার বাড়িতে। অনেকে বাঁশ ফুলের চালের রুটি ও পায়েশ খেয়েছেন।

প্রতিবেশী মিনতি রানী, সুনিল রায় ও লিপি রানী জানালেন, বাঁশের বীজ থেকে দানা সংগ্রহ করার বিষয়টি তারা প্রথমে ছেলেমানুষি ভেবেছিলেন। পরে এ দানা সংগ্রহ দেখে তাজ্জব বনে যান! বর্তমানে তার এ উৎপাদিত দানা অনেকেই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার এলুয়াড়ী ইউনিয়নের পাকাপান গ্রামের যুবক সাঞ্জু রায়ের বাঁশ ফুলের বীজ ঝেড়ে চাল উৎপাদনের প্রস্তুতি চলছে। ছবি: সময় সংবাদ

সাঞ্জু রায়ের মা সাবিত্রী রানী জানান, বেড়িয়া জাতের কাটা বাঁশ থেকে তার ছেলে ফুলের বীজ সংগ্রহ করে আনে। সেগুলো কুলো দিয়ে ঝেড়ে পরিষ্কার করে পানিতে ধুয়ে রোদে শুকানো হয়। শুকানো ধান মিল থেকে চাল করে আনা হয়। এ পর্যন্ত ৪০ টাকা কেজি দরে ২ মণ ধান বিক্রি করা হয়েছে।

পাকাপান গ্রামের ৭৭ বছর বয়সি অমূল্য বর্মণ বলেন, ৫০/৫১ বছর আগে দেখেছি বাশেঁর ফুল থেকে চাল হয়। অর্ধ শতক পর আবার দেখলাম বেড়িয়া জাতের কাটা বাঁশের ফুল। এ ফুল থেকে ধান হয়।

এ বিষয়ে সাঞ্জু রায় বলেন, ‘আমি দিনমজুরি করে খাই। আজ থেকে এক মাস আগে পাশের গ্রামে কাজ করতে যাই। সেখানে কাজের ফাঁকে কালী চন্দ্র রায় (৭০) নামে একজন পরিচিত আমাকে বাঁশের বীজ থেকে দানা সংগ্রহ করে খাওয়ার বিষয়টি জানান। তার কথামতো আমি সেগুলো সংগ্রহ করে প্রথমে নিজে খাই, ভালো লাগায় এরপর থেকে তা সংগ্রহ করে যাচ্ছি। এতে নিজেদের খাবারের চাহিদাও পূরণ হচ্ছে, পাশাপাশি এ চাল ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে বাড়তি আয় করছি। যেখানে বাজারে ভালো এক কেজি চালের দাম ৭০ টাকার বেশি।’

কৃষি বিভাগের সাবেক কর্মকতা প্রদীপ কুমার গুহ বললেন, বাঁশের বীজ থেকে চাল উৎপাদন হয় এই প্রথম তিনি এটা জেনেছেন। এর আগে দেশের কোথাও এমন ঘটনা শোনা যায়নি। এটি একটি বিরল ঘটনা। বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করা দরকার।

নিউজটি শেয়ার করুন


এ জাতীয় আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়